Durga Puja 2023: দুর্গাপূজার দিন গুলিতে কোন দিন কোন পোশাক পরবেন? চলুন জানা যাক

উৎসব আর আনন্দ প্রিয় বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। তার মধ্যে দুর্গোৎসব এই পার্বণটি সবথেকে বড় উৎসব। এই উৎসবের জন্য সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকা হয়। এমন কি বলতে গেলে সারা বছর ধরে এই পূজার তোড়জোড় চলে, প্রতি বছর পূজোর এই ৫ টা দিনের জন্য ছোট থেকে বড় সকলেই উৎসাহের সাথে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন।

ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে যায় দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান। নতুন জামা কাপড়, জমিয়ে আড্ডা, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে পুজো দেখা, ঠাকুর দেখা, তার সাথে রয়েছে খাওয়া দাওয়া, হাসিখুশি ভরা, আনন্দে ভরপুর এই পুজোর দিনগুলি খুবই সুন্দর ভাবে কেটে যায়, সকলের ঘরে আসে উৎসবের আনন্দ।

দুর্গাপূজার দিন গুলিতে কোন দিন কোন পোশাক পরবেন?
দুর্গাপূজার দিন গুলিতে কোন দিন কোন পোশাক পরবেন?

সবই তো হলো, কিন্তু পূজার এই পাঁচটা দিন কেনাকাটা করেছেন অনেক কিছুই, কিন্তু ভেবে উঠতে পারছেন না যে, কোন দিন কোন পোশাক পরবেন, ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত এই পাঁচটা দিন ট্রেন্ড অনুযায়ী এবং সকলের সাথে তাল মিলিয়ে, সময়ের সাথে এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে তুললে তবেই না আপনি সবার চোখে সুন্দরভাবে ধরা দেবেন তাই নয় কি !

দুর্গাপূজা উপলক্ষে আপনার ও পূজার ঘরটিকে সাজান এই পদ্ধতিতে

ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে সকলেই কিন্তু কোন দিন কোন পোশাক পরবেন তা নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকেন। তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, পূজার এই পাঁচটা দিন আপনি কিভাবে নিজেকে স্টাইলিশ করে সবার সামনে প্রেজেন্ট করতে পারেন: 

১) মহা ষষ্ঠীর সাজ:

আমরা আগেই জেনেছি যে, ষষ্ঠী থেকেই পুজো শুরু আর এই দিন থেকেই সাজগোজেরও রমরমা শুরু হয়ে যায়। তাছাড়া পঞ্চমী থেকেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ভিড় চোখে পড়েই। তবে ষষ্ঠী থেকে সেটা আরও জাঁকজমকপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠে।

জিন্স শর্ট কুর্তি

ষষ্ঠীতে অনেকেই হালকা জামা কাপড় পরতে পছন্দ করেন। এই দিন জিন্স টপ অথবা জিন্স শর্ট কুর্তিও পরতে পারেন। কুর্তি লেগিংস অথবা কুর্তি প্লাজো পরতে পারেন।

টি শার্ট অথবা শার্টের সাথে জিন্স

এর পাশাপাশি ছেলেরাও টি শার্ট অথবা শার্টের সাথে জিন্স বা অন্যান্য স্টাইলিশ প্যান্ট পরতে পারেন নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে তোলার জন্য।

২) মহা সপ্তমীর সাজ:

ষষ্ঠী চলে গেলেই মহা সপ্তমী তে অনেকেই প্যান্ডেলে গিয়ে ভিড় জমিয়ে থাকেন। তবে এক্ষেত্রে এই দিন ওয়েস্টার্ন ড্রেস টা বেশি হারে চলে। বাইরে বেরোনোর জন্য ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরতে পারেন।

স্লিপলেস কোন কুর্তি প্লাজো অথবা লেগিন্স পরতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে হালকা পিওর সিল্ক শাড়ি আপনাকে সবার মাঝখানে করে তুলবে অনন্যা। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে জিন্স তো মাস্ট।

তবে তার সাথে শার্ট অথবা টি-শার্ট বা স্নিকার আপনার পছন্দমত পরতে পারেন। ডার্ক কালারের ফুল স্লিপ চেক দেওয়া অথবা সলিড কোন শার্ট পরা যেতেই পারে। তবে এক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখা জরুরী যে, ছেলেদের জন্য যাই পোশাক হোক না কেন জিন্স কিন্তু মাস্ট।

৩) মহা অষ্টমীর সাজ:

দুর্গাপূজার সব কটা দিনের মধ্যে মহা অষ্টমী হল একটি বিশেষ দিন। এই দিনটা সকল বাঙালি দের কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এই দিনটির জন্য প্রায় প্রতিটি বাঙালি অপেক্ষা করে থাকেন।

অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য কাউকে নতুন করে বলতে হয় না। অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি দেওয়ার সময় তাঁতের শাড়ি, হ্যান্ডলুম শাড়ি, ঢাকাই শাড়ি, জামদানি শাড়ি পরা যেতেই পারে। এছাড়া মেকআপ যত হালকা রাখবেন ততই কিন্তু আপনাকে সুন্দর দেখাবে।

