সারোগেসি কি? বৈধ না অবৈধ? সারোগেসি করার আইনি নিয়ম কি? জানুন

Surrogacy Laws in India: সারোগেসি কি? সারোগেসি বৈধ না অবৈধ? | ভারতে সারোগেসি করার আইনি নিয়ম কি? | কারা করতে পারে সারোগেসি? এর জন্য কিভাবে অনুমতি নিতে হয়? | জানুন সারোগেসি কি এবং সারোগেসির আইনি নয়ম কানুন।

সারোগেসি হল একজন মহিলার সন্তান তাঁর গর্ভে বড় না হয়ে অন্য একজন মহিলার গর্ভে বড় হবে এবং সেই মহিলা সেই বাচ্চার জন্ম দেবেন। এই ব্যবস্থা ইচ্ছা অনুযায়ী হয়ে থাকে অর্থাৎ কোন মহিলা তার নিজের ইচ্ছা অনুসারে এ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

কোনো দম্পতি তাদের সন্তানের জন্য অন্য কোন মহিলাকে নির্বাচন করতে পারেন, যদি সেই দম্পতির মধ্যে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যস্ততা থেকে থাকে বা অন্য কোন কাজের জন্য ব্যস্ততা থেকে থাকে। বাচ্চা জন্ম দেওয়ার জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় না থাকে তাহলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

সারোগেসি কি? বৈধ না অবৈধ? সারোগেসি করার আইনি নিয়ম কি?
সারোগেসি কি? বৈধ না অবৈধ? সারোগেসি করার আইনি নিয়ম কি?

অনেক সময় দেখা যায়, কোন মহিলার শরীরে এমন কোন রোগ হয়েছে যার কারণে সেই রোগ বাচ্চার মধ্যে আসতে পারে, তার জন্য দম্পতির সন্তান অন্য কোন মহিলার গর্ভে বড় হতে পারে।

ভারতের আইন অনুসারে সমস্ত তিন প্রকার সারোগেসি এর অনুমতি রয়েছে:

১) স্ব-ইচ্ছায়।

২) ঐচ্ছিকভাবে।

৩) মেট্রিক বিচার।

ভারতে সারোগেসি বৈধ কি ?

যদি এই প্রশ্ন আসে যে, ভারতে সারোগেসি এই প্রক্রিয়া বৈধ কি না ? তাহলে উত্তর হবে হ্যাঁ, 2002 সাল থেকে ভারতের বাণিজ্যিক ভাবে সারাগেসি আইন রয়েছে কিন্তু এই প্রক্রিয়া এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশে অনিয়মিতই আছে। তাছাড়া সরকার দ্বারা সারোগেসি বিল 2016 অনুসারে এম অন্তিম রূপ দেওয়া হয়েছে।

সারোগেসির উপরে ভারতীয় চিকিৎসা অনুসন্ধান পরিষদ দ্বারা নির্ধারিত দিকনির্দেশক কি ?

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) সারোগেসি প্রক্রিয়া অনিয়মিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় দিকনির্দেশনা নির্ধারিত করা হয়েছে, এক্ষেত্রে সারোগেট মাদার কে অথবা সারোগেট মাকে নিঃসন্তান দম্পতির সাথে অনুবন্ধ হওয়ার পর সই করার অবশ্যই প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, এই অনুবন্ধ এর নিয়ম লঙ্ঘন হলে কি হবে ? এর জন্য কোন রকম শর্ত কিন্তু নেই।

সারোগেসি ব্যবস্থার মধ্যে একটি অনুবন্ধ দ্বারা হাসিল করা যেতে পারে। যার মধ্যে বাচ্চাকে ধারণ করার জন্য সারোগেট মাদার এর সহমতি এবং তার স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যের জন্য সম্মতি প্রয়োজন পড়বে। কৃত্তিম গর্ভবস্থা এর চিকিৎসা প্রক্রিয়ার জন্য আগে থেকে সকল রকমের শর্ত যুক্ত হবে।

বাচ্চার সম্পূর্ণ বিকাশ পর্যন্ত যে সমস্ত খরচা পড়বে সেটা কোনো দম্পতি বহন করবেন এবং বাচ্চার জন্ম পর্যন্ত যা কিছু খরচ হবে সবকিছুই তারা বহন করবেন এবং এটা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে হতে পারে।

একটি সারগেসি ব্যবস্থাতে বাচ্চার জন্ম অথবা ডেলিভারির আগে কমিশন অবশ্যই যুক্ত করতে হবে অথবা ব্যক্তির মৃত্যুর পরিস্থিতিতে সারোগেট বাচ্চার জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করতে হবে অথবা বাবা-মায়ের মধ্যে ডিভোর্স আর পরবর্তীতে সেই বাচ্চার ডেলিভারি নেওয়ার কোনরকম ইচ্ছা যেন না হয়ে থাকে।

সারোগেট মায়ের জন্য সারোগেসি অনুবন্ধ হতে জীবন বীমা কভার এর খেয়াল রাখতে হবে খুবই ভালো ভাবে।

যে মাতা পিতা সারোগেসির মাধ্যমে বাচ্চা নিয়ে থাকেন তাদের মধ্যে যেকোনো একজনকে অবশ্যই দানি হতে হবে। কেননা একটি বাচ্চার সাথে ভালোবাসা আর স্নেহের বন্ধন সম্পূর্ণ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তার সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকারের সমস্যা দেখা যেতে পারে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যখন কোন বাচ্চা দত্তক নেওয়া হয়।

যতই অন্যের মহিলার গর্ভে কোনো দম্পতি তাদের সন্তান সারোগেসির মাধ্যমে নিয়ে থাকেন, তাহলেও বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর সেই বাচ্চার উপর সম্পূর্ণ অধিকার থাকবে সেই দম্পতির অর্থাৎ এতদিন পর্যন্ত যারা খরচ বহন করে এসেছেন।

খরচ বহনকারী যারা তাদের সাথে সাথে সারোগেট মায়ের রক্ষা করা টা অবশ্যই প্রয়োজন।

বিদেশি নাগরিকদের জন্য দিশা নির্দেশ কি ?

বিদেশি দম্পতির জন্য তাদের মধ্যে অবশ্যই বিবাহ সম্পন্ন হতে হবে এবং সারোগেসি শুরু হওয়ার সময় থেকে বিয়ের কম করে দুই বছর পর্যন্ত সময় হতে হবে।

সেই দম্পতিকে একটি স্পষ্ট ভাষায় মন্ত্রণালয়ে আবেদন পত্র জমা দিতে হবে, দূতাবাসের মাধ্যমে। সেই দম্পতিকে কথা দিতে হবে যে, সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া বাচ্চা এবং বাচ্চা গুলোর দেখভাল তারা ভালোভাবে করবেন।

উপায় হিসেবে কেবলমাত্র আই সি এম আর (ICMR) দ্বারা মান্যতা প্রাপ্ত রেজিস্ট্রেশন এয়ার ক্লিনিক যে কোন এক জায়গা থেকে হওয়া টা অবশ্যই প্রয়োজন।

বিদেশি দম্পতি এবং ভারতীয় সারোগেট মা এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের চুক্তিপত্র এবং বোঝাবুঝি হয়ে থাকাটা আগে থেকে জরুরি।

সারোগেট বাচ্চা এবং বাচ্চাদের জন্মের প্রমাণপত্র, পাসপোর্ট এর ফটোকপি আর ও সি আই কার্ড প্রয়োজন পড়বে।

বিদেশি নাগরিকদের জন্য নতুন আপডেট কি আছে ?

ভারত সরকার সবেমাত্র বিদেশি দম্পতি এবং সিঙ্গেল মাতা পিতা হওয়া থেকে শুরু করে একটা বাচ্চার বাবা মা হওয়া পর্যন্ত এর জন্য নতুন নিয়ম জারি করেছে। এরমধ্যে সেই বাচ্চার জন্ম কোন ক্লিনিকে হওয়া এবং বাচ্চার সারোগেট মায়ের সম্পূর্ণরূপে খেয়াল রাখাটা অবশ্যম্ভাবী এই দম্পতির জন্য।

তবে বলা যেতে পারে, সারোগেসির মাধ্যমে ব্যস্ত দম্পতি তাদের সন্তান অন্য কোন মহিলার গর্ভে ধারণ করিয়ে জন্ম দেওয়ার জন্য সমস্ত রকমের খরচ বহন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় আইন অনুসারে সারোগেসি সম্ভব, সেই সমস্ত দম্পতির জন্য যারা বাস্তবে খুবই ব্যস্ত বাচ্চা প্রজননের জন্য, এতটুকুও সময় যাদের হাতে নেই।

তবে এক্ষেত্রে সমস্ত রকম আইনি নিয়ম-কানুন, প্রক্রিয়া মান্য করে সেই বাচ্চার জন্ম সার্টিফিকেট এবং জন্মাবার পর সেই বাচ্চার সমস্ত রকম দায়িত্ব নিতে হবে। তাছাড়া একটা এমাউন্ট সেই সারোগেট মাদার কে প্রদান করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top