Kali Puja 2023: কালীপূজাতে এই পদ্ধতিতে প্রদীপ জ্বালালে হবে সম্পদের আগমন

প্রতিটি পূজা পার্বণে দেব-দেবীদের কাছে একটাই চাওয়া পাওয়া, জীবনে যেন উন্নতি সাধন হয়, সুস্থ ভাবে জীবন যাপন, কোনোরকম বিপদে যেন না পড়তে হয়, স্বাভাবিকভাবে জীবনযাত্রা যেন এগিয়ে চলে, সম্পদের আগমন, আরো অনেক কিছুর চাওয়া পাওয়া। ভাগ্য ফেরাতে আপনি এই কালী পূজাতে করতে পারেন এমন কিছু নিয়ম পালন, যেগুলি আপনাকে অবাক করতে পারে।

কালী পূজা অথবা দীপাবলি হলো আলোর উৎসবকার্তিক মাসের অমাবস্যার অন্ধকারে এই দিন ঘরে ঘরে প্রদীপের আলোয় শুভ শক্তির আগমন ঘটে। সব মিলিয়ে পাঁচ দিন ধরে চলে দীপাবলীর এই উৎসব। যা শুরু হয় ধনতেরাস দিয়ে এবং শেষ হয় ভাতৃদ্বিতীয় অথবা ভাইফোঁটা দিয়ে। দীপাবলি কে আলোর উৎসব বলা হয়ে থাকে অনেক জায়গায়।

কালীপূজাতে এই পদ্ধতিতে প্রদীপ জ্বালালে হবে সম্পদের আগমন
কালীপূজাতে এই পদ্ধতিতে প্রদীপ জ্বালালে হবে সম্পদের আগমন

বাঙালিরা এই দিন মা কালীর পূজা করলেও অনেকেই লক্ষ্মী পূজা করেন এবং অবাঙালিরা এই দিন ঘরে ঘরে লক্ষ্মী ও গণেশের পূজা হয়ে থাকেন ঘটা করে। বাঙ্গালী দের মধ্যে অনেকেই কোজাগরী পূর্ণিমার মত কালী পূজার অমাবস্যা লক্ষ্মী পূজা করে থাকেন, যাকে এক কথায় দীপান্বিতা লক্ষ্মী পূজা বলা হয়।

দীপাবলি অর্থাৎ যার সাথে প্রদীপের সম্পর্ক রয়েছে সুন্দরভাবে। দীপাবলি মানেই কিন্তু প্রদীপের রমরমা, বিভিন্ন রঙের, বিভিন্ন সাইজের প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয় বাড়ি এবং বাড়ির চারপাশটা। বাড়ি, ঠাকুর ঘরে জ্বালানো হয় ঘি এর প্রদীপ।

আর সেই কারণে শাস্ত্র অনুসারে দীপাবলিতে প্রদীপ জ্বালানো অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। কয়েকটি সহজ নিয়ম মেনে চললে আপনার এই সামান্য প্রদীপ আপনার ভাগ্যকে সম্পূর্ণ রূপে পরিবর্তন করে দিতে পারে। আর এই প্রদীপ জ্বালিয়েই আপনি দূর করতে পারবেন আপনার দুর্ভাগ্যের অন্ধকার।

দুঃখ কষ্ট তে ভরা জীবন কারোরই পছন্দ নয়। সবাই চায় সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে। আর সমস্ত দুঃখ-কষ্ট দূর করতে এই কালীপূজাতে কিভাবে প্রদীপ জ্বালিয়ে আপনি সৌভাগ্যকে আহ্বান জানাবেন, সেটা জানতে নিশ্চয়ই ইচ্ছা করছে, তাই তো !

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, এই কালী পূজাতে আপনি প্রদীপ দিয়ে এমন কিছু করুন, যার ফলে আপনার ভাগ্য বদলে যাবে:

১) গাওয়া ঘি এর প্রদীপ জ্বালান:

তেলের প্রদীপ তো সারা বছর ধরে ঠাকুর ঘরে জ্বালানো হয়ই, তবে দীপাবলির এই সন্ধ্যার সময় তেল দিয়ে নয়, গাওয়া ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালান আপনার ভাগ্য বদল করতে। আর তার পাশাপাশি ঘি এর প্রদীপ অত্যন্ত শুভ যা কিনা অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে শুভ শক্তির আগমন ঘটায়।

বাড়িতে পজিটিভ শক্তির বাতাবরণ তৈরি হয়। পারলে আপনার সদর দরজার সামনে একটি বড় প্রদীপ গাওয়া ঘি দিয়ে জ্বালিয়ে রাখতে পারেন। এর ফলে শুভ ফল পাওয়ার পাশাপাশি আপনার ভাগ্যে আসবে আমুল পরিবর্তন।

২) সরষের তেলের প্রদীপ:

দীপাবলিতে চারিদিকের অন্ধকার কাটাতে প্রদীপ জ্বালালে সেখানে আপনি ঘি দিতে যদি না পারেন সে ক্ষেত্রে সরষের তেলের প্রদীপ জ্বালাতে পারেন। এর ফলে আপনি শুভ ফল লাভ করবেন।

কোনরকম গ্রহ দোষ থাকলে সেটাও কিন্তু কেটে যাবে অর্থাৎ শনির দশা চললে সরষের তেলের প্রদীপ জ্বালানো উপকারী বলে মনে করা হয়।।

