চন্দ্রগ্রহণ 2023: চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতীদের সতর্ক থাকতে বলছেন বিজ্ঞানীরা

চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতীদের সতর্কতাঃ প্রতিটি গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন রকমের চিন্তা থাকে তাদের অনাগত সন্তানের জন্য। কোনটা করলে তাদের ভালো হবে, কোনটা করলে তাদের ক্ষতি হবে সেসব সম্পর্কে বিশেষ ধারণা রাখার চেষ্টা করেন।

যে কাজটা করলে সন্তানের ভালো হবে সেই কাজটা যত কঠিনই হোক না কেন সেটা করতে চেষ্টা করেন গর্ভবতী মায়েরা। তবে এমনই একটি বিষয়ের মধ্যে চন্দ্রগ্রহণ অথবা সূর্যগ্রহণ, এই গ্রহণের বিষয়টাও বিশেষভাবে প্রযোজ্য।

বৈজ্ঞানিকদের কথা অনুসারে গ্রহণের প্রভাব প্রতিটি ব্যাক্তির জীবনে পড়ে, গ্রহণ চলাকালীন প্রত্যেকেরই খুব সাবধানে থাকা উচিত, বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের।

চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতীদের সতর্ক থাকতে বলছেন বিজ্ঞানীরা
চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতীদের সতর্ক থাকতে বলছেন বিজ্ঞানীরা

কারণ গ্রহের প্রভাব ও মায়ের পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুর উপরেও পড়তে পারে সরাসরি। ফলে তাদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অনেকটাই, আর এই বিশ্বাস চলে আসছে প্রাচীন কাল থেকে।

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী মায়েদের কোন কোন বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে:

চন্দ্রগ্রহণের সময় কি করবেন না:

১) চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন চাঁদের দিকে সরাসরি তাকানো একেবারেই উচিত নয় গর্ভবতী মায়েদের। এর ফলে গর্ভে থাকা শিশুর উপরে তার খারাপ প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ে।

২) চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন কোনরকম ধারালো অস্ত্র, ছরি, কাঁচি, সূঁচ এই ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করবেন না।

৩) চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন কোনরকম খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, এর পাশাপাশি কোনরকম সেলাই করা অথবা এমব্রয়ডারি করাও যাবে না।

৪) শাস্ত্র অনুসারে এবং বৈজ্ঞানিক ধারণা অনুসারে বিশ্বাস করা হয় যে, চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের মধ্যাকর্ষণ টান খুব বেশি থাকে। সেই কারণে গর্ভবতী মায়েদের চন্দ্রগ্রহণ দেখা একেবারেই উচিত নয়।

৫) চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন মহিলাদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, তাদের অস্থিরতা, দুর্বলতা, ঘামঝরা এগুলি অনুভব হতে পারে। আর এইগুলি গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে আরো বেশি ক্ষতিকর।

৬) গর্ভবতী থাকাকালীন কোন রকমের ভারী কাজ হোক বা কোন রকম ছোটাছুটি কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হয় যেমন, সেই মতো চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন কোন রকম কাজ করা যাবে না, এই সময় নিজের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত।

৭) চন্দ্রগ্রহণের সময় জানালা বন্ধ রাখুন, যাতে গ্রহণের আলো কোনভাবেই ঘরে যেন ঢুকতে না পারে।

৮) ফল অথবা কোনরকম সবজি এই সময় কাটা যাবে না, যা কিনা অশুভ বলে মনে করা হয়।

৯) চন্দ্রগ্রহণের সময় একেবারেই ঘুমানো যাবে না, এই বিশেষ বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে গর্ভবতী মায়েদের।

১০) গ্রহন চলাকালীন কোনরকম ধাতুর তৈরি গয়না যেমন ধরুন সোনার গয়না, রুপার গয়না এগুলি পরা যাবে না। দরকার হলে যদি পরেও থাকেন, সেগুলি খুলে রাখতে পারেন গ্রহণ লাগার আগে।

১১) সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন ঘরের বাইরে যাওয়া যাবেনা গর্ভবতী মায়েদের।

সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী মহিলারা এইগুলি মোটেই করবেন না

গর্ভবতী মায়েরা চন্দ্রগ্রহণের সময় কি করবেন না:

এবার জানা যাক, চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী মায়েরা কোন কাজ গুলি করতে পারবেন:

১) চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন গর্ভবতী মায়েরা পবিত্র দুর্বা ঘাস নিয়ে পবিত্র গোপাল মন্ত্র জপ করুন, যার ফলে মন থাকবে শান্ত এবং গর্ভে থাকা সন্তানও সুরক্ষিত থাকবে।

২) এই সময় গর্ভবতী মায়েদের বাড়ির মধ্যেই থাকা উচিত।

৩) মুখের মধ্যে তুলসী পাতা রেখে হনুমান চল্লিশা পাঠ করতে পারেন চন্দ্রগ্রহণ চলার সময়।

