দুর্গাপূজার এই কয়দিন নিজেদেরকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে হবে এবং নজর কাড়া লুকে সকলকে অবাক করে দিতে হবে। তবে এই সাজগোজের বিষয়ে শুধুমাত্র মেয়েরা যে পড়ে তা কিন্তু নয়, ছেলেরাও বর্তমানে কোনো দিক থেকেই পিছিয়ে নেই।
পুজোর পোশাক বাছাই করার ক্ষেত্রে নিজেদের আরামের কথা চিন্তা করার পাশাপাশি সেই পোশাকে নিজেদের কতটা মানাচ্ছে সেটাও দেখে রাখা খুবই জরুরী। তবে পূজার ফ্যাশনের কিছু জরুরী বিষয় খেয়াল করা দরকার, যার ফলে আপনি সকলের মাঝে অন্যতম হয়ে উঠতে পারেন।
অনেক ছেলেরা মেয়েদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফ্যাশনের ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহী। অনেকের ধারণা নামিদামি সংস্থার পোষাক অথবা সাজের জিনিসপত্র দিয়েই যদি সাজা যায় তাহলে নিজেদেরকে সবার থেকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা যায়, এটা কিন্তু ভুল ধারণা।
একটু যদি বুদ্ধি খাটিয়ে নিজেদের সাজগোজ, পোশাক আশাক বাছাই করে থাকেন তাহলে কিন্তু খুব কম খরচেই আপনি সকলের মাঝে অন্যতম হয়ে উঠতে পারেন। অর্থ খরচ নয়, শুধুমাত্র আপনার মগজ খরচ করেই আপনি কিন্তু বেশ ফ্যাশনেবল থাকতে পারেন।
তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, ছেলেরা এই পুজোতে সকলের মাঝে নিজেকে অন্যতম করে তুলতে কিভাবে সাজবেন, সে সম্পর্কে:
পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে পছন্দের নারীর নজর কাড়তে চান ? তাহলে খুব বেশি জমকালো পোশাক করার দরকার নেই এবং খুব দামী দামী ব্রান্ডের পোশাক কেনারও দরকার নেই, শুধুমাত্র ভরসা রাখুন ছিমছাম পোশাকের উপরে, কেননা ছেলেদের খুব হালকা সহজেই বেশ মানিয়ে যায়।
✨ ১) পোশাক হতে হবে পরিপাটি:
পোশাক দামী হোক অথবা কম দামি, তবে সেই পোশাকটির মধ্যে যেন পরিপাটি ভাব থাকে। সেটি পরলে আপনার সমস্ত লুকটা যেন চেঞ্জ হয়ে যায়। আর সেই পোশাকের রং থেকে শুরু করে পোশাকের ধরন, কেমন ভাবে তৈরি করা, সেটা আপনার সাথে মানাচ্ছে কিনা, সেটাও দেখা জরুরী।
অনেক দাম দিয়ে পোশাক কিনেছেন অথচ কোঁচকানো শার্ট পরেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়লেন, তাহলে কিন্তু আপনার সাজ একেবারে মাটি। এই পোশাক পরার আগেই কোন কারনে ভাঁজ পড়লে সেই পোশাকটি অবশ্যই আয়রন (ইস্ত্রি) করে নিতে ভুলবেন না।
এই বছরের নতুন স্টাইলের পোশাকগুলি দেখুন →
✨ ২) খেয়াল রাখুন শার্ট অথবা পাঞ্জাবির কলারের উপর:
হয়তো ভাবছেন কলারের উপরে আবার আলাদাভাবে কি খেয়াল দেবেন, তাই তো ? তবে কলারে ভাঁজ পড়লে তা দেখতে মোটেও ভালো লাগেনা।
তাই কলারের নিচে বোতাম থাকে এমন শার্ট পরুন আর না হলে কলারের নিচে ডবল টেপ লাগিয়ে এই সমস্যার সমাধান করে নিতে পারেন জামা অথবা পাঞ্জাবি তার সৌন্দর্য কিন্তু এই কলারের উপরেই ডিপেন্ড করে।
✨ ৩) মানানসই হেয়ার স্টাইল:
সব জামা কাপড় যেমন সবার গায়ে মানায় না তেমনি সব হেয়ার স্টাইল সবার মানায় না। তাই আপনার মুখের গড়ন অনুসারে অবশ্যই হেয়ারকাট করবেন। পূজার দিন দুয়েক আগে ফেসিয়াল করার পাশাপাশি চুলের কাট একেবারেই আপনার মুখের গড়নের সঙ্গে মানানসই হিসেবেই করতে হবে।
