টোল ট্যাক্স কি? ভারতে টোল ট্যাক্স এবং আইনি নিয়ম জানুন

Rules of Toll Tax of India in Bengali: টোল প্লাজা কি? এবং টোল ট্যাক্স কি? ভারতের টোল ট্যাক্স এর নিয়ম | টোল ট্যাক্স নিয়ে কি সঠিক আইনি নিয়ম জানেন? ভারতের রাস্তায় টোল ট্যাক্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন, এই আইনি নিয়ম জানলে ভারতের টোল প্লাজাতে কখনো অসুবিধা হবে না।

টোল ট্যাক্স কি? ভারতে টোল ট্যাক্স এবং আইনি নিয়ম জানুন
টোল ট্যাক্স কি? ভারতে টোল ট্যাক্স এবং আইনি নিয়ম জানুন

দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রতিটি বিষয়ের উপর বিশেষভাবে খেয়াল রাখাটা জরুরি। তেমনি কর অথবা ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদেরকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। তেমনি একটি ট্যাক্স হল টোল প্লাজা ট্যাক্স।

টোল প্লাজা কি?

একটি টোল প্লাজা এমন একটি জায়গা, যেখানে গাড়ির ড্রাইভার একটি নিশ্চিত রাস্তা ব্যবহার করার জন্য সেখানে একটি অ্যামাউন্ট এর টাকা ট্যাক্স হিসেবে দিতে হয় এবং তার জন্য সেখানে গাড়িটিকে থামাতে হয়। অধিকাংশ মানুষ এটাই জানেন যে, রাজ্যের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় এমন টোল প্লাজা রয়েছে।

যেটা ভারত সরকার দ্বারা গাড়ি চালকদের থেকে কিছু টাকা ট্যাক্স হিসেবে নিয়ে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজে লাগানো হয়, তাছাড়া রাজ্যের আরো অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সম্পন্ন করার জন্য এই ট্যাক্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।

টোল ট্যাক্স কি?

অধিকাংশ রাজ্যে রাজপথ / হাইওয়ে এর উপর সরকার দ্বারা একটি সুনিশ্চিত করা হয়ে থাকে যে, রাজপথে রক্ষণাবেক্ষণ এবং আরো অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ কর্মের জন্য কিছু ট্যাক্স ধার্য করা হয়।

যে সমস্ত রাস্তা রাজ্যের সাথে অন্য রাজ্যের এবং একটি শহর থেকে আরেকটি শহরের সংযোগ স্থাপন করে। তাছাড়া এটি সম্পূর্ণ দেশে একে অপরের সাথে যোগাযোগ সম্পন্ন করার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলতে পারেন।

টোল ট্যাক্স এমন একটি মেট্রিক অ্যামাউন্ট যা কিনা ভারতে এক্সপ্রেস ওয়ে অথবা রাজপথ ব্যবহার করার সময় গাড়ির চালককে অথবা ড্রাইভার এর একটি অ্যামাউন্ট ভরার অবশ্যই প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

খুবই ভালো কানেক্টিভিটি আর রাস্তাতে সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য এই রাজপথ নির্মাণ করার জন্য সরকারের থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা খরচ করা হয়ে থাকে। সেই অনুসারে গাড়ির চালকদের কাছ থেকে এই সড়ক ব্যবহার করা ব্যাক্তিদের থেকে টোল ট্যাক্স আদায় করা হয় এই টোল প্লাজা ট্যাক্স এর মাধ্যমে।

ভারতের টোল ট্যাক্স এর নিয়ম কি?

এমন অনেক রাস্তা রয়েছে যা কিনা আপনার গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে অনেকটাই সুযোগ সুবিধা করে দিতে পারে। আর সেই সময় রাস্তায় টোল প্লাজা তে আপনি যে টাকাটা দিচ্ছেন সেটাই কিন্তু টোল ট্যাক্স হিসাবে ধরা হয়।

ভারতে টোল ট্যাক্স এর পরিমান বিভিন্ন রাস্তায় অথবা রাজপথ থেকে রাজপথে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এই টোল ট্যাক্স এর সময় টোল প্লাজা তে ব্যস্ততম সময়ে লাইনে অনেকগুলি যানবাহন অথবা গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। আর এই গাড়ির সংখ্যা সম্বন্ধিত বিষয়টিও কিন্তু টোল প্লাজা নিয়মের মধ্যেই পড়ে।

