সুরক্ষিত ভাবে বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে লোন দেওয়ার আইন কানুন

How to give loan to my friend in Bengali: বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে টাকা লেনদেন হয়েই থাকে কিন্তু অনেক সময় এই টাকা অশান্তির কারণ হয়ে দাড়াই। জেনে নিন বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে লোন নেওয়া দেওয়ার আইন নিয়ম ও কানুন যা সুরক্ষিত।

খারাপ পরিস্থিতি সকলের জীবনে কমবেশি এসেই থাকে। তার জন্য একজন ব্যক্তি কোথাও না কোথাও থেকে টাকা ধার নিয়ে সেই খারাপ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উপায় খুঁজে পান।

সেটা হতে পারে কোনও বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে টাকা ধার নেওয়া, যার মধ্যে দিয়ে কোন এমার্জেন্সি কাজ করা যেতে পারে এবং তার সাথে অনেক কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা যেতে পারে খুবই সহজ ভাবে।

এছাড়া ভারতে অসুবিধার কারণে চেনা পরিচিত মানুষের কাছ থেকে, বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে টাকা ধার নেওয়ার রীতি অনেকদিন আগে থেকে চলে আসছে বলা যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই অনেকের সাহায্য করে থাকেন, সেটা ব্যক্তিগত কোনো কারণ হতে পারে অথবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

সুরক্ষিত ভাবে বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে লোন দেওয়ার আইন কানুন
সুরক্ষিত ভাবে বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে লোন দেওয়ার আইন কানুন

এছাড়া পরিবারের সদস্য অথবা কোন বন্ধু বান্ধবের যদি ধার দেওয়া হয় টাকা-পয়সা, সে ক্ষেত্রে সাধারণত এই ঋণ অথবা ধার অসুরক্ষিত হিসাবে মনে করা হয়। তার সাথে সাথে এখানে কোনো রকম কাগজপত্র করার আবশ্যিকতা প্রয়োজন মনে করেন না অনেকেই।

তার জন্য সেই টাকা ফেরত পাওয়ার সময় বেশ অনেকটা সমস্যা তৈরি হয়, আর বলতে গেলে যদি সেই টাকা কোনো ভাবেই পরিশোধ করা না হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু সম্পর্ক বেশ খারাপ দিকে গিয়ে থাকে। কেননা টাকা-পয়সার মামলাতে সম্পর্ক অনেকখানি তিক্ত হয়ে ওঠে।

এছাড়াও এমন ঋণ সাধারণত সুদ মুক্ত হয়ে থাকে। এর মানে হল আপনি যে টাকা ধার হিসেবে দিচ্ছেন, সেটা যদি না পেয়ে থাকেন, তাহলে সম্পূর্ণ টাকাটাই আপনার জলে চলে গেল, তাই নয় কি !

এবার জানা যাক, কোনো রকম আইনি কাগজপত্র আছে কি ? যার মধ্যে দিয়ে আপনি কোন বন্ধুবান্ধবের কাছে টাকা ধার দিয়ে নিয়ম অনুসারে, শর্ত অনুযায়ী স্পষ্ট ভাষায় এই বিষয়টি ব্যক্ত করতে পারেন ?

এমন করার জন্য দুটি পদ্ধতি রয়েছে:-

প্রমিসরি নোট যে ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে তারপর ভর পাই করার একটি লিখিত প্রতিশ্রুতি হয়ে থাকে। যেখানে একজন পার্টি অপর পার্টি ধার নেওয়া টাকা পরিশোধ করার জন্য নিশ্চিত করে থাকেন, নির্ধারিত সময় অথবা কোন বিশিষ্ট শর্তের ওপর ভিত্তি করে। সেখানে লিখিত ভাবে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা থাকে এই সমস্ত বিষয়।

আর যদি এই বিষয়টাকে খুবই সহজ সরল করতে চান, শুধু কেবলমাত্র রেকর্ডের জন্য প্রমিসরি নোট এর জন্য যেতে পারেন। এই উপকরণ ইন্সট্রুমেন্টস অধিনিয়ম 1881 অনুসারে ধারা 4 অনুযায়ী এই নিয়ম আসে এবার সেখানে যে ব্যাক্তি ধার নিয়েছেন সেই ব্যক্তির সই এর প্রয়োজন পড়বে।

বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কোন সদস্যের মধ্যে যদি ঋণ দিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে সেই ঋণের সুদ অথবা ট্যাক্স কি হতে পারে?