তার সাথে ছোট্ট টিপ আর চুলের খোঁপায় যদি ফুলের মালা দেওয়া হয়, তাহলে তো আর কথাই নেই আপনি যেন অপরূপা হয়ে উঠবেন। আর অষ্টমীর রাতেও আপনার পছন্দের শাড়ি পরতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে অষ্টমীর রাত্রে জমকালো কোন শাড়ি পরতেই পারেন। কেননা রাতের সাজ ভারি হলেও আপনার কষ্ট হবে না।

এর সাথে রয়েছে লেহেঙ্গা অথবা ভারী কাজ করা কুর্তির সাথে সারারা তো এখন প্রচুর পরিমাণে ট্রেন্ড করছে। চুড়িদার আনারকলি এগুলো তো এভারগ্রীন

এর পাশাপাশি ছেলেরা অঞ্জলি দেওয়ার সময় পায়জামা-পাঞ্জাবি অথবা বেশ রাজকীয়ভাবে তৈরি পাঞ্জাবি বেছে নিতে পারেন। এছাড়া রাতে জিন্সের সাথে পাঞ্জাবি অথবা হালকা কোন শেরওয়ানি পরা যেতেই পারে।

৪) মহানবমীর সাজ:

নবমীতে খাওয়া-দাওয়া, হইহুল্লোর আর আনন্দের পাশাপাশি ড্রেসটাও যেন একটু চেঞ্জ হয়ে যায়। কেননা এই দিনে যে যার পছন্দ মতো পছন্দ করেন ওয়েস্টার্ন ড্রেস। তাছাড়া আপনার যদি পছন্দ হয় সে ক্ষেত্রে আনারকলি এবং ফুলহাতা ব্লাউজের সাথে ম্যাচিং করে শাড়ি, লং গাউনও করতে পারেন।

এর পাশাপাশি ছেলেরাও জিন্স টি-শার্ট এর বদলে জহর কোট অথবা সলিড পাঞ্জাবি তার পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন কোন ড্রেস পরতে পারেন।

তবে হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আপনি কেনাকাটা করেছেন তার মধ্যে সব রকম মিলেমিশে রয়েছে। সেগুলি থেকে বেছে আপনাকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে হবে, কোন দিন কোনটা পরবেন। তাহলে উৎসবের দিনে আপনার আর সময় নষ্ট হবে না অযথা।

৫) দশমীর সাজ:

বিজয় দশমী মানেই হাসি কান্না মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে এই দিনে লাল পাড় সাদা শাড়ি, এটাই কিন্তু ট্র্যাডিশনাল লুক। তাইতো অনেকদিন আগে থেকে এই বিজয়া দশমীতে আলতা পেড়ে শাড়ি আর হালকা গহনাতে নারীরা হয়ে ওঠেন এক একটি দশভূজা।

তবে তাঁত অথবা জামদানি, তসর অথবা বেনারসি আটপৌরে করে পরে চুলের খোপা করে তাতে ফুল ও ফুলের মালা দিয়ে সাজালে আরো বেশি সুন্দর লাগে।

তার সাথে থাকতে হবে মেকআপের হালকা ছোঁয়া। যেমন ধরুন চোখে হালকা কাজল, বড় লাল টিপ, লাল লিপস্টিক, গোল্ড প্লেটেড গয়না আপনার পছন্দমত পরতে পারেন। আর আলতা পরতে কিন্তু একেবারেই ভুলবেন না।

তবে এক্ষেত্রে অনেকে শুধুমাত্র পায়ে আলতা পরেন, এর পাশাপাশি যদি হাতে আলতা দিয়ে আঙুলের মাথা ও হাতের তালু রাঙিয়ে তুলতে পারেন তাহলে আপনাকে আরো বেশি মোহময়ী লাগবে।

ছেলেদের সাজ খুবই সিম্পল, তাইতো ছেলেরা দশমীতে ধুতির সাথে সাথে জমিদারি প্যাটার্ন এর পাঞ্জাবি অথবা তসরের পাঞ্জাবি পরতে পারেন।

যদি সদ্য বিবাহ হয়ে থাকে স্ত্রীর সাথে ম্যাচিং করে পাঞ্জাবি পরলে দুজনকে খুব সুন্দর মানাবে। তাছাড়া সিঁদুর খেলায় কপালে ও গালে সিঁদুরের ছোঁয়া আপনাদের রূপকে আরো বেশি ফুটিয়ে তুলবে।

টিপস:

এইতো গেল ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত সাজগোজ। তবে এখানে একটা কথা বলে রাখা জরুরী যে, কখনোই অন্য কে কি করছে সেটা কপি না করে নিজের পছন্দ এবং নিজের লুকটার দিকেও খেয়াল রাখবেন, কেননা একই ড্রেসে সবাইকে সমান ভাবে মানায় না।

হয়তো দেখা যাচ্ছে আপনি সামান্য আনারকলিতেই অদ্বিতীয়া হয়ে উঠেছেন। আর হ্যাঁ জুতোর দিকটা খেয়াল রাখাটা জরুরী, যেহেতু উৎসবের দিনগুলিতে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে হাঁটাচলা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কনফরটেবল কোন জুতো অবশ্যই কিনবেন।

তবে অবশ্যই সেটা যেন পায়ের সাথে মানানসই হয়। উগ্র সাজগোজ একেবারেই চলবে না, যেটা আপনাকে সকলের সামনে হাসির পাত্র করে তুলতে পারে। এমন ভাবে মেকআপ করুন সেটা যেন নো মেকআপ মেকআপ লুক হয়। সকলের পুজো কাটুক খুবই সুন্দর ভাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top