Swarnjayanti Gram Swarozgar Yojana 2023 (SGSY) (স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্ব-রোজগার যোজনা 2023), স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্ব-রোজগার যোজনা কি? এই যোজনার লাভ কি? স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্ব-রোজগার যোজনাতে কিভাবে আবেদন করবেন? এবং এই যোজনার আরও তথ্য এখানে দেখুন।
আমাদের জীবনে কাজের গুরুত্ব কতখানি রয়েছে তার সব থেকে বড় উদাহরণ এই করোনা পরিস্থিতিতে আমরা বুঝতে পেরেছি। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই তাদের কাজ হারিয়ে ঘরে বসে ছিলেন। জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠার মতো পরিস্থিতি। এমন অবস্থায় অনেকের বাড়িতে খাওয়ার মতো কোনো রকম কিছুই ছিলনা।
অনেক কর্মহীন বেকার যুবক কাজের তাগিদে গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে যেতে শুরু করেন। যেখানে কাজের কোনো সন্ধান পেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ হতে পারে খুবই সহজে, এই আশা নিয়ে নিজেদের ঘর, পরিবার ছেড়ে শহরে অথবা অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন।
সাধারন মানুষের দুর্দশার কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকার বিভিন্ন রকমের প্রকল্প প্রণয়ন করে চলেছে। যার মধ্যে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য “স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা (Swarnjayanti Gram Swarozgar Yojana)” প্রকল্পটির সাধারণ মানুষের জীবনে অনেক খানি পরিবর্তন ঘটাবে।
গ্রামীণ ভারতের দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্য নিয়ে ভারত সরকার ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা (Swarnjayanti Gram Swarozgar Yojana) (SGSY) নামে একটি প্রকল্প চালু চালু করেছিল।
পশ্চিমবঙ্গ তে এই প্রকল্পটি আনন্দধারা (Anandadhara) নামে চালু হয়েছে। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো গ্রামীণ এলাকায় দরিদ্র পরিবারের মহিলাদের সংগঠিত করে এবং তাদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে স্বনিযুক্তি ও মজুরিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে স্থিতিশীল ভাবে তাদের আয় বৃদ্ধি করে, তার মধ্যে দিয়ে তাদের পরিবারের দারিদ্রতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা।
স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য:
যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে তারা বসবাস করছেন একমাত্র তারাই জানেন দারিদ্রতার কতটা কষ্ট। সার্বজনীন সামাজিক একত্রীকরণ গরিবদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য সার্বজনীন আর্থিক অন্তর্ভুক্তি জীবিকায়ন উন্নয়নের জন্য, গরিবদের সংগঠন তৈরি করার জন্য, উৎপাদন ও বিপণনের জন্য, উপযুক্ত পরিকাঠামোর প্রকল্পের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট সহায়ক কাঠামো, বিভিন্ন স্তরে প্রস্তুত করা হলো এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য।
মহিলাদের দল গঠন করে তাদের প্রতিষ্ঠান গঠন, প্রশিক্ষণ, গ্রাম উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ, অংশগ্রহণ করা সংযুক্তি সঠিক পেশা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মযজ্ঞে তাদেরকে উৎসাহিত করা হলো এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
গ্রামের বেকার যুবক ও মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থান:
সর্বমোট মিলিয়ে ৩৭ হাজার ৮৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিটি দলের সদস্যদের সঠিক এবং লাভজনক জীবিকা বেছে নিতে পারেন, তার জন্য এ প্রকল্পটির অনেকখানি সহযোগিতা করবে।
এছাড়া হাসপাতালের ওষুধ পত্র প্রস্তুত ও সরবরাহ করা, স্কুলড্রেস প্রস্তুত করা অথবা সরবরাহ করা, ন্যাপকিন প্রস্তুত ও সরবরাহ করা, মিড ডে মিল প্রস্তুত করা, সরকারের অন্যতম সহায়ক মূল্য চাষিদের থেকে ধান কেনা।
রাস্তার ধারে হোটেল, চিপ ক্যান্টিন, কর্মতীর্থ পরিচালনা, টেলারিং, জৈব সার প্রয়োগে বিভিন্ন মৌসুমি সবজি চাষ, মাছ চাষ, পশুপালন, এসমস্ত তাদের ক্ষেত্রে তাদের জীবিকা নির্বাহের মধ্যে দিয়ে বেকারত্ব দূর করতে পারেন।
স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা:
- পাড়ার মধ্যে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজকে উৎসাহিত করা ও পাড়া ভিত্তিক গ্রুপ বা কাঠামো গঠন করা।
- পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ করানো।
- আর্থিকভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত স্বনিযুক্তি প্রকল্পে বেনিফিশিয়ারি/ সুবিধাভোগীদের কাজ কর্মের উপর নজর রাখা এবং তারা যাতে সঠিক সময়ে রিপোর্ট প্রদান করেন সেদিকে নজর দেওয়া।
- গ্রামের দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্য পূরণের জন্য যেকোনো কাজের দায়িত্ব নেয়া হয় তা সঠিকভাবে যেন পালন করা হয়।
- গ্রাম স্বরোজগার যোজনা ক্ষেত্রে পশুপালন থেকে শুরু করে আরো অন্যান্য কৃষিকাজ এর উপর ভিত্তি করে স্বনির্ভর হওয়া সম্ভব এবং তারসাথে বেকারত্ব দূর হওয়া একটা সুবিধা রয়েছে।
- তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই সমস্ত কাজ করার জন্য বেশ পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয় যার অভাবে অনেক সময় এই কাজ সম্পন্ন করা হয়ে ওঠে না তবে এই স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা এর মধ্যে দিয়ে অথবা লোন নেওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দমত যেকোনো কর্মজীবন বেছে নিতে পারবেন।
- আর তার মধ্যে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন অনায়াসেই।
স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা প্রকল্পের সুবিধা:
- এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে গ্রামের মহিলারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন খুবই সহজে।
- তার সাথে প্রতিটি পরিবার হয়ে উঠবে সচ্ছল।
- অর্থ অভাব দূর হয়ে যাবে এবং এর সাথে সাথে বেকারত্ব ঘুচে যাবে অনেকাংশে।
- এছাড়া সরকারি সহযোগিতার সাথে সাথে নিজেদের জায়গায় পশুপালন, হাঁস-মুরগী পালন, পোল্ট্রি ফার্ম এবং অন্যান্য কাজের মধ্যে আয় এবং রোজগার বাড়ানো যাবে।
- দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন রকমের চাহিদার পাশাপাশি অনেক স্বপ্ন পূরণ হতে পারে এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে।
- অনেক পরিবার এতটাই দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন যে, সেই বাড়ির ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাওয়ার খরচ পেয়ে ওঠে না। তার জন্য এই প্রকল্প অনেকখানি সহযোগিতা করবে।
- এছাড়া করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক পরিবারে অভাব নেমে এসেছে খুবই খারাপ ভাবে, যার ফলে পরিবার এর প্রধান সদস্য রোজগারের উদ্দেশ্যে গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
- তবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামে থেকে, পরিবারের পাশে থেকে, রোজগার করার সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যার ফলে পরিবার এবং নিজের ঘর ছেড়ে শহরে পাড়ি দিতে হবে না বা অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করতে হবে না।
আর সেই কারণেই স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা গ্রামের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তার সাথে সাথে অনেক পরিবারের অন্নসংস্থান হয়েছে বিপুলভাবে।
Home | Click here |
Official Website | Click here |