সামান্থা রুথ প্রভু কে? কি করেন? কোথায় বাড়ি? জীবনে কিভাবে সফল হয়েছেন? আসুন জেনে নিন সামান্থা রুথ প্রভু এর জীবন পরিচয়, পরিবার, শিক্ষা, মোট ইনকাম, কেরিয়ার, পুরস্কার ও অনান্য বিবরণ জানুন (Samantha Ruth Prabhu Biography in Bengali)।
দক্ষিণ ভারতের তেলেগু ও তামিল চলচ্চিত্র শিল্পে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেন সামান্থা রুথ প্রভু। তাছাড়া দক্ষিণ ভারতের সিনেমা গুলিতে অ্যাকশন, রোমান্স তার সাথে স্টাইলিশ হিরো, সুন্দরী সব নায়িকাদের মেলবন্ধনে সিনেমা গুলি মানুষের মনে দাগ কেটে যায়।
এমনই একজন সুন্দরী অভিনেত্রী তার সাথে মডেল হলেন সামান্থা, যাকে অনেকেই সামান্থা আক্কিনেনি নামেই চেনেন। এছাড়া বলা যায় তাকে চেনেন না এমন মানুষ খুবই কম। ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে বেড়ে উঠেছেন তিনি, ছেলে বেলাতেই মডেলিং এর জন্য অনেকটাই আগ্রহ দেখান।
আর সেই কারণে তিনি এই মডেলিং এর পেশাতে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন, আর ভবিষ্যতে তিনি একজন সফল মডেল হনও। এছাড়া তিনি দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে নিজেকে একজন নেতৃত্বাধীন অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তো চলুন তাহলে এই সামান্থা রুথ প্রভু সম্পর্কে কিছু জানা যাক:
সম্পূর্ণ নাম: | সামান্থা রুথ প্রভু |
জন্ম: | ২৮ এ এপ্রিল ১৯৮৭ |
জন্মস্থান: | চেন্নাই, তামিলনাড়ু, ভারত |
পিতা: | প্রভু |
মাতা: | নিনেটে প্রভু |
জাতীয়তা: | ভারতীয় |
পেশা: | মডেল এবং অভিনেত্রী |
কর্মজীবন: | ২০১০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত |
শিক্ষা: | বি. কম. (B. Com.) |
মাতৃশিক্ষায়তন: | স্টেলা মারিস কলেজ, চেন্নাই |
স্বামীর নাম: | নাগা চৈতন্য (বিবাহ হয়েছিল ২০১৭ সালে এবং তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায় ২০২১ সালে) |
অন্যান্য নাম: | ইয়াসোধা, সামান্থা আক্কিনেনি |
চলুন তার ব্যক্তিগত জীবন:
প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে কিছু টানা পড়ে থাকে। তেমনি সামান্থার জীবনেও এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা কিনা অনেকেরই অজানা, ২০১২ সালের টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাথে এক সাক্ষাৎকার তিনি বলেছেন যে, তিনি গভীরভাবে প্রেমে পড়েছেন এবং তার সম্পর্কে বেশ সন্তুষ্টও।
এবং তিনি আরো বলেন যে, সামান্থার প্রেমিক খুবই কেয়ারিং তিনি এতে খুবই খুশি ছিলেন। তবে বেশিরভাগ সফল ব্যক্তিদের মতো তিনিও কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রকাশ করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি কস্টিউম ডিজাইনার নিরজা কণার একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন।
২০০৫ সালে সামান্থা এবং তার ব্রেকআপের কথা জানা যায়। তারপর জবরদস্ত চলচ্চিত্রের সহশিল্পী সিদ্ধার্থের সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর মত তিনি প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে তারা যদিও তাদের এই সম্পর্ক প্রকাশ করতে স্বীকার করেন নি। তারা প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে যেতেন যেটা কারও নজর এড়িয়ে যায়নি।
এছাড়া ২০১৫ সালের দিকে তিনি আবার তেলেগু সুপারস্টার নাগা চৈতন্যর সাথে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং ২০১৭ সালের ২৯ শে জানুয়ারি তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়, ২০১৭ সালের অক্টোবর ৭ তারিখ এবং ৮ তারিখে তারা যথাক্রমে হিন্দু বিবাহ অনুসারে এবং খ্রিস্টান ধর্ম মতে বিবাহ করেন ভারতের গোয়াতে।
সামান্থা রুথ প্রভুর কিছু আকর্ষণীয় ফটো
এছাড়া চৈতন্য এবং সামান্থার এই বিবাহ বেশি দিন পর্যন্ত টেকেনি। ২ রা অক্টোবর ২০২১ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়। এছাড়া নাগা চৈতন্য এবং সামান্থাকে একসাথে তিনটি চলচ্চিত্রে দেখা গিয়েছে বিবাহ বিচ্ছেদের পর, যেগুলো বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার সাফল্য পেয়েছে।
এছাড়া বলা যায় যে, Ye Maaya Chesave তেলেগু চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি প্রথমবার আত্মপ্রকাশ করেন। এছাড়াও সামান্থা তামিলের অন্যতম সুন্দরী অভিনেত্রী সেটা তে কোন সন্দেহ নেই, তাই না ! তাছাড়া তিনি তার ক্যারিয়ার নিয়ে খুবই সচেতন। তার প্রথম ছবিটি ২০১০ সালে মুক্তি পেয়েছিল। এই ছবিতে তার অভিনয় এতটাই ভালো ছিল যে তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে সেরা নবাগতা অভিনেত্রী হিসেবে পুরস্কার পেয়েছিলেন।
এছাড়া তার সুন্দর, মিষ্টি, মনোরম, হাসি আর অপরূপ সৌন্দর্য সকল মানুষকে অবাক করে। বর্তমানে তার বয়স ত্রিশের কোটা পার করলেও তাকে ষোড়শী বলেই মনে হয়। তার সৌন্দর্য তে মুগ্ধ নন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন।
ক্যারিয়ারে অনেক সংগ্রাম তিনি করেছেন এই ১২ বছরে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তারপরই নিজের জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এ থেকে একটা কথা পরিষ্কার বোঝা যায় যে, সফলতা পেতে গেলে প্রতিনিয়ত পরিশ্রম আর একাগ্রতার প্রয়োজন তো হয়ই।
তবে তার আর নাগা চৈতন্যের বিয়ের চার বছর পর এই যে বিবাহ বিচ্ছেদ আসলে কি কারণে ঘটেছিল তা এখনো পর্যন্ত জানা যায় নি। এছাড়া তিনি অতীত ভুলে গিয়ে ভবিষ্যৎ কেরিয়ারের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, সেটা তাকে দেখলে ভালোভাবেই বোঝা যায়। নিজেকে সবসময় ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করেন, যেটা তাকে যেকোন বাধা বিপদ থেকে সরিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
সামান্থা জন্মগত ভাবে খ্রিস্টান, প্রথম দিকে সামান্থা আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। মডেলিং দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। পার্ট টাইম জবও করে রোজগার করতে থাকেন এবং নিজের সমস্ত রকম দৈনন্দিন চাহিদা গুলি পূরণ করার চেষ্টা করেন। জনপ্রিয় পরিচালক এবং সিনেমাটোগ্রাফার এম আর রবি বর্মনের নজরে তিনি পড়েছিলেন, যেটা বর্তমানে তাকে এই চলচ্চিত্র জগতে সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
কথায় আছে জীবনে কোন উন্নতি পেতে গেলে কারো না কারো সাহায্যের হাতের প্রয়োজন হয়, তাই এক্ষেত্রে এই পরিচালক এবং সিনেমাটোগ্রাফার সামান্থাকে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচয় করিয়ে দেন এবং সামান্থা সর্বপ্রথম অভিনয় জগতে পা রাখেন ২০১০ সালে। তারপর থেকে আর তাঁকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সামাজিক কাজও করেছেন যা কিনা সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিয়েছে।
এছাড়া বলা যায় তার জীবনের সাথে জড়িয়ে রয়েছে একটি এনজিও (NGO) যার নাম প্রত্যুষা সাপোর্ট। এটি একটি এমন এনজিও যেখানে শিশু ও মহিলাদের চিকিৎসা সেবা করা হয়। সামান্থার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে বলতে গেলে, নাগা চৈতন্যর সঙ্গে ডেটিং এবং বিয়ে করার আগে তার নাম রং দে বাসন্তী সিনেমা খ্যাত সিদ্ধার্থের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। তবে সেই সম্পর্কও বেশিদিন টেকেনি, ব্রেকআপ হয়েছিল খুবই অল্প সময়ের মধ্যে।
তবে যাই বলা যাক না কেন, তার সেই প্রথম আর্থিক অনটনের দিন থেকে আজকের বর্তমানে তার এই সফলতার দিন পর্যন্ত তার যে এই কঠিন জার্নিটা অনেক মানুষের অনুপ্রেরণা হতে পারে। তাছাড়া যে কোনো সিনেমাতে তিনি তার চরিত্রকে এতটাই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলেন যে দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়, কি তাই তো ! তাছাড়া তার মেধহীন শরীর, সুন্দর ত্বক আর সৌন্দর্য নিয়ে অনেক মেয়েদের কৌতুহল থাকেই।
তাছাড়া অনেক মেয়েরাই সামান্থার ডায়েট প্লান ও ফলো করেন। এই ১২ বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে তিনি যে সফল, তা তাঁর সিনেমা গুলি দেখলে ভালোভাবেই বোঝা যায়। তাছাড়া তিনি একজন সুন্দরী সফল অভিনেত্রী ছাড়াও একজন দক্ষ মডেলও বলা যায়।
সামান্থার আপকামিং মুভি (Upcoming Movie):
তার আপকামিং মুভির মধ্যে রয়েছে যশোদা (Yashoda, 08 Oct 2022), শকুন্তলম (Shaakuntalam, 13 Aug 2022), খুশি (Khushi, 23 Dec 2022)। সামান্থার ফ্যান যারা রয়েছেন তাদের কাছে এই মুভিগুলি খুবই উৎসাহের কারণ হবে।
তাছাড়া শকুন্তলম মুভিতে তাকে শকুন্তলার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে, সুন্দরী সামান্থা কে শকুন্তলা রূপে কতটা মানানসই লাগবে, সেটা ট্রেইলার ও মুভি রিলিজ হওয়ার পরেই জানা যাবে। তবে তিনি যে সমস্ত চরিত্রে সুনিপুণভাবে দক্ষতার সাথে অভিনয় করেন তাতে কিন্তু কোনো সন্দেহ নেই।