৪) চন্দ্রগ্রহণ কেটে গেলে অর্থাৎ শেষ হলে বিশুদ্ধ জল দিয়ে স্নান করে নিজের শরীরকে শুদ্ধ করে নিন।

৫) চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী মায়েরা একটি নারকেল নিজের কাছে রাখুন, এতে গ্রহণের কোনো খারাপ প্রভাব শরীরের আশেপাশেও আসতে পারে না বলে বিশ্বাস করা হয়।

৬) গ্রহণকালে জপ করুন এবং ধ্যান করতে থাকুন, ইষ্ট দেবের মন্ত্র গুলো মনে মনে জব করতে থাকুন। আর চন্দ্রগ্রহণের প্রভাবে পৃথিবীতে যেন কোন রকম অনিষ্ট না হয় সেই প্রার্থনাও করুন ঈশ্বরের কাছে।

৭) চন্দ্রগ্রহণ লাগার আগে তৈরি করা খাবারে তুলসী পাতা দিয়ে রাখতে পারেন, যে খাবার গুলি পরবর্তীতে আবার খাওয়া যেতে পারে এখানে খাবার ফেলে দেওয়ার কোন যুক্তিই নেই।

৮) বিজ্ঞানীদের মত অনুসারে গর্ভবতী মায়েদের গ্রহণের সময় বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত, যার ফলে মা ও গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশু উভয়ের শরীর খুবই সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে।

চন্দ্রগ্রহণের সময় কি করবেন আর কি করবেন না? জেনে নিন

চন্দ্রগ্রহণের সময় মা লক্ষ্মীর প্রতিকার:

ধর্মীয় গ্রন্থ অনুসারে সুতক কালে শুভ ও মঙ্গলিক কাজ নিষিদ্ধ বলে জানা যায়। তার সাথে সাথে চন্দ্রগ্রহণের নেতিবাচক প্রভাব মানব জীবনে খারাপ প্রভাব বিস্তার করে।

এমন পরিস্থিতিতে এই চন্দ্র গ্রহণের সময় মা লক্ষ্মীকে প্রসন্ন করতে পারলে খুবই শুভ ফল লাভ করা যায়। সামান্য কিছু কৌশল অবলম্বন করে আপনি মা লক্ষ্মীকে প্রসন্ন করতে পারেন।

যার ফলে তার কৃপা প্রাপ্ত হয়ে যায়, সংসারের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বৃদ্ধি হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সংকট দূর হয়ে যায় এবং সমস্ত রকমের সমস্যার সমাধান ঘটে।

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক প্রতিকার সম্পর্কে:

  • চন্দ্রগ্রহণ অথবা সূর্যগ্রহণ আমাদের জীবনে অনেকটা প্রভাব বিস্তার করে। ধর্মীয় গ্রন্থ অনুসারে চন্দ্রগ্রহণ এর আগে স্নান করা উচিত এবং পরেও স্নান করা উচিত।
  • তবে মা লক্ষ্মীকে প্রসন্ন করার জন্য চন্দ্রগ্রহণ এর আগে স্নান করুন এবং হলুদ কাপড় পড়ে নিন।
  • এরপর ঘরের ভিতর অথবা উত্তর দিকে মুখ করে নির্জন ঘরে একলা বসুন, যেখানে কোনরকম কোলাহল যেন না থাকে।
  • তারপরে একটি থালায় জাফরান দিয়ে স্বস্তিক চিহ্ন অথবা ওম চিহ্ন তৈরি করুন।
  • এই থালাটির উপরে মহালক্ষ্মী যন্ত্র স্থাপন করুন।
  • তারপর একটি প্লেটে শঙ্খ অথবা শাঁখ রাখুন।
  • তারপরে এক মুঠো চাল রেখে দেশি খাাঁটি গাওয়া ঘি এর প্রদীপ জ্বালান।
  • স্পটিকের মালা দিয়ে লক্ষ্মী মন্ত্র জপ করুন।
  • চন্দ্রগ্রহণ শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই সমস্ত উপাদান গুলি একটি পুকুরে ভাসিয়ে দিয়ে আসুন অথবা ডুবিয়ে দিয়ে আসুন।

নিরাপদে সূর্যগ্রহণ দেখুন এই সহজ পদ্ধতিতে

বিশ্বাস করা হয় যে, এই প্রতিকারের মধ্যে দিয়ে দেবী লক্ষ্মী প্রসন্ন হন এবং সংসারে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে থাকেন। অন্যান্য পূজা পার্বণের মতো চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ এর সময়ে বিশেষ কিছু রীতি পালন করলে অনেক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

আর যে বিধি নিষেধ গুলো রয়েছে সেগুলি মেনে চলার চেষ্টা করলে শরীর সুস্থ থাকার পাশাপাশি অনেক অমঙ্গল হওয়া থেকেও বাঁচা যায়। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top