Durga Puja 2023: দেবী দুর্গাকে কিভাবে পুজো করলে সৌভাগ্য ফিরে আসবে

আমাদের সকলের সব থেকে প্রিয় এবং প্রাণ এর পুজো হলো দুর্গা পূজা, সারা বছর অপেক্ষা করা হয় এই পূজার জন্য। তার জন্য অনেকদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়, কেনাকাটা থেকে শুরু করে সবকিছু নতুনভাবে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সকল বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।

বাড়িতে হোক অথবা মণ্ডপে, দুর্গাপূজা তে বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন পালন করার পাশাপাশি এমন অনেক রীতিনীতি রয়েছে যেগুলি সামান্য বলে মনে হলেও তা জীবনে আনতে পারে আমূল পরিবর্তন।

দেবীকে কিভাবে সন্তুষ্ট করা যায়, কিভাবে নৈবেদ্য অর্পণ করা যায়, কোন ফুলে তাঁকে সন্তুষ্ট করা যায়, কিভাবে দেবী মায়ের আশীর্বাদ সর্বদাই আমাদের উপরে বর্ষিত হবে এই সমস্ত বিষয়ে খেয়াল রাখতে রাখতে আমরা অনেকেই ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাই। আর এই ছোট ছোট বিষয়গুলি আমাদের জীবনে বড় আশীর্বাদ হয়ে নেমে আসতে পারে।

দেবী দুর্গাকে কিভাবে পুজো করলে সৌভাগ্য ফিরে আসবে
দেবী দুর্গাকে কিভাবে পুজো করলে সৌভাগ্য ফিরে আসবে

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক দেবী মা কে সন্তুষ্ট করতে কিভাবে পূজা করতে হয়:

বিভিন্ন ধরনের ধর্মগ্রন্থে দেব-দেবীদের নিয়ে অনেক কাহিনী, গল্প রয়েছে। যেগুলি থেকেই জানা যায় যে কিভাবে দেব দেবীর পূজা অর্চনা করতে হয়, তাঁদের সন্তুষ্ট করতে হয়। বিভিন্ন পুরাণ ও শাস্ত্র গ্রন্থে নব্যমাদিকল্প, প্রতিপদাদিকল্প, ষষ্ঠাদিকল্প, সপ্তমাদীকল্প অষ্টম্যদিকল্প, অষ্টমীকল্প ও নবমীকল্প দুর্গাপুজোর সাতটা কল্পের উল্লেখ রয়েছে বলে জানা যায়। এই কল্প হল পুজো কিভাবে বা কি পদ্ধতিতে, কতদিন ধরে হবে সেই নিয়মকে বর্ণিত করে।

দুর্গা পূজার সময় এই কাজগুলি না করলে অজান্তেই পাপ হতে পারে

ষষ্ঠাদিকল্প:

ষষ্ঠাদিকল্প অনুসারে আশ্বিনের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠীর দিন বোধন আরম্ভ হয়ে পূজো চলে মহানবমী পর্যন্ত। কিছু পারিবারিক পুজো এবং বারোয়ারি ও সর্বজনীন পুজো গুলো এই কল্প মেনেই অনুষ্ঠিত হয়।

দুর্গাপূজার ষষ্ঠীর দিন বেল গাছের তলায় পূজা দেওয়ার এই রীতি সকলেরই জানা, তাই না ! দুর্গাপূজা হয় এমন রকম পুরনো বাড়িগুলোর ঠাকুরদালান সংলগ্ন বোধনঘর বেদীর উপর টবসহ একটি ছোট বেল গাছ (আটাবেল/ সরবৎ-ই বেল গাছ) বসানো হয়। সেই বেল গাছের সামনে আম, অশ্বত্থ, বট, পাকুড় ও যজ্ঞ ডুমুরের পল্লব অথবা পাতা, এই পঞ্চপল্লব ও ডাব দিয়ে ঘট স্থাপন করার নিয়ম রয়েছে।

ওই বেল গাছকে দেবী রূপে কল্পনা করে বোধনের আরাধনা চলে ষষ্ঠীর দিন অর্থাৎ মহাষষ্ঠীতে। ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যা থেকে আরম্ভ হয় প্রতিমার পূজা। এই দিন বাড়ির মা বোনেরা অনেকেই উপবাস পালন করে বেল গাছের নিচে পূজা করে থাকেন অথবা এই বেল গাছকেই দেবী রূপে বোধন করেন।

দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠী এই ভাবে পালন করলে সংসারে আসবে সমৃদ্ধি

মহাষষ্ঠীতেই দেবীর বোধন:

বোধনের এই পূজাতে শিব, দুর্গা, নারায়ণ, গৃহদেবতাদের আলাদা আলাদা নৈবেদ্য অর্পণ করতে হয়। পিতলের থালায় নৈবেদ্য সাজাতে হবে কিন্তু, শিবের নৈবেদ্য শুধু পিতলের পরিবর্তে কাঁসা বা পাথরের থালায় সাজাতে হবে।

চূড়া করে চাল রেখে সেই চূড়ার মাথায় মণ্ডা অথবা সন্দেশ রাখতে হবে এবং পাশে কলা পাতায় আলাদা আলাদা করে পাঁচপলাই ও ফল দিয়ে এক একটি নৈবেদ্য তৈরি করতে হবে। তবে এর সঙ্গে আলাদা চিনির নৈবেদ্য ও দুধ, দই দিতে হয়। রাতে ফল, দুধ, ভেজানো মুগের ডাল ও মিষ্টি দেওয়ার রীতি রয়েছে।

মহাষষ্ঠীর পূজার নৈবেদ্য:

মহাষষ্ঠীর সকালে পূজা হবে বোধন ঘরে, কেবলমাত্র ষষ্ঠী ও মার্কন্ডের আলাদা দুটো নৈবেদ্য দেওয়া হয় আবাটা হলুদ, ছাঁচিপান, গামছা এবং শাড়ির প্রয়োজন পড়ে। ষষ্ঠীর দিন পুজোর সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কয়েকটি জিনিস তৈরি করে রাখতে হয় সেগুলি হল শ্রী, বরণ ডালা ও কুলো।

শ্রী হল লক্ষীর প্রতিরূপ আর এই লক্ষ্মীর প্রতিরূপ তৈরি করতে লাগে আতপ চাল বাটা, পঞ্চগুঁড়ি, এই পঞ্চগুঁড়ির মধ্যে রয়েছে আতপ চাল বাটায় সাদা রং, চালের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে হলুদ রং, বেলপাতা বেটে সবুজ রং, কুসুম ফুল (জবা ফুলও হতে পারে) বেটে লাল রং, ধানের খোসা পুড়িয়ে কালো রং।

দুর্গাপূজা করুন এই নিয়মে আপনার উপর প্রসন্ন হবেন দুর্গতিনাশিনী

বরণডালা সাজাতে যে জিনিসগুলির প্রয়োজন পড়ে:

মহাষষ্ঠীতে আরও যে বিশেষ নৈবেদ্যের প্রয়োজন হয় সেগুলি হল একটি বড় পিতলের থালায় একুশটা খুরি গোলাকারে সাজিয়ে সেগুলিতে সিদ্ধি, হলুদ, তেল, গঙ্গামাটি, চালের পিটুলি, শিখা খন্ড, শঙ্খ, আলতা পাতা, লোহা, সিঁদুর, সাদা সরষে, কাজল লতা ও কাজল, দই, ঘি, চিনি, মধু ও মধু পার্কের বাটি, সোনা, রুপো, অখন্ড কলা, কড়ি, এলো সুতো, সুপারি, জব, ধান, শ্বেত চন্দন, কালো তিল, প্রদীপ ও চামর রেখে বরণডালা তৈরি করতে হয়, অর্থাৎ এই সমস্ত সবকিছু দিয়ে বরণ ডালা সাজাতে হবে।

একটা বড় আকারের কুলোর উপরে ঢাকা দেওয়া চারটে মঙ্গল হাড়ি, হলুদ মাখানো চাল, সুপারি, হরিতকি, বয়রা, গোটা হলুদ, কড়ি এবং সেগুলোকে ঢাকা দেওয়ার জন্য একটা পাতলা কাপড় এর প্রয়োজন পড়বে।

মা দুর্গার বরণ পর্ব:

মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যাবেলা বোধন ঘরে পুজোর পর প্রতিমার সামনে দেবী দুর্গার অধিবাস, আরতি ও বরণ করা হয়। আর এই জন্যই এই বরণডালা সাজানোর এত তোড়জোড়, লোকাচার অনুযায়ী বিবাহিত মেয়েরা বাবার দেওয়া কাপড় পড়ে দেবী দুর্গাকে বরণ করে ঘরে তোলেন। বরণ করার জন্য প্রয়োজন পড়ে একঘটি গঙ্গাজল, জোড়া পান ও সুপারি।

সাতটি অথবা তারও বেশি বিজোড় সংখ্যক বিবাহিত মহিলা হাতে কুলো, বরণডালা, শ্রী নিয়ে ৭ বার প্রতিমা প্রদক্ষিণ করবার পর প্রথমে সবথেকে বয়সে বড় মহিলা, তিনি বরণ শুরু করেন দেবী দুর্গার।

প্রথমে গণেশ তারপর একে একে দূর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, সিংহ ও আরো অন্যান্য বাহনকে বরণ করার রীতি প্রচলিত রয়েছে।

এই গাছগুলি দেবীপক্ষের মধ্যে বাড়িতে লাগান মা দুর্গা সকল দুঃখ বিনাশ করবেন

মহা সপ্তমীর পূজা পর্ব:

এখানে একটা কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধন হলেও এবং বরণ সম্পন্ন হলেও দুর্গাপূজার প্রকৃত পূজার সূচনা হয় মহাসপ্তমী থেকে। ঐদিন সকালে নবপত্রিকা স্নানের পরে যথাযথ নৈবেদ্য উপাচার সাজিয়ে আরম্ভ করা হয় দেবীর পূজা অর্চনা।

দূর্গা পূজার অন্যতম প্রধান উপাচার হল নৈবেদ্য ও ভোগ রান্না করা, কাঁচা চাল, ডাল ভেজানো, শস্য দানা ফল ও মিষ্টি এই সমস্ত কিছু নৈবেদ্য হিসাবে দেবী দুর্গাকে অর্পণ করা হয়।

মহা সপ্তমীতে দেবীর সম্পূর্ণ পরিবারের জন্য নৈবেদ্যর আয়োজন:

মহা সপ্তমী থেকে মহানবমী পর্যন্ত দেবী দুর্গার সমস্ত পরিবারকে অর্থাৎ গনেশ, লক্ষ্মী, মা দুর্গা, সরস্বতী এবং কার্তিক কে সকলের জন্য আলাদা আলাদা থালায় নৈবেদ্য সাজিয়ে পূজা করতে হয়। একটি বড় থালায় বড় পরিমাণ চাল পাহাড় চূড়োর মতো করে সাজানো হয়।

সেই চূড়ার একেবারে শীর্ষে থাকবে সন্দেশ অথবা যে কোন মিষ্টি আর গা বরাবর লম্বালম্বি ভাবে সাজানো থাকবে কলা। থালার একেবারে কিনারায় ছোট ছোট খুরি তে করে ফল, মিষ্টি, পাঁচকলাই ইত্যাদি সাজিয়ে দেওয়া হয়। মহিষাসুর এবং সিংহের জন্যও থাকে নৈবেদ্যের ব্যবস্থা।

দেবী দুর্গা ও তাঁর সন্তান, বাহন ছাড়াও আরো দুটো নৈবেদ্য তৈরি করতে হয়, একটা হল নবগ্রহ এবং আর একটি হলো গৃহ দেবতাদের জন্য। নৈবেদ্য তৈরি করা হয়ে গেলে বেল পাতায় ঘি-মধু দিয়ে তার উপরে রাখতে হয়। তবে এই নৈবেদ্যর সাথে সাথে থাকবে সন্দেশ সহ একটি চিনির নৈবেদ্য। কাঁচা আনাজ রচনাতে পাঁচ রকম ফল দেওয়া থালা, দই, মধু দেওয়া জল, পান এবং সাথে থাকে কাঁচা দুধ।

দূর্গা পূজার সময় এই কাজ গুলি ভুলেও করবেন না, সঠিক পদ্ধতি জানুন

দেবী দুর্গার সম্পূর্ণ পরিবারের জন্য ভোগের আয়োজন:

