রানী লক্ষ্মীবাঈ জীবনী 2023 – ইতিহাস, পরিবার এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াই

রানী লক্ষ্মীবাঈ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? রানী লক্ষ্মীবাঈ কিভাবে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন? ওনার বাবা-মা কে? ওনার জীবন কেমন ছিল? এছাড়াও রানী লক্ষ্মীবাঈ সম্পর্কে জানা-অজানা তথ্য জানুন (Biography of Rani Lakshmibai in Bengali)।

ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ, যার নাম ছোট থেকে বড় সকলেই জানবেন। একজন বীরাঙ্গনা, বলতে গেলে তিনি রানী হওয়ার পাশাপাশি ভারতবর্ষের ইতিহাসে বিপ্লবী নেত্রী হিসেবে চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে রয়ে গিয়েছেন। এছাড়াও তিনি “ঝাঁসির রানী” অথবা “ঝাঁসি কি রানী (Rani of Jhansi)” হিসেবেও সর্বসাধারণের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত।

ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ জীবন পরিচয় - Rani Lakshmibai Biography in Bengali
ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ জীবন পরিচয় – Rani Lakshmibai Biography in Bengali

তা সেই পিঠে নিজের শিশু পুত্রকে বেঁধে নিয়ে ঘোড়ার পিঠে উঠে যুদ্ধ করা বিষয়টি খুবই রোমাঞ্চকর বলে মনে হয়, তাই না ! ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের অন্যতম প্রতিমূর্তি ও পথিকৃৎ হয়ে রয়েছেন তিনি রানী লক্ষ্মীবাঈ,  ঝাঁসি ভারতের উত্তরাংশে অবস্থিত।

একজন রানীর জীবন কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং দায়িত্বপূর্ণ হতে পারে এই ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ কে দেখলেই বোঝা যায়। তিনি কিন্তু প্রথম থেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধের সাজ পরে অস্ত্র চলনা করতে খুবই ভালোবাসতেন, তার জন্য অস্ত্র চলনা শিখেছিলেন বিশেষভাবে। তো চলুন এমন এক বীরাঙ্গনা নারীর জীবন সম্পর্কে জানা যাক: 

ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ জীবন পরিচয়:

  • নাম: মনিকর্নিকা তবে তিনি লক্ষ্মীবাঈ হিসেবে পরিচিতা
  • জন্ম: ১৯ শে নভেম্বর ১৮২৮, কাশী, বারানসি, ব্রিটিশ ভারত
  • জাতীয়তা: ব্রিটিশ ভারতীয়
  • অন্যান্য নাম: ছাবিলী, মনু, বাই সাহেব, রানী লক্ষ্মীবাঈ
  • পেশা: তিনি রানী ছিলেন একাধারে শাসক
  • পরিচিতির কারণ: ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহে ভূমিকা নেওয়া, গোয়ালিয়ার দখল করা,
  • পূর্বসূরী: রানী রামা বাঈ
  • উত্তরসূরী: ঝাঁসি তে ব্রিটিশ শাসন
  • স্বামীর নাম: গঙ্গাধর রাও নিওয়াকর
  • উপাধি: মহারানী, রানী
  • রানীর সন্তান: দামোদর রাও, আনন্দ রাও
  • পিতার নাম: মরুপান্ত তাম্বে
  • মায়ের নাম: ভাগীরথী বাঈ তাম্বে।

রানী লক্ষ্মীবাঈ এর জন্ম এবং শৈশব জীবন: 

রানি লক্ষ্মীবাঈ ১৯ শে নভেম্বর ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের কাশি, বারানসি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম ছিল মানিকর্নিকা তাম্বে, বাবার নাম ছিল মরু পান্ত তাম্বে এবং মা ছিলেন ভাগীরথী বাঈ তাম্বে। চার বছর বয়সে তিনি তার মাকে হারান। পারিবারিক পরিবেশে বাড়িতেই শিক্ষা লাভ শুরু করেন রানী লক্ষ্মীবাঈ। মিটুনের পেশোয়া আদালতে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন তার পিতা।

সেখানে পরবর্তী তে নিজের কন্যাকে মনের মতো করে গড়ে তুলতে থাকেন। রানী লক্ষ্মীবাঈ এর পিতা সেখানে লক্ষ্মীবাঈ কে ছাবিলি নামে ডাকতেন, পেশোয়া তে যার অর্থ হল ক্রীড়া প্রেম সুন্দরী কন্যা। আর তিনি সত্যিই খেলাধুলা করতে খুবই পছন্দ করতেন তার সাথে যুদ্ধবিদ্যা ও শিখেছিলেন।

পিতা যখন কোর্টের কাজ কর্মে জড়িত থাকতেন তখন রানী লক্ষ্মীবাঈ ঐ সময়ে অধিকাংশ নারীদের তুলনায় বেশি স্বাধীনতা ভোগ করতে পেরেছিলেন। আত্মরক্ষামূলক  শিক্ষা লাভের পাশাপাশি ঘোড়া চালানো, আর্চারী শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি তার বান্ধবীদেরকে নিয়ে নিজস্ব একটি বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। আর এই নারী বাহিনী তার পরবর্তীতে অনেকখানি সহযোগিতা করেছিল।

রানী লক্ষ্মীবাঈ এর ব্যক্তিগত জীবন: 

এছাড়াও তিনি যখন তরুণী হয়ে উঠলেন তখন ১৮৪২ সালে ঝাঁসির মহারাজা গঙ্গাধরাও নিওয়াকর এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েন। রানী লক্ষ্মীবাঈ এখানে এভাবেই তিনি কিন্তু ঝাঁসির রানী হিসেবে পরিচিত লাভ করেন অর্থাৎ বিয়ের পর থেকে তিনি তার আসল নাম পরিবর্তন করে লক্ষ্মীবাঈ রেখেছিলেন।

১৮৫১ সালে তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়, তার নাম রাখা হয় দামোদর রাও, চার মাস পর সে সন্তানটি মারা যায়। তবে ইতিহাস অনুসারে জানা যায় যে, সেই দামোদর রাও কে কোনভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার পর আনন্দ রাও কে দত্তক নেন। আনন্দ রাও ছিলেন গঙ্গাধর রাওয়ের জ্যাঠাতো ভাইয়ের ছেলে।

রাজা তার পুত্রের মৃত্যুর রহস্য কখনোই উদঘাটন করতে পারেননি, সর্বদাই সেই চিন্তা তাঁকে তিলে তিলে শেষ করে দিয়েছে। ঝাঁসির মহারাজা গঙ্গাধর রাও ২১ শে নভেম্বর ১৮৫৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। সন্তান শোক, স্বামী শোক সবকিছু সহ্য করে ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ হয়ে ওঠেন আরো বেশি কঠোর।

ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ কে ঝাঁসির কেল্লা পরিত্যাগ করার আদেশ: 

আনন্দ রাও কে দত্তক নেওয়ার জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি দখল করার শর্তবিলোপ নীতির কারণে তার সিংহাসন আরোহণে প্রতিবন্ধকতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ডালহৌসি জানান যে ঝাঁসির সিংহাসনের প্রকৃত উত্তরাধিকারী কেউ নেই এবং ঝাঁসিকে কোম্পানির নিয়ন্ত্রনাধীনে নেওয়া হবে।

আর সেই হিসেবে মার্চ মাসে ১৮৫৪ সালে ঝাঁসির রানী নামে বার্ষিক যে ষাট হাজার (৬০,০০০) ভারতীয় রুপি ভাতা হিসেবে মঞ্জুর করা হয় এবং ঝাঁসির কেল্লা পরিত্যাগ করার জন্য রানীকে আদেশ দেওয়া হয়।

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ তে রানী লক্ষ্মীবাঈ: 

১৮৫৭ সাল মে মাসের ১০ তারিখ, ভারতীয় বিদ্রোহের সূচনা ঘটে। চারিদিকে এমনই গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, লি ইনফিল্ড রাইফেলের আচ্ছাদনে শূকরের মাংস এবং গরুর চর্বি ব্যবহার করা হয়। এরপরও ব্রিটিশ শাসক দল রা শূকরের মাংস এবং গরুর চর্বির ব্যবহার অব্যাহত রাখে।

তার সাথে এটাও বলা হয় যে, যারা এই রাইফেল ব্যবহার করতে অসম্মতি জানাবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং আদেশ অমান্যকারী দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও শুরু করে দেয় ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সিপাহীরা। অনেক ব্রিটিশ সৈন্যসহ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের কেও হত্যা করে।

আর ঠিক এই সময়ে রানী লক্ষ্মীবাঈ তার বাহিনীকে নিরাপদে ও অক্ষত অবস্থায় ঝাঁসি ত্যাগ করাতে পেরেছিলেন। সমস্ত ভারত বর্ষ ব্যাপী প্রবল গণ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আর এমনই মুহূর্তে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ অন্যত্র মনোযোগের চেষ্টা চালায়। রানী ঝাঁসি ত্যাগ করেন তার নেতৃত্বে ঝাঁসি তে শান্ত ও শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় ছিল।

ঝাঁসি এবং লক্ষ্মীবাঈ কে মুক্ত করতে ২০ হাজার সৈনিকের নিজস্ব একটি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তখনকার অন্যতম বিদ্রোহী নেতা তাঁতীয়া টোপি। খুবই কম সৈনিক থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র, ১,৫৪০ জন সৈনিক থাকা সত্ত্বেও ব্রিটিশ সৈন্য অবরোধ ভাঙতে পারেননি।

লক্ষ্মী বাঈ এর নিজস্ব বাহিনী ও আক্রমণ সহ্য করতে পারিনি। আক্রমণের তিনদিন পর ব্রিটিশ সৈন্যদল দুর্গের দেয়ালে ফাটল ধরায় এবং ঝাঁসির শহরটি একেবারে ধ্বংস করে দেয় তার উপরে দখল করে নেয়।

কিন্তু সন্তান সহ এই ঘটনার একদিন আগেই একটি রাতে দুর্গের দেয়াল থেকে লাফ দিয়ে রানী লক্ষ্মীবাঈ প্রাণ রক্ষা করেন। ওই সময় তাকে ঘিরে রেখেছিল তার নিজস্ব একটি দল যার অধিকাংশই ছিল নারী সদস্য।

দত্তক নেওয়া পুত্র সন্তান আনন্দ রাওকে সাথে নিয়ে রানী লক্ষ্মীবাঈ তার বাহিনী  গিয়ে বাণিজ্যিক বিনিয়োগের উর্বর ক্ষেত্র কালপি তে যান। সেখানে রানী লক্ষ্মীবাঈ এবং তাঁতীয়া টোপি গোয়ালিয়র এর দিকে রওনা দেন। সেখানে তাদের যৌথ বাহিনী গোয়ালিয়রের মহারাজার দল কে পরাজিত করে।

এরপর পরাজিত বাহিনীর সদস্যরা পরবর্তীতে যৌথ বাহিনীর সাথে এক হয়ে যায়। তারপর কৌশলগত অবস্থানে থাকা গোয়ালিয়রের কেল্লা দখল করে রানী লক্ষ্মীবাঈ এবং তাঁতীয়া টোপীর সম্মিলিত বাহিনী। তবে যুদ্ধ শেষে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের পক্ষে জেনারেল হিউজ রোজ তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে,

“রানী তার সহজাত সৌন্দর্য, চতুরতা এবং অসাধারণ অধ্যবসয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। এছাড়াও তিনি বিদ্রোহী সকল নেতা-নেত্রী দের তুলনায় সবচেয়ে বিপদজনক ছিলেন।”

রানী লক্ষ্মীবাঈয়ের চিরস্মরণীয় কীর্তিগাঁথা: 

রানী লক্ষ্মীবাঈ ভারতবর্ষের জাতীয় বীরঙ্গনা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান। তাকে ভারতীয় রমণীদের সাহসী প্রতিক ও প্রতিকল্প হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রথম নারী দলের নামকরণ করেন রানী লক্ষ্মীবাঈ কে স্মরণ করে।

সত্যিই তিনি কিন্তু ছিলেন নারী শক্তির একেবারে বাস্তব রূপ। ১৮৭৮ সালের কর্নেল ম্যানশন লিখিত দ্য হিস্ট্রি অফ দি ইন্ডিয়ান মুটিনি বইতে লক্ষ্মীবাঈ বিষয়ে তিনি যা লেখেন সেটি হল:-

“তার জনগণ সর্বদাই তাকে স্মরণ করবে কিন্তু নিষ্ঠুরতাকে বিদ্রোহের পর্যায়ে উন্নীত করার মাধ্যমে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।তিনি জীবিত আছেন এবং মাত্রভূমির জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন।”

তাছাড়া পরবর্তীতে ২১ শে জুলাই ২০১১ সালে লক্ষ্মীবাঈ কে বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ডানপিটে রমণীদের মধ্যে একজন হিসেবে চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে। যারা তাদের স্বামীদের কাছ থেকে সক্রিয় সহযোগিতা পেয়েছিলেন, আর নারী শক্তিকে সম্পূর্ণ রূপে কাজে লাগিয়েছিলেন। টাইম ম্যাগাজিন এই তথ্য প্রকাশ করা হয় এবং সেই তালিকা তে ঝাঁসির রানীর অবস্থান ছিল অষ্টম।

এছাড়া ব্রোঞ্জ মূর্তিতে খচিত ভাস্কর্যের রানী লক্ষ্মীবাঈ কে ঝাঁসি এবং গোয়ালিয়র উভয় শহরেই ঘোড়ার আরোহিত অবস্থায় অঙ্কিত করা হয়েছে। সেটা দেখে বোঝা যায় যে যুদ্ধের সময় তিনি সন্তানকে নিয়ে ঘোড়ার পিঠে উঠে যেভাবে ঝাঁসি ত্যাগ করেছিলেন সেই চিত্রটাই যেন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

ঝাঁসির রানী সম্পর্কে ঐতিহাসিক গ্রন্থ: 

ঝাঁসির রানী যার গল্প শুনতে ছোট বাচ্চারা খুবই উৎসাহর সাথে নড়েচড়ে বসে। মহাশ্বেতা দেবীর “ঝাঁসি কি রানী” নামে একটি বই লিখেছিলেন, বইটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন সাগর এবং মন্দিরা সেন গুপ্তা, দুটো বইতে রানী লক্ষ্মীবাঈ সম্বন্ধে খুবই বিস্তৃতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এর ফলে ঐতিহাসিক দলিল পত্র সমগ্র এবং মুখে মুখে চলে আসা বিভিন্ন তথ্যগুলি সমন্বিত হয়ে তারপর কিন্তু গবেষণা করা হয়েছে।

তবে ঐতিহাসিক দলিল গুলোর বেশিরভাগটাই কিন্তু ঝাঁসির রানীর নাতি জি সি তাম্বের কাজ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় লিখিত মূল বইটি ১৯৫৬ সালে প্রকাশিত হয়। যার আই এস বি এন নাম্বার হল: ৮১-৭০৪৬-১৭৫-৮. আপনি চাইলে বইটি পড়তে পারেন, আশা করি ভালো লাগবে।

ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ এর জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন ধারাবাহিক: 

তার জীবনী নিয়ে অনেক চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন ধারাবাহিকের পাশাপাশি বই ও লেখা হয়েছে। যেগুলির মধ্যে দিয়ে একজন নারী অথবা রানী কিভাবে বীরাঙ্গনা হয়ে উঠতে পারেন, আর বুদ্ধিমত্তার সাথে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সে বিষয়ে অবগত করানোর জন্য এগুলি জনসাধারণের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।

  • ঝাঁসি কি রানী টেলিভিশন সিরিজ।
  • দা টাইগার এন্ড দি ফ্লিম ১৯৫৩ সালে ভারতের মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম টেকনিক্যালার চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি ছবিটির পরিচালক ও নির্দেশক ছিলেন চলচ্চিত্র কার সোহরাব মোদী।
  • এছাড়া কেতন মেহতা নির্মিত ছবি দ্য রেবেল অথবা বিদ্রোহী, মঙ্গল পান্ডে রাইজিং ছবির একটি সহযোগী চলচ্চিত্র।
  • ২০১৮ সালে রাধা কৃষ্ণ ও জগরলামুদি মনিকর্নিকা, দ্যা কুইন অফ ঝাঁসি নির্মাণ করেন।

ব্রিটিশরা যখন তার দুর্গ আক্রমণ করেছিল তিনি কিন্তু তখন দুর্গের ১০০ ফুট প্রাচীর পেরিয়ে ব্রিটিশদের সাথে দৃঢ়তার সাথে লড়াই করেছিলেন, সেই লড়াই তে বহু ইংরেজদের লাশ তিনি বেছিয়ে দিয়েছিলেন রাস্তাতে।

ব্রিটিশদের সঙ্গে যুদ্ধ এবং তার মৃত্যু: 

সহজে হেরে যাওয়ার মত নারী তিনি ছিলেন না, গোয়ালিয়র কেল্লা দখল করেন রানী লক্ষ্মী বাঈ এবং তাতিয়া টোপি, তারপরে রানী পুনরায় ব্রিটিশ আক্রমণকারী দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। তবে তারা আবার ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে হেরে যান। এর ফলে ১৭ ই জুন ১৮৫৮ সালের  এলাকার কাছাকাছি কোটাহ – কি সেরাইয়ে রাজকীয় বাহিনীর সাথে যুদ্ধ চলাকালীন শহীদ হন রানী লক্ষ্মীবাঈ।

শহীদ এই বীরাঙ্গনা রানী লক্ষ্মীবাঈ আজও সকলের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। মাতৃত্ববোধ কেও তিনি ভুলে যাননি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে। তাই এমন এক দুর্গম পরিস্থিতিতে দত্তক পুত্র দামোদর রাও কে নিজের পিঠের সাথে বেঁধে ১০০ ফুট উঁচু প্রাচীর থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন ঘোড়ার পিঠে চেপে।

সত্যিই এর জন্য অসীম সাহসিকতার প্রয়োজন তো হয়ই। আর রানি লক্ষী বাঈ তিনি যে কতটা সাহসী ছিলেন, তার তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই, তার বীরাঙ্গনা মূর্তি দেখলে বোঝাই যায়, তাই না ! মনিকর্নিকা থেকে ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আর তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই রানী লক্ষ্মীবাঈ নামেতেই।

1 thought on “রানী লক্ষ্মীবাঈ জীবনী 2023 – ইতিহাস, পরিবার এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াই”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top