যানবাহন দুর্ঘটনা হলে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া

যানবাহন দুর্ঘটনা হলে কি করবেন? তৃতীয় পার্টি দাবি কি? দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় কি না? যানবাহন বীমা থেকে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া ও নিয়ম।

যানবাহন দুর্ঘটনা হলে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া
যানবাহন দুর্ঘটনা হলে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া

যানবাহন মানুষের যতই সুবিধা করে দিক না কেন, পথ দুর্ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে পারে। তাই আগে থেকেই যানবাহনের জন্য এই অ্যাক্সিডেন্ট অথবা দুর্ঘটনার বীমা করিয়ে রাখা খুবই ভালো। তার ফলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বেশ কিছুটা অ্যামাউন্ট পাওয়া যেতে পারে।

যানবাহন বীমা: 

সেই যানবাহন টি টু হুইলার হোক অথবা থ্রি হুইলার অথবা ফোর হুইলার, বীমা করে রাখা সকল মানুষের ক্ষেত্রে বেশ সুবিধাজনক। যানবাহনের বীমা পলিসির অনুসারে একটি দাবী / প্রতিশ্রুতি দুই রকম ক্ষতি থেকে যে কারো ক্ষেত্রে হতে পারে।

অন্য কারোর ক্ষতি যার মধ্যে কারো সম্পত্তি জড়িত রয়েছে অথবা আঘাত জনিত ক্ষতি আছে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে তৃতীয় পার্টি বলা হয়ে থাকে।

নিজের ক্ষতি যার মধ্যে সেই ব্যক্তির বীমা করা যানবাহনের ক্ষতিও শামিল রয়েছে। নিজের ক্ষতির জন্য সেখানে বলা যেতে পারে, কোন প্যাকেজ অথবা বীমা যোজনা রাখা হয়ে থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি এই বীমা পলিসির জন্য অধিকারী হয়ে থাকেন।

তৃতীয় পার্টি অথবা দ্বিতীয় পক্ষের দাবি:

তৃতীয় পক্ষের দাবির মধ্যে যেখানে কোন ব্যাক্তি যানবাহন শামিল রয়েছে, দুর্ঘটনার সূচনা পুলিশ আধিকারিক এর সাথে বীমা কোম্পানিকে খুব তাড়াতাড়ি দিতে হবে।

তাছাড়া কোনো তৃতীয় পক্ষকে অথবা তৃতীয় পক্ষের জন্য যে ব্যক্তির অন্য কোনো যানবাহনের কারণে ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে যানবাহনের বীমা আবেদন প্রাপ্ত করতে হবে। আর সেই যানবাহনকে এর বীমা কর্তার একটি সূচনা দিতে হবে।

নিজের ক্ষয়-ক্ষতির দাবি:

নিজের ক্ষতির পরিস্থিতিতে যেখানে একজন ব্যক্তি দুর্ঘটনার কারণে তার যানবাহনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, সেই ব্যক্তিকে যেখানে সম্ভব হবে খুব তাড়াতাড়ি বীমা কোম্পানি আর পুলিশকে জানাতে হবে।

যাতে সেই ব্যক্তি এই রকম বীমার জন্য তালিকাভুক্ত হতে পারেন অথবা ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু পেতে পারেন।

কি করবেন আর কি করবেন না, এই সম্বন্ধে কিছু কথা:

  • বীমা কোম্পানিকে তাড়াতাড়ি জানাতে হবে।
  • ব্যক্তিকে পুলিশের অনুমতি বিনা দুর্ঘটনা জায়গা থেকে সেই যানবাহনকে স্থানান্তরিত করার প্রচেষ্টা কখনোই করা যাবে না।
  • অনুমতি প্রাপ্ত হওয়ার পর তারপরেই সেই যানবাহন মেরামতির জন্য নিয়ে যেতে পারেন।
  • ক্যাশলেস পরিষেবার মামলাতে বীমা কোম্পানির সরাসরি কার্য ক্ষেত্রে ভরপাই করে দেবে।

চুরি হওয়ার দাবি:

  • কোন যানবাহন যদি চুরি হয়ে থাকে, তাহলে তার ক্ষতির বিরুদ্ধে বীমার দাবি করা যেতে পারে।
  • যদি বীমাতে সেই যানবাহন চুরি হয়ে থাকে তাহলে সেই বিষয়টি পুলিশ এবং বীমা কোম্পানিকে খুব তাড়াতাড়ি জানাতে হবে।
  • পরিবহন বিভাগ কে ও জানাতে হবে।
  • এই বিষয়টি পলেসির সমস্ত রকম কাগজপত্র কে যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি জানতে হবে।
  • আর শুধুমাত্র পড়ে অথবা জানার প্রয়োজন নেই, যদি কেউ দাবি করে থাকেন যে এই রকম কাগজপত্র এই বিষয়ে বোঝার জন্য সম্পূর্ণ রূপে সাহায্য করতে পারে।
  • দাবি করার সময় সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তথ্য ভরা বীমা ফরম এর সাথে জমা করতে হবে।
  • এই বিষয়ে দাবির জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়তা হতে পারে। নির্দেশের সঠিকভাবে পালন করা সাবধানতা পূর্বক করতে হবে।
  • উদাহরণের জন্য গাড়ি চুরির মামলা তে আপনাকে সেই গাড়ির চাবি অবশ্যই দেখাতে হবে।

যানবাহন দুর্ঘটনার দাবিতে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া:

কে আবেদন করতে পারেন?