সাধারণত কোন বন্ধুবান্ধবের মধ্যে এবং পরিবারের কোন সদস্যের মধ্যে যদি আপনি টাকা ধার দিয়ে থাকেন, তাহলে সব সময়ের জন্য এই বিষয়টা সামনে আসে যে, সেখানে কোনো রকম সুদ অথবা ট্যাক্স প্রয়োজন পড়ে না।

কিন্তু যদি আপনি এক্ষেত্রে শুধু ধার্য করে থাকেন একটা সময় সীমা পর্যন্ত সেখানে এই অতিরিক্ত সুদের আয় আপনাকে আয়কর রিটার্ন এ দেখাতে হবে অবশ্যই।

যদি আপনি ঘর তৈরি করার জন্য নিজের বন্ধু-বান্ধবদের বা আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা পয়সা ধার নিয়ে থাকেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে যখন টাকা শোধ করবেন তখন কিন্তু সুদ এর কোন প্রয়োজন পড়বে না।

মূল টাকাটা ধারা 80 C অনুসারে সুদের অনুমতি দেয় না। কিন্তু আয়কর অধিনিয়ম এর ধারা 24 অনুসারে ঋণের উপর সুদের সম্বন্ধে ট্যাক্স এর রূপে লাভ এর দাবি করা যেতে পারে।

পরিবারের সদস্য দের থেকে কোনরকম ধার নেওয়া টাকার উপরে সুদ নেওয়া যোগ্য বলে মনে করা হয় না। কিন্তু বেশ কয়েক বছরের উপর ৫০ হাজার টাকার বেশি টাকা যদি ধার নেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে সুদ যোগ্য বলে মনে করা হয়। এছাড়া যদি এই ঋণ সুদযুক্ত অথবা সুদবিহীন হয়ে থাকে তাহলে এটি ট্যাক্স মুক্ত হয়ে যায়।

বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে টাকা পয়সা ধার নেওয়া এবং ধার দেওয়ার সময়ে কোন কোন বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে?

কথায় আছে সাবধানতার জুড়ি মেলা ভার। কেননা যে ব্যাক্তি সাবধানতা অবলম্বন করেন, সেই ব্যক্তি বিপদে খুবই কম পড়েন। তাই এক্ষেত্রে সেটাও কিন্তু বেশ ভালোভাবে প্রযোজ্য।

যদি আপনি টাকা ধার দেওয়ার সময় অথবা ধার নেওয়ার সময় বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করেন তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে অনায়াসেই।

  • সমস্ত ঋণ এর লেনদেন ব্যাংক ড্রাফট দ্বারা অবশ্যই হতে হবে।
  • যদি আপনি ঋণ দিয়ে থাকেন যেটা কিনা সম্পূর্ণ রূপে সুদ মুক্ত, সে ক্ষেত্রে সুনিশ্চিত করতে হবে যে, এই ঋণ আপনি এই টাকাটা বাঁচানোর জন্য দিয়েছেন এবং যে ব্যক্তির ঋণ নিচ্ছেন তিনি কিন্তু সম্পূর্ণ রূপে সুদ মুক্ত হিসেবে নিচ্ছেন। এমনটা সম্পূর্ণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
  • আপনি যে ব্যক্তিকে ঋণ দেবেন সেই ব্যক্তি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধ্যান ধারণা থাকাটা প্রয়োজন।
  • আপনি তাকে কতটা ভালোভাবে চেনেন এবং তিনি কেমন ধরনের মানুষ সেটাও কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এই বিষয়ের উপরে নির্ভর করে।
  • তাহলে আপনার টাকাটা আপনি অনায়াসে ফেরত পেতে পারেন খুবই কম সময়ের মধ্যে অথবা যে সময় সীমা দিয়েছেন, সেই সময় সীমার মধ্যে।

তো পরবর্তীতে যখন আপনি কোন ব্যক্তিকে টাকা ধার দেবেন, সেটা হতে পারে কোন বন্ধু-বান্ধব অথবা পরিবারের কোনো সদস্য, আত্মীয়-স্বজন। সে ক্ষেত্রে এই সমস্ত সাবধানতা অবলম্বন করুন।

তাহলে আপনার কষ্টের উপার্জন কখনোই জলে যাবে না। তবে হ্যাঁ, ঋণ দেওয়ার আগে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। না হলে পরবর্তীতে অনেক বড় সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top