ইনকাম ট্যাক্স থেকে ১৪২ ধারা নোটিশ পেয়েছেন? এবার কি করবেন? এখানে জানুন

ইনকাম ট্যাক্স ভরতে কোন ভুল হওয়ার কারণে যদি ১৪২ ধারা নোটিশ পেয়ে থাকেন তাহলে কি করবেন? কিভাবে ১৪২ ধারার নোটিশের উত্তর দেবেন? এই নোটিশের আসন উদ্দেশ্য কি? কেন দেওয়া হয় ১৪২ ধারার নোটিশ? এখানে জানুন সব কিছু।

একটি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন-যাপনে কোন মানুষ চাইবেন না যে, যেকোনো পরিস্থিতিতে আইনের চক্করে পড়বেন। আর এই আইনের জালে জড়ানো বিষয়টা সকলে এড়িয়ে চলেন। আর তাই তো বেশিরভাগ মানুষ অপরাধ মূলক কাজ থেকে অনেকটাই দূরত্ব বজায় রাখেন। ইনকাম ট্যাক্স থেকে শুরু করে অপরাধমূলক কাজ বা অনৈতিক কোন কিছু করা থেকে বিরত থাকেন।

তবে যদি কোন বিষয়ের ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত কোনরকম আইনি ঘেরাটোপে যদি আপনি পড়ে যান, সে ক্ষেত্রে একেবারে হতচকিত না হয়ে, বেশ কিছু পদক্ষেপ অবলম্বন করে আপনি সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন খুবই সহজ ভাবে। তাছাড়া সত্যের জয় সবসময় হয় তবে সেটা অনেক ক্ষেত্রে কষ্টকর পরিস্থিতি তৈরি করে, আর বেশ কিছুটা সময় আপনার নষ্ট হয়ে যায়, তাই নয় কি ?

আয়কর বিভাগ নোটিশ পাঠালে অনেক ব্যক্তি খুবই ভয় পেয়ে যান, আর এটা সাধারণত বেশ বড় কারণ হতে পারে। তার সাথে সাথে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন সেই ব্যাক্তি মনের মধ্যে ভিড় জমাতে পারে যে ব্যক্তি এই নোটিশ পেয়েছেন তাঁর ক্ষেত্রে। যে প্রশ্ন গুলি আয়কর বিভাগ দ্বারা প্রস্তুত করা হবে এবং সেই ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হবে।

ইনকাম ট্যাক্স থেকে ১৪২ ধারা নোটিশ পেয়েছেন? এবার কি করবেন? এখানে জানুন
ইনকাম ট্যাক্স থেকে ১৪২ ধারা নোটিশ পেয়েছেন? এবার কি করবেন? এখানে জানুন

ধারা 143 (2) অনুসারে প্রাপ্ত হওয়া নোটিশ সমীক্ষা নোটিশ এর হিসাবে জানা যেতে পারে। যদি আপনি 143 (2) অনুসারে নোটিশ পেয়ে থাকেন, তাহলে কোন রকম ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই।

তার সাথে সাথে এই আয়কর বিভাগের সমস্ত রকম নির্দেশ পালন করাটা আপনার জন্য অবশ্যই কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। ঠান্ডা মাথায় আধিকারিক এর সমস্ত রকম নির্দেশ পালন করতে হবে।

আর এটা অবশ্যই প্রয়োজনীয়। আর সবথেকে প্রথমে এই বিষয়কে কখনোই গুরুত্ব না দিয়ে, এড়িয়ে যাবেন না। একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবশ্যই আপনার বক্তব্য অথবা উত্তর দেওয়া প্রয়োজন। 

এ বিষয়ে মূল্যায়ন করবেন সেই অধিকারে মূল্যায়নের বছর পূর্ণ হওয়ার ছয় মাস পর এই নোটিশ দিতে পারেন। বিস্তৃত মূল্যায়ন করার জন্য সেই আধিকারিক আপনার থেকে আপনার ট্রেডিং গতিবিধি, লাভ আর ক্ষতির খাতা অর্থাৎ প্রফিট অ্যান্ড লস একাউন্ট, ব্যালেন্স শীট, ব্যাংকের স্টেটমেন্ট, ব্যাংকের পাসবুক সমস্ত কিছু দেওয়ার জন্য বলতে পারেন।

সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে সম্পূর্ণরূপে আয়কর বিভাগ কে সহযোগিতা করতে হবে। আর মূল্যায়ন করা আধিকারিক দ্বারা অবশ্যই সমস্ত রকম তথ্য প্রদান করা প্রয়োজন।

এছাড়াও করদাতা সেই মূল্যায়ন করা আধিকারিক এর সংস্পর্শে থাকতে হবে অথবা তার সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে ভালোমতো। আর যে প্রমাণপত্র অথবা সাক্ষ্য-প্রমাণ চেয়ে থাকবেন তিনি সেগুলো জমা করতে হবে। যদি আপনি এমন করা থেকে বিরত থাকেন, তাহলে কর বিভাগ থেকে অথবা আয়কর বিভাগ থেকে আপনাকে একটি নোটিশ দেওয়া হতে পারে।

যদি আপনি একজন বেতনভুক্ত কর্মচারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ফর্ম 16 তৈরি করে রাখতে হবে। যা কিনা আপনাকে যিনি নিযুক্ত করেছেন সেই ব্যক্তি দ্বারা অবশ্যই রেজিষ্টার হতে হবে।

যদি আপনি এই নোটিশ এর অনুযায়ী কাজ করতে বিফল হয়ে থাকেন তাহলে:

১) এই অধিনিয়ম ধারা 144 অনুসারে সর্বশ্রেষ্ঠ মূল্যায়ন নির্ণয় হতে পারে।

২) জরিমানা হিসেবে প্রত্যেক বিফলতা অনুযায়ী ধারা 271 (1) (B) অনুসারে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

৩) আপনার বিরুদ্ধে 276 D অনুযায়ী মামলা চালানো যেতে পারে। যা কিনা এক বছরের জেল এবং তার সাথে জরিমানা অনেকটা বেড়ে যেতে পারে।

যদি কোন ব্যক্তি অপরাধ না করে থাকেন তাহলে আইনের সমস্ত রকম গতিবিধি লক্ষ্য করে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন আর যদি সে গুলি পূরণ করতে আপনি অক্ষম থাকেন, তাহলে অপরাধ না করেও অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হবে আপনাকে।

সে ক্ষেত্রে আপনার জেল-জরিমানা দুটোই হতে পারে। তাই নোটিশ অনুযায়ী সমস্ত রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাথে সাথে সময়ের মধ্যে সব কিছু জমা করা এবং আপনার বক্তব্য ব্যক্ত করা অবশ্যই প্রয়োজন।

তাছাড়া অনেকেই নোটিশ প্রাপ্ত হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবে ভেঙে পড়েন। এটা একেবারেই উচিত নয়, আইন অনুসারে আধিকারিকের কথা অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করে অনায়াসেই সেই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন, তার জন্য চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

তাছাড়া যদি আইন অনুসারে সমস্ত রকম পদক্ষেপ গ্রহণ না করে শুধুমাত্র চিন্তিত থাকেন তাহলে সময়ের অপচয় হবে অনেকখানি এবং সময়ের মধ্যে যদি নোটিশ অনুযায়ী কাজ করতে না পারেন সে ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হবে আপনার জন্য। তাই অযথা চিন্তা না করে নোটিশ অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ গ্রহন করুন।

তার সাথে মূল্যায়ন করা আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে রাখুন। যেটা আপনার এ বিষয়ে অনেকখানি সহযোগিতা প্রদান করবে। তবে যেমনটা করতে বলবেন তেমনটা করতে হবে অবশ্যই আপনাকে।

এইজন্য আপনাকে আয়কর বিভাগ দ্বারা অনুরোধ করা সমস্ত রকম বিবরণ আর সাক্ষ্য-প্রমাণ এর ওপর খেয়াল রেখে সমস্ত কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হবে এবং জমা করতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি খুবই ভালভাবে এমন জটিল পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন অনায়াসেই।

আয়কর বিভাগ দ্বারা এই নোটিশ যদি আপনি পান, তাহলে কিন্তু আপনার ইনকাম সম্পর্কিত সমস্ত রকম তথ্য যাচাই করা হবে খুবই ভালভাবে। যেমন ধরুন ট্রেডিং এর গতিবিধি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট, প্রফিট অ্যান্ড লস একাউন্ট, ব্যাংকের পাসবুক, ব্যালেন্স শীট, ইত্যাদি। এগুলির তথ্য যাচাই করার জন্য মূল্যায়ন আধিকারিক কে আপনাকে সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা করতে হবে, আর এটা আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top