ভারতের কিছু টোলপ্লাজা নিয়ম নিচে দেওয়া হল:

১) যানবাহন: ব্যস্ততা পূর্ণ যাতায়াতের মাধ্যমে ঘন্টা হিসাবে প্রতি টোল বুথ লাইনে  কেবলমাত্র ৬ টি অথবা ৬ টির কম যানবাহন লাইনে থাকতে হবে।

২) টোল বুথ: পর্যাপ্ত পরিমান টোল বুথ অথবা টোল লাইন জরুরী। যাতে যানবাহনকে এর জন্য খুবই সুবিধাজনক হয়ে থাকে, আর একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই যানবাহন কে ১০ সেকেন্ডের বেশি অপেক্ষা করতে হবে না।

৩) টোল লাইন এ বৃদ্ধি: যানবাহন অথবা উপযোগ কর তাদের জন্য অধিকতম প্রতীক্ষার সময় তিন মিনিটের বেশি যদি হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে টোল লাইন বাড়ানো অবশ্যই প্রয়োজন।

সরকার টোল নিয়ম জনসাধারণের উপরে ট্যাক্স না বাড়িয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণ আর এরকম আরো বড় রাজপথ এর রক্ষণাবেক্ষণ এর অনুমতি দিয়ে থাকে। এটি একটি সামান্য কথাও বলতে পারেন। যেখানে টোল ট্যাক্স এর মাধ্যমে নির্মাণ করা রাস্তার সম্পূর্ণ খরচ আদায় করা হয়ে যায়।

টোল ট্যাক্স এর বিষয়ে কাদের ছাড় রয়েছে ?

এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছেন, বিশেষ করে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যাদের সম্পূর্ণ দেশে টোল ট্যাক্স থেকে মুক্ত করা হয়েছে অথবা টোল ট্যাক্স এর ক্ষেত্রে তাদের ছাড় রয়েছে।

  • ভারতের রাষ্ট্রপতি
  • ভারতের প্রধানমন্ত্রী
  • ভারতের উপরাষ্ট্রপতি
  • ভারতের প্রধান বিচারপতি
  • ভারতের যে কোন রাজ্যের রাজ্যপাল
  • সংঘের ক্যাবিনেট মন্ত্রী
  • সংসদের সদস্য
  • রাজ্য মন্ত্রী
  • ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত প্রদেশ এর উপরাজ্যপাল
  • উচ্চ বিচারালয়ের বিচারপতি
  • বিধানসভার অধ্যক্ষ, ভারতের যে কোন রাজ্যের হতে পারে।
  • চিফ অফ স্টাফ
  • যে কোন রাজ্যের বিধান পরিষদের অধ্যক্ষ
  • রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিব
  • রাজকীয় যাত্রাতে বিদেশি গণ্যমান্য ব্যক্তি
  • সেনা কমান্ডার
  • লোকসভার অধ্যক্ষ
  • রাজ্যের সীমানা পরিষদের সদস্য
  • সচিব, লোকসভা
  • ভারত সরকারের সচিব
  • যে কোন রাজ্যের বিধানসভার সদস্য
  • সচিব, রাজ্য পরিষদ।

নিম্নলিখিত মান্যতার সাথে পুরস্কার বিজেতা:

  • পরম বীর চক্র
  • অশোক চক্র
  • মহাবীর চক্র
  • কীর্তি চক্র
  • বীর চক্র
  • সৌর্য চক্র।

উপরের এই সমস্ত ছাড় ছাড়াও এমন কিছু যানবাহন রয়েছে সেই যানবাহনের ক্ষেত্রে টোল ট্যাক্স ছাড় রয়েছে, সেগুলি হল:-

  • অ্যাম্বুলেন্স এর রূপে ব্যবহার করা যানবাহন।
  • মন্ত্রণালয়ের অধীন অথবা তার সাথে থাকা সমস্ত যানবাহন, এর মধ্যে সেই সমস্ত মানুষ শামিল থাকবেন, যা কিনা ভারতীয়র প্রয়োজনীয় 1901 প্রধান অনুসারে টোল ট্যাক্স এর ক্ষেত্রে ছাড় পেতে পারেন, (সেনা এবং বায়ু সেনা)
  • কেন্দ্রীয় আর রাজ্য সশস্ত্র ক্ষমতা, অবশ্যই উর্দি তে।
  • ভারতীয় রাষ্ট্রীয় রাজপথ প্রাধিকরণ এর সম্বন্ধিত যানবাহন।
  • একজন কার্যকারী ম্যাজিস্ট্রেট।
  • রাজপথ নির্মাণ সংরক্ষণ এর জন্য যেকোনো সরকারি এজেন্সি অথবা সংগঠন সম্বন্ধিত যানবাহন।
  • ফায়ার ব্রিগেডের যানবাহন।
  • সমস্ত রকম পুলিশ যানবাহন।
  • শেষকৃত্য করার জন্য যে সমস্ত যানবাহন ব্যবহার করা হয় সেই যানবাহনে ক্ষেত্রে টোল ট্যাক্স ছাড় রয়েছে।