৩) তিলের তেলের প্রদীপ:

তিল থেকে তৈরি যে তেল তা দিয়েও প্রদীপ জ্বালালে সংসারের শুভ শক্তির আগমন ঘটে, তিলের তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালানো শুভ বলে মনে করা হয়।

আর সেই কারণে গাওয়া ঘি এর পাশাপাশি আপনি বাড়িতে তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালাবেন আর এই প্রদীপের ধোঁয়ায় দূর হয়ে যাবে সমস্ত গ্রহ দোষ এবং নেগেটিভ শক্তি।

৪) প্রদীপে রাখুন একটি লবঙ্গ:

চারিদিকে প্রদীপ আর মোমবাতি দিয়ে অন্ধকার দূর করতে সবাই তৎপর হন। তবে সৌভাগ্য ফিরিয়ে আনতে দীপাবলীর দিন প্রদীপে একটি লবঙ্গ রেখে দিন এবং সেটি প্রদীপের সঙ্গে জ্বলতে দিন।

এর ফলে আপনার ঘরে নেগেটিভ এনার্জি সরে যাবে, আর পজেটিভ এনার্জি সেই জায়গা দখল করবে। লবঙ্গ অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়, এর ফলে ঘরে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে ভরে ভরে। এছাড়া এই প্রদীপ ঠাকুরের আসনের সামনেও রাখতে পারেন।

৫) পঞ্চ প্রদীপ জ্বালান:

প্রত্যেকটি পূজা তে পঞ্চ প্রদীপ একটি প্রয়োজনীয় জিনিস। পূজাতে আরতি করার পর সেই প্রদীপের আঁচ সকলেই নিয়ে নিজেদেরকে ধন্য বলে মনে করেন।

এর পাশাপাশি কালী পূজার সন্ধ্যায় ঠাকুরের আসনের সামনে একটি পঞ্চ প্রদীপ অবশ্যই জ্বালাবেন আপনার ঘরে, ঠাকুর ঘরে।

যদি এটি করতে পারেন, এর ফলে পরিবারের সদস্যদের রোগ, শোক দূর হবে এবং সেই প্রদীপের আলোর ছোঁয়ায় আপনার পরিবারের সুস্থতা ও সমৃদ্ধি বজায় থাকবে আজীবন। প্রতিটি হিন্দু বাড়িতে পিতলের পঞ্চ প্রদীপ থেকে থাকে।

তবে যাদের কোনরকম পঞ্চ প্রদীপ কেনার সামর্থ্য নেই, তাঁরা এখন বাজারে মাটির পঞ্চ প্রদীপ ও পাওয়া যায়, সেই প্রদীপ ব্যবহার করতে পারেন।

৬) একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন সারারাত:

কালী পূজার রাতে সন্ধ্যা থেকে অন্ধকার নামার সাথে সাথে চারিদিকে প্রদীপ, মোমবাতি দিয়ে সাজানোর ধূম পড়ে যায়। সেই প্রদীপ, মোমবাতি কয়েক ঘন্টা জ্বলার পর হয়তো তা নিভেও যায় এবং ইলেকট্রিক যে লাইটগুলো রয়েছে সেগুলো দিয়ে সাজানো থাকলে ঘরের চারপাশটা সব সময় আলোকিত হয়ে থাকে।

এখানে একটা কথা খুব ভালোভাবে মনে রাখতে হবে যে, কালীপূজার রাতে একটি বড় ঘি এর প্রদীপ ঠাকুর ঘরে অথবা এমন কোন জায়গায় জ্বালিয়ে রাখতে হবে সে জায়গাটি পবিত্র এবং সেখানে কোন হাওয়া বাতাস লেগে যেন প্রদীপ টি নিভে না যায়। সারারাত সেই প্রদীপ টি জ্বালিয়ে রাখলে সবার দুঃখ-কষ্ট সরে গিয়ে জীবনে আসবে অনেকখানি পরিবর্তন।

৭) সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন:

সব প্রদীপ গুলি একসাথে জ্বালানো সম্ভব না হলেও, কালী পূজার রাতে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বেশ কিছু তেলের প্রদীপ জ্বালাতে পারেন।

এর ফলে যেমন সন্ধ্যের অন্ধকার আপনার ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না, তেমনি সংসারের সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে, শুভ শক্তির আগমন ঘটবে, এর পরে আস্তে আস্তে সকল প্রদীপ গুলি জ্বালিয়ে চারিদিকে সাজিয়ে দিতে পারেন।

⭐ ছোট বড় রং বেরঙের এবং ডিজাইন করা প্রদীপ গুলি দীপাবলিতে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার পাশাপাশি অন্ধকার কে মুছে দিয়ে আলোর ছোঁয়া লাগায় সকলের মনে।

চারিদিকের পরিবেশ সেজে ওঠে আলোর সাজে। এই আলোর সাজ যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি আপনার মনে জাগাবে এক পজেটিভ চিন্তা ধারা।

সামান্য প্রদীপ দিয়ে মনে ভক্তি রেখে আপনি আপনার ভাগ্য বদল করতে পারবেন এই কালী পূজার রাতে। তাহলে আর দেরি কেন? যে প্রদীপ আপনি সাধারণ ভাবে জ্বালাতেন, তার মধ্যে একটুখানি পরিবর্তন করতে পারলেই আপনার ভাগ্যে আসবে অনেকখানি পরিবর্তন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top