স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা 2023 (SJSRJ) | Swarna Jayanti Shahari Rozgar Yojana 2023 (SJSRJ)

Swarna Jayanti Shahari Rozgar Yojana 2023 (SJSRJ) (স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা 2023), স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা যোজনা কি? এই যোজনার লাভ কি? স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনাতে কিভাবে আবেদন করবেন? এবং এই যোজনার আরও তথ্য এখানে দেখুন।

শহর হোক অথবা গ্রাম প্রত্যেক জায়গায় কাজের গুরুত্ব সমানভাবে প্রযোজ্য। কর্মক্ষেত্র যদি না থাকতো তাহলে জীবন যাত্রা অচল হয়ে পড়তো। সে কথা আমরা সকলেই জানি। আর সেই কারণে বিভিন্ন রকমের প্রকল্প শুরু হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও নতুন প্রকল্প আসতে চলেছে।

তেমনই একটি প্রকল্প হল “স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা (Swarna Jayanti Shahari Rozgar Yojana)”। যে প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে শহর অঞ্চলের বেকার এবং স্বল্প রোজগারের যুবক-যুবতীদের স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার অঙ্গীকার, তার সাথে জীবিকার নিজস্ব উদ্যোগ বা চাকরি পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ করে দেওয়া হয়। পৌরসভা, পৌর নিগমের মতো স্থানীয় স্ব-শাসিত সংস্থার মাধ্যমে।

স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা - Swarna Jayanti Shahari Rozgar Yojana
স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা – Swarna Jayanti Shahari Rozgar Yojana

এই প্রকল্পের তহবিল কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে  ৭৫:২৫ ভাগ বন্টন করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রকল্পের ৭৫ ভাগ অর্থ মঞ্জুর করে কেন্দ্র সরকার এবং বাকি যে ২৫ ভাগ থাকছে সেটা দেবে রাজ্য সরকার। তাছাড়া এই যোজনার আওতায় দুটি প্রকল্প রয়েছে, সেগুলি হল:-

১) শহর স্বনিযুক্তি প্রকল্প বা দ্য আরবান  self-employment প্রোগ্রাম (USEP)।

২) শহর মজুরি নিযুক্তি প্রকল্প অথবা দ্য আরবান ওয়েজ এম্প্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম (UWEP)।

শহর স্ব-নিযুক্তি প্রকল্প:

এই প্রকল্পের মধ্যে আবার তিনটি সুনির্দিষ্ট দিক রয়েছে, সেগুলি হল:-

১) শহর অঞ্চলের গরিব মানুষদের স্বনির্ভর  রোজগারের জন্য সহযোগিতা প্রদান করা।

২) শহর অঞ্চলের মহিলা গোষ্ঠীগুলোকে স্বনিযুক্তি নির্ভর রোজগার প্রকল্প এর জন্য সহযোগিতা প্রদান করা। এই প্রকল্পকে দ্যা স্কিম ফর ডেভেলপমেন্ট অফ ওম্যান এন্ড চিলড্রেন ইন দ্যা আরবান এরিয়া (DWCUA) এই নামে অভিহিত করা হয়েছে।

৩) এছাড়া উপকার হবে এমন ব্যক্তিদের এবং শহরের রোজগার প্রকল্পে সঙ্গে জড়িত মানুষজন দের প্রশিক্ষণ, তার সাথে ব্যবসার উপায় সম্পর্কে সমস্ত রকম ধারণা দেওয়া, তার সাথে সাথে হাতে কলমে শিক্ষার মান উন্নয়নের ব্যবস্থা করা এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনার প্রসার:

ভারতের প্রতিটি শহরের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটির প্রযোজ্য। প্রকল্পগুলি রূপায়িত হবে সমস্ত শহর জুড়ে। বিশেষভাবে জোর দেয়া হবে গরীব মানুষ বসবাস করে এমন এলাকা গুলির উপরে। যার ফলে সেখানকার গরিব মানুষগুলো রোজগারের মাধ্যমে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।

স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনার উদ্দেশ্য:

যারা শহর অঞ্চলের দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন অথবা খুবই দরিদ্র বলে গণ্য তারাই এই যোজনার মূল উদ্দেশ্য। তাছাড়া বিশেষভাবে এই প্রকল্পের জন্য জোর দেয়া হবে নারী, তপশিলি জাতি- উপজাতি ও প্রতিবন্ধী মানুষদের উপর।

অগ্রাধিকার থাকবে তাদের মধ্যে অন্যতম ৩০% মহিলা হতে হবে স্থানীয় জনসংখ্যায় তপশিলি জাতি ও উপজাতির হার অনুযায়ী যারা এই প্রকল্পের উপকার পাবেন, তাদের মধ্যে সেই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে প্রকল্পের ৩% প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে অর্থাৎ প্রতিবন্ধীরা যারা রয়েছেন এই প্রকল্পের ৩ শতাংশ পর্যন্ত অগ্রাধিকার পাবেন।

এই প্রকল্পের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী, কোনরকম শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রোজগার যোজনা প্রকল্পের সঙ্গে যাতে কোনো রকম জটিলতার সৃষ্টি না হয়, সেই কারণে নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষিতদের প্রকল্পের আওতায় রাখা হয়েছে। মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা কে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি কোনোভাবেই।

প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার মাধ্যমে অবহিত করা হবে দারিদ্র সীমার নিচে, বসবাস করছে তাদেরকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মাপকাঠির পাশাপাশি অর্থনৈতিক বহির্ভূত মাপকাঠি গুলিকে কাজে লাগানো হবে।