  • যানবাহন অধিনিয়ম 1988 এর ধারা 166 অনুসারে কোন দুর্ঘটনা থেকে উৎপন্ন ক্ষতিপূরণ এর জন্য আবেদন করা যেতে পারে।
  • যে ব্যক্তির চোট লেগেছে অথবা দুর্ঘটনার জন্য আঘাত হয়েছে, সেই ব্যক্তি আবেদন করতে পারবেন।
  • সম্পত্তির মালিক যে সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে এমন দুর্ঘটনার জন্য। যেখানে দুর্ঘটনা হয়েছে সেখানে যদি কোনরকম মৃত্যু হয়ে থাকে কারো সেই মৃত ব্যক্তির আইনি প্রতিনিধি দ্বারা ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে।
  • আহত ব্যক্তি দ্বারা এই আবেদন করা যেতে পারে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে।

যখন কোন মৃতর  আইনি প্রতিনিধি কে আবেদনের মধ্যে নেওয়া হয় না:

আবেদন মৃত সমস্ত আইনি প্রতিনিধি পক্ষ থেকে অথবা তার লাভ এর জন্য করা যেতে পারে।

যে আইন প্রতিনিধি আবেদনের মধ্যে শামিল নয় সে ক্ষেত্রে উত্তরদাতা হিসাবে এক পক্ষ বানানো যেতে পারে।

অধিকার ক্ষেত্র:

মৃত্যু অথবা শারীরিক কোন চোট-আঘাত জনিত দুর্ঘটনা থেকে উৎপন্ন যে ক্ষতি হয়ে থাকে তার জন্য প্রত্যেক আবেদন দাবির বিকল্প উপর করা যেতে পারে:-

  • যে জায়গাতে দুর্ঘটনা হয়েছে সেখানে ট্রিবুনাল কে দাবি করা যেতে পারে।
  • দাবির জন্য স্থানীয় সীমার অধিকার ক্ষেত্র তে প্রতিবাদী আর এই প্রকার বিষয় হতে হবে।
  • আর এর মধ্যে নির্ধারিত করা বিবরণ ও শামিল থাকতে হবে।

পরিসীমা:

ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন দুর্ঘটনা ঘটার ৬ মাসের ভিতর করতে হবে। তাছাড়া এই দাবি ট্রিবুনাল ছয় মাস পর্যন্ত সমাপ্তির পর আবেদন স্বীকার করে থাকে।

কিন্তু ১২ মাসের বেশি দেরি করা চলবে না। যদি ট্রিবুনাল সন্তুষ্ট হয়ে যায় তাহলে সময়মতো আবেদন পর্যাপ্ত কারণ থেকে অস্বীকার করা যেতে পারে।

সূচনার সরবরাহ: 

অধিনিয়ম দ্বারা শুরু করা ধারা 158 (6) অনুসারে যখনই কোন ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে মৃত্যু অথবা শারীরিক চোট অথবা আঘাত থেকে শুরু করে কোন দুর্ঘটনা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে থাকে, একজন পুলিশ আধিকারিক দ্বারা রিপোর্ট সম্পন্ন হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে পুলিশ স্টেশনে অধিকারী রিপোর্ট এর একটি কপি সূচনার রেকর্ডিং এর তারিখ থেকে তৃতীয় দিনের ভিতরে জমা করার পরিস্থিতি থাকতে হবে। এমন রিপোর্ট সম্পন্ন হওয়ার পর অধিকার ক্ষেত্র সম্বন্ধিত দাবি অধিকরণ সম্বন্ধিত বীমা কর্তাকে সেই প্রতিলিপি প্রদান করা হয়ে থাকে।

যেখানে মালিককে একটি প্রতিলিপি উপলব্ধ করানো হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে মালিক এমন রিপোর্ট প্রাপ্ত হওয়ার ৩০ দিন এর মধ্যে রিপোর্টকে দাবি অধিকরণ আর তার বীমা কর্তা কে জানাতে হবে।

তো এভাবে কয়েকটি সহজ পদ্ধতি মাথায় রেখে আপনি আপনার যানবাহনের ক্ষতি বা যানবাহন দ্বারা অ্যাক্সিডেন্ট এর মাধ্যমে কারো কোন ক্ষতি, মৃত্যু, কোন সম্পত্তির ক্ষতির জন্য এমন ভাবে যানবাহন বীমা প্রাপ্ত করতে পারেন। তাছাড়া যে ব্যক্তির ক্ষতি হয়েছে কোনো যানবাহন দ্বারা সেই ব্যক্তি ও কিন্তু এমন ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top