নৈবেদ্য ছাড়াও অনেকক্ষেত্রে রান্না করা যে কোনো খাদ্য সামগ্রী দেবতাকে নিবেদন করা হয় আর সেটাকে বলা হয় “ভোগ”। সেটা হতে পারে খিচুড়ি অথবা অন্য কোন সবজি যা রান্না করা হয়ে থাকে, আর সেটা ভোগ হিসেবে দেবী দুর্গাকে অর্পণ করা হয় এবং সমস্ত ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

নৈবেদ্যের প্রকৃতি সব ধরনের পূজাতে প্রায় একই রকম হলেও কিন্তু বর্ণভেদে ও লোকাচার অনুসারে রান্না করা ভোগ নিবেদনে কিছু পার্থক্য দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গার পূজা-অর্চনা এবং সেখানকার রীতিনীতি এবং লোকাচার অনুযায়ী।

সাধারণভাবে পশ্চিমবঙ্গে রান্না করা অন্ন ভোগ অর্থাৎ খিচুড়ি, তরকারি ইত্যাদি এগুলি লক্ষ্য করা যায় এবং সেগুলি দেবতাদের নিবেদন করা হয়, কেবলমাত্র ব্রাহ্মণ বাড়ির পূজায় এগুলি নিবেদন করতে দেখা গিয়েছে। আর অ-ব্রাহ্মণ পরিবারে দেওয়া হয় লুচি ও পাঁচ রকম ভাজা। কিন্তু পূর্ববঙ্গের অনেক অ-প্রাহ্মণ পরিবারেও অন্ন ভোগ নিবেদনের রীতি দেখা গিয়েছে।

কিন্তু বারওয়ারি সর্বজনীন দুর্গা মন্ডপের পূজা গুলিতে অন্ন ভোগ দেবতাকে নিবেদন করার প্রথা বহুল প্রচলিত এবং সেটা প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। প্রত্যেকদিন সকালে পুজোর শেষ পর্বে থাকে মঙ্গল আরতি, তার সাথে থাকে পুষ্পাঞ্জলী এবং সেই দিন সন্ধাতেও থাকে মঙ্গল আরতি।

অষ্টমীতে পূজার সঠিক বিধি ও অঞ্জলি সম্পর্কে জানা আছে কি?

মহা অষ্টমীর পূজা পর্ব:

অষ্টমীতে লাল পাড় সাদা শাড়িতে এবং ধুতি পাঞ্জাবি অথবা কুর্তা পাঞ্জাবিতে সেজে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার আনন্দটা সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটা আবেগ বলা যায়। অনেকেই উপবাস রাখেন আবার অনেকেই রাখতে পারেন না, তবে অঞ্জলি দিতে ভোলেন না।

এই দিন কোনরকম ভাত খাওয়ার প্রচলন নেই, লুচির সাথে আরো অন্যান্য নিরামিষ খাবার রান্না করার পাশাপাশি অনেক বাড়িতে চাল ছাড়া অর্থাৎ ভাত এর পরিবর্তে আটার তৈরি খাবার খেয়ে থাকেন। বাঙালির দূর্গা পূজার সব থেকে উল্লেখযোগ্য অংশ হলো মহাষ্টমীর পূজা, পুষ্পাঞ্জলী এবং সন্ধ্যা বেলা সন্ধিপুজো।

শ্রী শ্রী চন্ডী অনুসারে বলা হয় মহা অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট (এক দন্ড) এবং মহানবমীর প্রথম ২৪ মিনিট ওই মোট ৪৮ মিনিট বা দুই দন্ডর সময়কালে দেবী দুর্গা মহিষাসুর কে ত্রিশূল বৃদ্ধ করেছিলেন, আর এই সন্ধিক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সন্ধি পূজার এই প্রচলন সকলের মনে ভক্তি ও শিহরণ জায়গায়।

আবার অন্য মত অনুসারে মহাষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিক্ষণে রামচন্দ্র রাবণের মুন্ডছেদ করেছিলেন, তাই ওই সন্ধিক্ষণে বলি সহ সন্ধি পূজা করা দূর্গা পূজার একটি বিশেষ নিয়ম। সন্ধি পূজার সময় লাগে বড় মাপের নৈবেদ্য উপাচার, ১০৮ টি পদ্মফুল, ১০৮ টি বেলপাতা এবং ১০৮ টি প্রদীপ।

মহানবমী:

মহানবমী এই পূজার আরো অন্যান্য দিনের মতো দেবীকে পূজা ও আরতির মধ্যে দিয়ে আমাদের সকলের মনের কথা জানানো হয়, আরও অন্যান্য দিনের নিরামিষ খাওয়ার নিয়ম থাকলেও মহানবমীতে ভুরিভোজের আয়োজন সব জায়গাতেই দেখতে পাওয়া যায় অর্থাৎ এই দিন আমিষ খেয়ে থাকেন অনেকেই।

তবে এই দিন সারাদিন আনন্দে কাটলেও সন্ধ্যার পর থেকে মনটা ভীষণ ভারী লাগে, কেননা পরের দিন যে বিজয় দশমী, দেবী মাকে বিদায় জানাতে একেবারেই মন চায় না

বিজয়া দশমীতে এই নিয়মগুলি মানলে মায়ের কৃপা সর্বদাই থাকবে আপনার উপর

বিজয়া দশমী:

বিজয় দশমী মানেই মাকে বিদায় জানানোর পালা, বিদায় জানাতে মন না চাইলেও বিদায় তো জানাতেই হবে, তবে চার দিন পর খুশি নিয়ে আবার ফিরে আসছেন মা লক্ষ্মী। মহা সপ্তমী, মহা অষ্টমী ও মহানবমীর পুজোর পর আসে বিজয়া দশমী। সকালে যথাযথভাবে পুজোর পর হয় ঘট বিসর্জন।

প্রাচীনকালে অথবা অনেক আগের দিনে অনেক জায়গায় দশমীর সকালে ঘট ও নবপত্রিকা বিসর্জন দিয়ে আসা হতো, তবে বর্তমান সময়ে অবশ্য পুরোহিত মশাই ঘট নাড়িয়ে আনুষ্ঠানিক পূজা শেষের সংকেত দিয়ে দেন এবং বিকেল বেলায় শুরু হয় দেবীর বরণ, কনকাঞ্জলি ও এয়োস্ত্রীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় সিঁদুর খেলা শুরু করে দেন।

তারপর নদী অথবা কোন পবিত্র পুকুর বা সরোবরে প্রতিমা নিরঞ্জন অথবা বিসর্জন সেরে এসে মিষ্টিমুখ আর বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা জানানোর এই প্রথাটি অনেক পুরানো। তবে বর্তমান সময়ে গ্রামাঞ্চলে দুর্গাপূজার এই আনন্দের অনুষ্ঠানকে আরো কিছুদিন টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজয় দশমীতে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন না দিয়ে আরও কয়েকদিন পূজা মন্ডপে রেখে দেওয়া হয়, তবে পূজা অর্চনা চলতে থাকে, আর স্থানীয় মানুষদের কাছে এটি খুবই আনন্দের একটি বিষয়।

বিজয়া দশমীতে যে কাজগুলি করলে দূর হবে সমস্ত বাধা-বিপত্তি, হবে অর্থ লাভ

✨ মহাষষ্ঠীর বোধন থেকে বিজয় দশমীর বিসর্জন পর্যন্ত বাঙালির মনে প্রাণে বাজতে থাকে দুর্গাপূজার ঢাকের ছন্দ। এই কয়দিন কিভাবে কেটে যায় বোঝাই যায় না, এই যে পূজো আসছে আসছে এই আনন্দটাই সব থেকে বেশি, কিন্তু যখন পূজা এসে পড়ে তখন সেই আনন্দের সময় গুলো যেন খুব তাড়াতাড়ি কেটে যায়।

তবে প্রতিটি দিন মায়ের পূজা দেওয়া, সাজগোজ, আনন্দ উৎসব, ঘুরতে যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া, হই-হুল্লোড়, আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করা সবকিছু মিলিয়ে এই দুর্গাপূজার দিনগুলি আমাদের কাছে একটা বছরের বাঁচার রসদ যোগায়।

আবার একটা বছর অপেক্ষা করতে হয় এই আনন্দের এবং শুভ দিনগুলির জন্য। সমস্ত নিয়ম মেনে, ভক্তিভরে, প্রার্থনা করে সকলের মনের ইচ্ছা মায়ের কাছে জানিয়ে পূজার এই দিনগুলি কাটুক খুবই আনন্দের সাথে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top