মহিলারাই পরিবারের প্রধান এমন পরিবার গুলিকে উপকৃত দের তালিকায় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। এ প্রকল্পের জন্য যেসব পরিবারে বিধবা, বিবাহ বিচ্ছিন্ন, এককভাবে জীবনযাপনকারী মহিলা বাড়ির প্রধান রোজগার কারি এমন পরিবারগুলি মহিলা প্রধান পরিবারের আওতাভুক্ত করা হবে।

এই প্রকল্পের প্রধান উপাদান গুলি:

১) ছোট সংস্থা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বনিযুক্তি:

শহর অঞ্চলের ক্ষেত্রে প্রচুর সুযোগ সুবিধা রয়েছে এমন ব্যবসা, ছোট কারখানা বা ছোট সংস্থা নির্মাণে উৎসাহ দান করা। এই ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে নির্মিত প্রচলিত পণ্য হবে। প্রাপ্য প্রশিক্ষণের উপর জোর দেয়া হয়।

এছাড়াও বাজারজাত করার সুযোগ রয়েছে অনেকখানি। যাতে প্রধানমন্ত্রী রোজগার যোজনার সঙ্গে গুলিয়ে না যায় তার জন্য এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা নবম শ্রেণী পর্যন্ত রাখা হয়েছে।

এই প্রকল্পে ছুতোরের কাজ, স্বল্পমূল্যের বিল্ডিং, প্লাম্বিং এর মত পরিষেবা মূলক জীবিকার প্রশিক্ষণের উপর জোর দেয়া হবে। তার সাথে স্বল্পমূল্যের বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করার মত কাজ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে স্থানীয় পলিটেকনিক, শ্রমিক বিদ্যাপীঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইত্যাদি। মাথাপিছু ২,০০০ টাকা করে ধরা হয়েছে, প্রশিক্ষণের সর্বোচ্চ সময়সীমা ছয় মাস পর্যন্ত।

২) শহর অঞ্চলের নারী ও শিশুদের উন্নয়ন প্রকল্প:

নারীরা আজও কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই, তবে সে ক্ষেত্রে শহর অঞ্চলের গরিব মহিলা যারা গোষ্ঠী গঠনের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে রোজগার করতে চান, তাদের প্রতি দৃষ্টি রেখে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা হয়েছে। দলবদ্ধভাবে মহিলারা স্থানীয় চাহিদার কথা মাথায় রেখে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেবেন।

তার সাথে সাথে রোজগারের ব্যবস্থা করা হবে। এর পাশাপাশি এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো গরীব শহরাঞ্চলের মহিলাদের স্ব- নির্ভর করে গড়ে তোলা। যাতে তারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তাদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে পারেন।

এই প্রকল্পের জন্য আর্থিক সহযোগিতা:

যে গোষ্ঠী গঠন করা হবে সেই গোষ্ঠীগুলির ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বাজেট, প্রকল্প খরচের ৫০% পর্যন্ত অনুদান হিসেবে পেতে পারেন। যেখানে গোষ্ঠীগুলির  প্রকল্পের পাশাপাশি ক্রেডিট সোসাইটি চালু করতে পেরেছে, সেখানে তারা এককালীন ২৫ হাজার টাকা অনুদান পাবেন, প্রতি সদস্য সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা (১,০০০) করে।

প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি যোজনার উদ্দেশ্য ও লাভ

বাংলা স্ব-নির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লাভ

পশ্চিমবঙ্গের কর্মভূমি প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লাভ এবং আবেদন পদ্ধতি

চক্র-তহবিল কাজে লাগিয়ে যে সমস্ত কাজগুলো করা যেতে পারে:

পরিকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা এবং তার সাথে গোষ্ঠীর অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা, কাঁচামাল কেনা ও বাজারজাত করা।

শিশু পরিচর্যার জন্য একবার কাজে লাগানো যেতে পারে, তবে এই টাকায় কাউকে বেতন দেওয়া যাবে না। অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা খরচ হিসাবে দেওয়া যেতে পারে।

ক্রেডিট সোসাইটি তে যে ব্যাক্তি ১২ মাসের জন্য ৫০০ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট রাখতে পেরেছেন, তিনি কিন্তু যে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত শিশুকন্যার বীমার জন্য, স্বামীর জন্য ৩০ টাকা পাবেন, ৭৫০ টাকা ফিক্সড করলে ৩০ টাকা হারে বিমার সুযোগের পাশাপাশি ৬০ টাকা অনুদান পাবেন।

অন্ততপক্ষে একবছর ধরে যদি কাজ করা যায়, এমন গোষ্ঠীগুলির চক্র তহবিলে সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন গোষ্ঠী, এক বছর ধরে রোজগার করছে কিনা তা যাবতীয় হিসাব ও কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হবে।

তবে “স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা (Swarna Jayanti Shahari Rozgar Yojana)”র মধ্যে দিয়ে শহরের সমস্ত দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করা বেকার যুবকদের জীবনযাত্রা অনেকটাই পরিবর্তিত হবে সেটা আশা করা যায়। আগে থেকেই কর্মজীবনের মধ্যে প্রবেশ করলে জীবনযাত্রা যেমন পাল্টে যায়, তেমনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনেক ক্ষেত্রে সুষ্ঠুভাবে করা যেতে পারে।

আর এই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই স্বর্ণ জয়ন্তী শহরি রোজগার যোজনা (Swarna Jayanti Shahari Rozgar Yojana) প্রকল্প টি বাস্তবায়িত করা হয়েছে, যেটা করোনা পরিস্থিতি চলাকালীন বেকার যুবকদের অনেকখানি সহযোগিতা করবে, আশা করা যায়।

Home Click here
Official Website Click here

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top