ডিভোর্স হলে সন্তানের আইনি অধিকার কে পাবে? মা না বাবা? জেনে নিন

Child Custody Laws in Bengali: মা না বাবা- ডিভোর্সের পর সন্তানের আইনি অধিকার কে পায়? | বিবাহবিচ্ছেদ অথবা ডিভোর্স হলে সন্তানের অধিকার কে পাবে? | ডিভোর্সের পরে সন্তানের প্রতি আইনি অধিকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ আইনি নিয়ম জেনে নিন।

কোনরকম মতের অমিল, তার সাথে আরো অন্যান্য ব্যক্তিগত কারণ, সামাজিক কারণ, সবকিছু মিলিয়ে আজকের দিনে বিবাহবিচ্ছেদ অথবা ডিভোর্স একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে যদি কোনরকম বাচ্চা না থাকে কোন দম্পতির, তাহলে এই বিবাহবিচ্ছেদ অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যায় সময় অনুযায়ী।

Child Custody Laws - ডিভোর্সের পর সন্তানের আইনি অধিকার
Child Custody Laws – ডিভোর্সের পর সন্তানের আইনি অধিকার

আর যদি কোনরকম বাচ্চা থেকে থাকে তাদের মধ্যে, তাহলে সব থেকে বেশি জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় সেই বাচ্চাদের জীবন নিয়ে অর্থাৎ কার কাছে থাকবে সন্তান, বাবার কাছে নাকি মায়ের কাছে। যদিও একটি সন্তান অথবা বাচ্চা বাবা-মা দু’জনকেই তার কাছে চায়, এমন পরিস্থিতিতে তাকে বাধ্য হয়েই যেকোনো একটি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়, না হয় বাবা না হয়  মা।

অভিজ্ঞ উকিলের প্রয়োজন:

এই বিষয়ে আইন অনুসারে একজন অভিজ্ঞ উকিলের সাথে যোগাযোগ করুন:

স্বাভাবিকভাবে সব দিক থেকে বিবেচনা করে আদালত একটা বাচ্চাকে তার মায়ের কাছে থাকার রায় ঘোষণা করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটাই হয়ে থাকে।

তাছাড়া আইন অনুসারে এবং সামাজিক অনুসারে এটাকে সকলেই পছন্দ করে থাকেন। তবে ইদানিং কিছু বছর আগে থেকে এই সন্তান কার কাছে থাকবে অর্থাৎ “বাবা – মায়ের অধিকার”“বাচ্চার অধিকার।”

ডিভোর্স এর জন্য ভালো উকিল কিভাবে সিলেক্ট করবেন? জেনে নিন

হিন্দু আইন অনুসারে সন্তানের অধিকার:

হিন্দু বিবাহ অনুসারে অধিনিয়ম 1955, ধারা 26 অনুযায়ী, হিন্দু ধর্ম পালন করা বাবা-মা দুজনের মধ্যেই কিন্তু সন্তানকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এই নিয়ম অনুসারে আদালত শেষ রায় ঘোষণা করেছে, সেই বাচ্চাটি কার কাছে থাকতে ইচ্ছা প্রকাশ করে। বাবার কাছে নাকি মায়ের কাছে ! সেই অনুসারে তাকে রাখার নিয়ম জারি আছে অধিনিয়ম 1954, ধারা 38 জারি করা হয়েছে।

ডিভোর্স হলে সন্তানের আইনি অধিকার কে পাবে?
ডিভোর্স হলে সন্তানের আইনি অধিকার কে পাবে?

তবে অধিনিয়ম 1869 ধারা 144 বিবাহ-বিচ্ছেদের বিষয়ে সন্তানের অধিকার নিয়ে কোনোরকম শক্তি প্রয়োগ করা হয়নি। এছাড়া এ বিষয়ে যে উকিল খুব বেশি অভিজ্ঞ সেই উকিলের সাথে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন।

মুসলিম আইন অনুসারে সন্তানের অধিকার:

এক্ষেত্রে কিন্তু সবচেয়ে বেশি প্রথমে মা কেই প্রাধান্য দেয়া হয়ে থাকে সন্তানের অধিকার নিয়ে। যদি এক্ষেত্রে বিবেচনা করে দেখা হয় যে, সেই সন্তানের লালন পালন এবং তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সেই মা অনুপযুক্ত তাহলে কিন্তু সন্তানের অধিকার পিতা অথবা বাবার উপর বর্তায়।

ঈশাই আইন অনুসারে সন্তানের অধিকার:

অধিনিয়ম 1869 দ্বারা সন্তানের অধিকার সম্পর্কিত আইন সব ধর্মের উপরে জারি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নাবালক সন্তান এর দেখভাল এবং পড়াশোনার দায়িত্ব পালন করার জন্য বাবার উপরে এই অধিকার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়।

কিছু দেশে ভৌতিক অধিকার এবং আইনি অধিকার এর মধ্যে সুস্পষ্ট ভেদাভেদ রয়েছে, অর্থাৎ বলতে গেলে যখন কোন বাচ্চা আপনার সাথে মায়ার বন্ধনে এবং শারীরিক ভাবে, মানসিক ভাবে থাকতে চাইবে সে ক্ষেত্রে বলতে পারেন শারীরিক অভি রক্ষা, আর যখন আইন সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে যে সেই বাচ্চাটি কার অধিকার এর মধ্যে পড়ে, সে ক্ষেত্রে কিন্তু সেই বাচ্চার দেখভাল, স্কুলের শিক্ষা এবং তার চিকিৎসা ব্যবস্থা আর অন্যান্য যে সমস্ত জিনিস পত্র গুলি একটা মানুষের স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন হয়, সেগুলি মেইনটেন করা। তবে ভারতে শারীরিক আর আইনি অভিরক্ষা এর মধ্যে কোনরকম ভেদাভেদ নেই।

তাছাড়া ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হওয়ার জন্য ব্যক্তিগত আইন অনুসারে সন্তানের অধিকার নিয়ে আলাদা আলাদা ধারণা ও মতামত রয়েছে।

ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ এর জন্য কত টাকা খরচ হতে পারে?

ডিভোর্সের পরে সন্তানের প্রতি আইনি অধিকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ আইনি নিয়ম
ডিভোর্সের পরে সন্তানের প্রতি আইনি অধিকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ আইনি নিয়ম

একটা বিবাহ বিচ্ছেদ ছোট সন্তানের ভবিষ্যৎ, শারীরিক বিকাশ ও মানসিক বিকাশে অনেকটাই বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই বাচ্চাটি কার কাছে থাকতে পছন্দ করবে সেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এক্ষেত্রে যদিও বাবা-মা দুজনের কাছেই তার সমান অধিকার। তবুও তাকে যে কোন একটা বেছে নিতে হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ডিভোর্স অথবা বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তান যার কাছেই থাকুক না কেন, বাবা-মা দুজনেই সমান অধিকার ও সমান কর্তব্য পালন করে চলেছেন।

তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন রকম সম্পর্ক নেই, বলতে গেলে এক ছাদের নিচে থাকেনও না। তবে সন্তানের বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে বাবা মায়ের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন, এমন ঘটনা নেহাত কম নয়।

তবে যদি সন্তানের অধিকার নিয়ে কোন রকম ঝামেলা ও জটিল সমস্যায় পড়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে এই বিষয়ে যে উকিল খুবই ভালভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন, সেই উকিলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

তিনি তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সন্তানের আসল অধিকার ও সুরক্ষা প্রদান করা থেকে শুরু করে তার শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা, ভরণ পোষণ সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে যাতে হয়ে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা সম্ভব হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top