চুল কাটার ব্যাপারে তা সব সময় সতর্ক থাকা উচিত। শেষ মুহূর্তে লুক নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা নিরীক্ষা না করাই ভালো, কেননা আপনি যা করেছেন সেটাই আপনার মানানসইয়ের উপরেই রয়েছে। কনফিডেন্স অথবা আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজের পার্সোনালিটি ধরে রাখুন, এতেই আপনাকে অনেকটাই সুন্দর লাগবে।
হেয়ার স্টাইলের জন্য জরুরি জিনিসপত্র দেখুন →
✨ ৪) পারফিউমের ব্যবহার:
সুন্দর পোশাক, সবকিছুই পরিপাটি অথচ পারফিউমের কথা ভুলে গেলেন তাহলে কিন্তু আপনার সাজগোজ সম্পূর্ণ হলো না। এর পাশাপাশি পারফিউম বাছাই এর ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে।
পোশাক পরার আগে বডি স্প্রে অথবা পারফিউম এটি লাগাতে ভুলবেন না, শুধুমাত্র এখানেই শেষ নয়, সারাদিন নিজেকে চনমনে রাখতে পোশাকের উপরে আপনার পছন্দের সুন্দর পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন।
এই পারফিউমগুলি ব্যাবহার করে দেখুন →
✨ ৫) দাড়ি গোঁফ আকর্ষণীয় রাখুন:
যদি আপনি দাড়ি গোঁফ রাখতে খুবই সচ্ছন্দ বোধ করেন এবং খুবই ভালো লাগার একটি বিষয় হয়ে থাকে, তাহলে চুল কাটার পাশাপাশি দাড়ির দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। আবার অনেকেই ক্লিন সেভে থাকতে পছন্দ করেন।
আবার অনেকের দাড়ি-গোঁফ রাখলেই বেশ মানিয়ে যায়। তবে দাড়ি গোঁফ রাখলে তা যেন অবশ্যই ট্রিম করা থাকে, সেদিকটা বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন।
দাড়ি-গোঁফ স্টাইলিশ করার জিনিস →
✨ ৬) সানগ্লাস:
যদি রোদের মধ্যে কোথাও বেরোনোর পরিকল্পনা থাকে তাহলে অবশ্যই সানগ্লাসের কথা ভুলে গেলে হবে না। ট্রেডিশনাল অথবা ক্যাজুয়াল লুক সব ক্ষেত্রেই কিন্তু দিনের বেলা সানগ্লাস বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে যায়।
ত্বক এবং চোখকে রক্ষা করার পাশাপাশি আপনার ফ্যাশন টাকে আরো বেশি উজ্জ্বল করে তুলবে এই সানগ্লাস। তবে অবশ্যই আপনার মুখের সাথে মানানসই সানগ্লাস পরতে ভুলবেন না।
এই ধরনের সানগ্লাস পরতে পারেন →
✨ ৭) পরিপাটি জুতো:
অনেকের মুখে বলতে শোনা যায় যে, কোনো মানুষের জুতো দেখলে সেই মানুষের ব্যক্তিত্ব অনেকখানি আন্দাজ করা যায়। তবে যদি আপনার জুতোটি খুবই সুন্দর এবং পরিপাটি হয় তাহলে তো আর কথাই নেই।
জুতো ময়লা হয়ে গেলে ভালো করে পালিশ করে নিন আর পুজোর আগে এই কাজগুলি অবশ্যই সেরে নেবেন। জিন্সের সঙ্গে বুট কিংবা কিটো পরতে পারেন আর পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে স্যান্ডেল পরাটাই সবথেকে বেশি মানানসই।
পুজোর জন্য এই জুতোগুলি একদম ফিট →
✨ ৮) ঘড়ি:
প্রতিটি ছেলেদের হাতে ঘড়ি থাকাটা স্বাভাবিক বিষয় হলেও কোনো ফ্যাশনের সাথে এই ঘড়ি অনেকখানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যদি আপনি ঘড়ি পরতে পছন্দ করেন তাহলে শার্ট অথবা পাঞ্জাবি সবকিছুতেই সুন্দর ডায়েলের ঘড়ি পরতে ভুলবেন না।
আকর্ষণীয় ডিজিটাল ঘড়িগুলি দেখতে পারেন →
⭐ তো পূজার কয় দিন এই ভাবেই নিজেকে রাখুন পরিপাটি, আর সকলের মাঝে নিজেকে আকর্ষণীয় করে রাখতে এর থেকে বেশি কিছু প্রয়োজন নেই বললেই চলে।
আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন এবং পছন্দের মানুষটির কাছে নিজেকে সবথেকে বেশি আকর্ষণীয় করে রাখার জন্য খুব বেশি টাকা খরচ করতে হবে এমনটা কিন্তু নয়, আপনার যেটুকু কেনাকাটা হয়েছে তার মধ্যেই নতুন ফ্যাশন তৈরি করে নিতে পারবেন আপনি নিজে থেকেই।