সমস্ত টোল প্লাজাতে একটি ডিসপ্লে বোর্ড লাগানো হয়েছে, যাতে এই টোল ট্যাক্স এর ট্যাক্স থেকে যারা ছাড় পাবেন, সেই সমস্ত ব্যক্তি এবং গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উল্লেখ রয়েছে সেখানে।

ফাস্ট্রেক (Fastrack):

ফাস্ট্রেক হল খুবই কম সময়ের মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে দিয়ে টোল ট্যাক্স এর শুল্ক এর ভর পাই করার জন্য সহযোগিতা করে থাকে। এর মধ্যে দিয়ে টোল প্লাজা ট্যাক্স এর অ্যামাউন্ট নেওয়ার জন্য সমস্ত রকম সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

খুবই কম সময়ের মধ্যে ভারত সরকার অনিবার্য করেছে যে, রাষ্ট্রীয় রাজপথে টোল প্লাজা কে ইলেকট্রনিক্স হিসাবে ব্যবহৃত করার, আর ফাসটেক কে অনিবার্য করা হয়েছে।

এর মানে হলো টোল প্লাজা থেকে যাতায়াতের জন্য সমস্ত রকম যানবাহনকে অনিবার্য রূপে ফাস্ট্রেক এর ব্যবহার করে নিজের টোল টেক্স ভরতে হবেই।

নিজের ফাস্ট্রেক প্রাপ্ত করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি প্রয়োজন হতে পারে:

  • ফাস্ট্রেক এর জন্য সম্পূর্ণরূপে ফিলাপ করা আবেদন পত্র।
  • আপনার যানবাহনের একটি রেজিস্ট্রেশনের প্রমাণপত্র আর
  • পরিচয় পত্র হিসেবে:- আধার কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, প্যান কার্ড, ইত্যাদি।

রাজপথ প্রাধিকরণ এর নতুন নিয়ম, টোল প্লাজা নিয়ে:

১) প্রথমত এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যে, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রতিটি যানবাহনকে ১০ সেকেন্ডের বেশি যেন প্রতীক্ষা করতে না হয়।

২) যদি কোনো যানবাহন কে ১০০ মিটারের বেশি প্রতিক্ষার  সময় দেয়া হয়, তাহলে সেই যানবাহনকে কোনরকম টোল ট্যাক্স না নিয়েই ছেড়ে দেওয়া হবে।

৩) টোল লাইন বুথ থেকে ১০০ মিটার এর দূরত্ব বজায় রেখে হলুদ লাইন অঙ্কন করা হবে, যাতে এটা জানা যাবে যে, প্রতীক্ষারত যানবাহনের লাইন ১০০ মিটার পর্যন্ত আছে, কি নেই। আর যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে যানবাহন কে ছেড়ে দেয়া হবে।

এই ক্ষেত্রে এক জন উকিল কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারেন ?

যদি আপনার সাথে টোল প্লাজা তে কোন রকম অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে আপনি আর টি আই অথবা সূচনার অধিকার দায়ের করতে পারেন অথবা যদি করতে চান, তাহলে এ বিষয়ে ভালভাবে বোঝার জন্য একজন উকিলের কাছ থেকে পরামর্শ নিতেই পারেন।

একজন উকিল আপনাকে সমস্ত রকম নিয়ম, বে-নিয়ম এর মধ্যে দিয়ে এ বিষয়ে আপনাকে সহজ ভাবে বোঝাতে পারবেন। তার সাথে সাথে আইনি বিষয় এবং আদালতের আদেশ এর ব্যাখ্যা খুবই ভালভাবে দিতে পারবেন, তাই এ বিষয়ে একজন দক্ষ উকিলের পরামর্শ নিতে পারেন এবং সহযোগিতা নিতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top