Education Loan: শিক্ষাই দেশের মেরুদন্ড। তাই শিক্ষালাভ করতে কে না চায়। কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্যেও অনেক ছাত্রের ছাত্রজীবন অকালেই ঝরে যায় দারিদ্রের কষাঘাতে পড়ে। অনেক গরীব ছাত্রই উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন জলাঞ্জলী দেয় উচ্চশিক্ষার খরচ মেটাতে না পেরে।
এইসব ছাত্রের স্বপ্ন বাচিয়ে রাখতে এডুকেশন লোন খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আজ ভারতের অনেক ছাত্রই Education Loan (শিক্ষাগত লোন) নিয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজো অনেক ছাত্র হয়তো জানেনা এডুকেশন লোন কিভাবে নিতে হয়। কি দরকার হয় এডুকেশন লোন নিতে ।
তাই আমাদের আজকের আলোচনা হবে এডুকেশন লোন নিয়ে। আসুন দেখা যাক এডুকেশন লোনের বিস্তারিত তথ্য।
Education Loan কি?
এডুকেশন লোন একধরনের ঋণ, যা ছাত্রদের পড়াশুনায় সাহায্য করার জন্য দেয়া হয়। একজন ছাত্রের পড়াশুনার ব্যয় মেটানোর জন্য যেমন টিউশন ফি, বই-খাতা, আবাসন ও খাবার খরচ মেটানোর জন্য এই লোন দেয়া হয়ে থাকে। সাধারনত উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় শেষ হবার পর এই Loan নেয়া যায়।
এটা অন্য সকল লোন থেকে আলাদা, কারণ এই ঋণে সুদের হার অনেক কম থাকে, আর ঐ ছাত্রের শিক্ষা জীবন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করতে হয়না। শিক্ষা জীবন শেষ হবার পর থেকে ঋণ পরিশোধ প্রক্রিয়া চালু হয়।
কি কি কোর্সের জন্য দেয়া হয় এডুকেশন লোন?
সাধারনত যে সব কোর্সের জন্য এডুকেশন লোন পাওয়া যায় তা হলো-
১) দেশের ইউজিসি স্বীকৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম।
২) এআইসিটি অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারিং বা কোনও প্রযুক্তি বিদ্যার কোর্স।
৩) এআইবিএমএস বা আইসিএমআর অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারী শিক্ষা।
৪) বানিজ্য শাখার নানা পাঠ্যক্রম। যেমন, চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, চাটার্ড ফিনান্সিয়াল একাউন্টেন্ট, আইসিডব্লিওএ ইত্যাদি।
৫) সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজমেন্ট।
৬) নামী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত কোণ পাঠ্যক্রম যা ভারতে পড়ানো হয়।
কি কি খরচের জন্য দেয়া হয় এডুকেশন লোন ?
১) পড়ার খরচ
২) হোস্টেলে থাকা খাওয়ার খরচ
৩) পরীক্ষার ফী।
৪) লাইব্রেরী ও লাইব্রেরীর টাকা।
৫) বিদেশে পড়ার ক্ষেত্রে যাতায়াত ও আনুষঙ্গিক খরচ
৬) বই ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার খরচ।
৭) কম্পিউটার ও ইউনিফর্মের খরচ।
কারা দেয় এডুকেশন লোন?
এখন ভারতের প্রায় সকল সরকারী-বেসরকারী ব্যাংক শিক্ষা লোন দিয়ে থাকে। বিশেষ করে কোন ছাত্র দেশের বা বিদেশের নামী দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলে যে কোন ব্যাংকই এডুকেশন লোন দিতে এগিয়ে থাকে।
এছাড়াও কোন ছাত্র ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেলে এডুকেশন লোন পেতে সমস্যা হয়না। যে কোন ভারতীয় নাগরিক এডুকেশন লোন পেতে পারে। তবে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্য ঋণ চাইছেন তার উপযুক্ত প্রমাণ জমা দিতে হবে।
কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হয়?
এডুকেশন লোনের জন্য আবেদন করতে ব্যাংকগুলি সাধারনত নিম্নের বিষয়গুলির কাগজপত্র চেয়ে থাকে।
১) মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (যদি থাকে) পাসের মার্কশিট।
২) পাঠ্যক্রমের খরচের হিসাব।
৩) আগের পরীক্ষাগুলো পাসের সার্টিফিকেট।
৪) ছাত্রের প্ল্যান কার্ড।
৫) ছাত্রের ঠিকানা ও পরিচয়ের প্রমাণপত্র।
৬) ছাত্রের ২ কপি ছবি।
৭) বাবা-মায়ের ২ কপি করে ছবি।
৮) বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য লোন পেতে বাড়তি যে বিষয়গুলি লাগবে-
• পাসপোর্টের ফটোকপি।
• প্রতিষ্ঠানের ভর্তির সুযোগ পাওয়ার প্রমান।
• ঋণ ছাড়াও যে বাড়তি টাকা লাগবে তা দিতে পারার প্রমাণ।
৯) সাধারণত ৪ লক্ষ টাকা লোন পর্যন্ত বন্ধক রাখা লাগে না। শুধু অভিভাবককে কো-বায়ার হতে হয়।
এই হলো এডুকেশন লোনের বিস্তারিত। এডুকেশন লোন নিয়ে আরো কিছু জানার থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট করবেন, পরবর্তী লেখায় আমরা চেষ্টা করবো আপনার আগ্রহের জবাব দিতে। সমস্ত লোন সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখবেন।