Pohela Baisakh 2024: পয়লা বৈশাখে খাওয়া-দাওয়ার এই সাবধানতা মানলে শরীর থাকবে ফিট

আমরা তো সকলেই জানি পয়লা বৈশাখ মানেই অনেক রকম রান্না, ভাজা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাছের পদ, মাংস, মিষ্টি, দই, চাটনি আরো কত কি। এগুলি একটু একটু করে খেতে খেতেও অনেক খানি খাওয়া হয়ে যায়। তবে শুধু খেলে তো হবে না, তার সাথে সাথে শরীরের দিকটাও যে খেয়াল রাখতে হবে, তাই না !

বিভিন্ন রকমের লোভনীয় খাবারের আয়োজন করা হয় এই দিনে। সারা বছর যেগুলি একসাথে পাওয়া যায় না পয়লা বৈশাখে কিন্তু সেগুলি সব গুলি একসাথে পাওয়া যায়। বাঙালি বরাবরই খেতে ভালোবাসে, ইলিশ মাছ ভাজা, বিভিন্ন রকমের তরকারি, পাপড়, নানা রকমের মিষ্টি তো রয়েছেই।

অনেক জায়গায় এই দিনে উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে সারা দিনের পর সকলে মিলে গিয়ে খুবই আনন্দ উপভোগ করে থাকেন। বৈশাখ মানেই বছরের প্রথম মাস, আর পয়লা বৈশাখ মানে বছরের সূচনা। নানা আয়োজনে বাঙালি এই দিনটিকে বরণ করে নিতে একেবারেই ভোলেন না। নানা রকম আচার অনুষ্ঠান দিয়ে স্বাগত জানানো হয় আরো একটি নতুন বছরকে।

পয়লা বৈশাখে খাওয়া-দাওয়ার এই সাবধানতা মানলে শরীর থাকবে ফিট
পয়লা বৈশাখে খাওয়া-দাওয়ার এই সাবধানতা মানলে শরীর থাকবে ফিট

খাবার প্রিয় বাঙালির জীবনে প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন পদের রান্না তো লেগেই রয়েছে, তবে পয়লা বৈশাখে যে রান্না গুলি হয়, সে গুলো তো একেবারে মনেহরা। যারা খুব খেতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরী, অবশ্যই এই দিনে খাবেন দাবেন, আনন্দ করবেন, তবুও কিন্তু একটু খানি সাবধানতা রাখতেই হবে, তাই তো !

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, পয়লা বৈশাখের ভুরিভোজে আপনি কোন কোন সতর্কতা অবলম্বন করবেন:

১) ভাতের পরিমান:

কথায় আছে যে, মানুষ যত পরিমান ভাত খায়, যখন মুখের সামনে মুখরোচক এবং পছন্দের কোন তরকারি থেকে থাকে, তাহলে কিন্তু সেটা তার কাছে অনেকখানি প্রিয় হয়ে ওঠে। আর ভাতের পরিমাণটা তার নিজের অজান্তেই বেড়ে যায়। লাগার কারণে খাওয়ার সময় হয়তো কষ্ট নাও হতে পারে, কিন্তু পরবর্তীতে যে কষ্টটা অনুভব হবে সেটা কিন্তু একেবারে সহ্য করার মতো নয়।

যারা একটু ভারী অথবা ওজন বেশি, তারা কিন্তু এদিকটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। যদি মনে হয় তাহলে বারবার খান, একবারে বেশি পরিমাণ না খাওয়াই ভালো। আনন্দের পাশাপাশি আপনাকে স্বাস্থ্যের দিক টাও খেয়াল রাখতে হবে।

পয়লা বৈশাখে এই কাজ করলে সংসারে অর্থের অভাব হবে না

২) শর্করা জাতীয় খাবার:

আমাদের শরীর বুঝে যদি খাওয়া যায়, তাহলে শরীর সবসময় এর জন্য সুস্থ সবল থাকে। শর্করা জাতীয় খাবার সব সময় খাওয়া খুবই ভালো। আর বিশেষ করে পয়লা বৈশাখের দিন যখন একটু ভারী খাওয়া পড়ে যায়, তখন এটা আরো বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

যেমন ধরুন:- মুড়ি, চিড়ে, খই এই জাতীয় খাবার গুলো পরিমান মত খেতে হবে এই দিন। আপনি সুস্থ অথবা অসুস্থ যেমন অবস্থাতেই থাকেন না কেন, খাবার গ্রহণ করার ক্ষেত্রে যার যার প্রয়োজন মত খাবার নেওয়া উচিত। না বেশি না একেবারে কম।

৩) কোন কিছু মাখা খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা:

আলু মাখা হোক অথবা কোন কিছু মাখা, খেতে এতটাই সুস্বাদু লাগে যে, এটাতে কেউ না করতে পারেন না। যাদের গ্যাস্ট্রিক আলসার অথবা অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তারা কিন্তু এই দিকটা বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন।

সেই মাখাটা যেন কোন রকম শুকনো লঙ্কা দিয়ে মাখা না হয়। অথবা এক্ষেত্রে আপনি পাশাপাশি ডাল মাখা, আলু মাখা, মাছ মাখা বা যে কোন মাখাই খান না কেন, পরিমাণে কিন্তু কম খাওয়াটা উচিত, যাতে কোনো সমস্যা যেন না হয়।

আর এখানে মাখা তৈরি করার জন্য কাঁচা লঙ্কা ব্যবহার করা যেতে পারে। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। পরিমাণ মতো খাওয়া শরীরের পক্ষে খুবই ভালো, না হলে শর্করা গ্রহনের পরিমাণ বেড়ে গেলে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

পয়লা বৈশাখ ও হালখাতার সম্পর্ক কি? জানুন ইতিহাস

৪) ইউরিক এসিডের সমস্যা থাকলে:

প্রতিটি মানুষের শরীরে কোন না কোন সমস্যা ছোটখাটো হলেও রয়েছে। তাই যাদের শরীরে ইউরিক এসিডের সমস্যা রয়েছে বা ক্রিয়েটিনিন বেশি রয়েছে, তারা কিন্তু ডাল মাখা, বরবটি অথবা শিম মাখা অথবা মাছ মাখা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এর ফলে আপনার শরীর সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।

৫) মিষ্টি খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা:

পয়লা বৈশাখ মানেই বিভিন্ন রকমের পদের রান্নার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির আয়োজন থাকে। যেমন ধরুন রসগোল্লা, লাড্ডু, ছানার সন্দেশ আরো বিভিন্ন রকমের মিষ্টি। দই আর এই মিষ্টি দেখে লোভ সামলানো অনেকের ক্ষেত্রে খুবই কঠিন হয়ে পড়বে জানি, তাছাড়া বাঙালি মানেই মিষ্টি, মিষ্টিমুখ ছাড়াই যেন কোনো শুভ কাজ সম্পন্নই হয় না।

তবে যারা সুস্থ আছেন বা যাদের ওজন কম, তারা ইচ্ছামত বিভিন্ন রকমের মিষ্টি খেয়ে দেখতেই পারেন। তবে যাদের ওজন বেশি, ডায়াবেটিস আছে অথবা ইউরিক এসিডের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই মিষ্টি বেছে খাবেন এবং মিষ্টি খাওয়া একেবারেই বাদ দিতে পারেন বা যদি খুব মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করে তাহলে সুগার ফ্রি মিষ্টি টা আপনার জন্য উপযুক্ত।

৬) গরম থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবেন যেভাবে:

যেহেতু পয়লা বৈশাখ সম্পূর্ণ গরমের মধ্যে দিয়ে যায়। তাই বছরের প্রথম দিনটি উদযাপন করতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার ধুম পড়ে যায়। আর এই সময় সূর্যের প্রচণ্ড তাপ থাকে বলে গরমের অনুভূতিটা বেশ প্রবল হয়।

তাই গরম থেকে নিজেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখার জন্য আপনি যেগুলি করতে পারেন সেগুলি হল বেশিক্ষণ রোদে না থাকা এবং বাইরে বের হওয়ার আগে এক গ্লাস চিনি ছাড়া আঙ্গুর, কমলা লেবু, লেবু, তরমুজ, এর জুস খেয়ে বের হওয়া জরুরি, যার ফলে শরীরে একটা হাইড্রেশন বজায় থাকে।

৭) ডাবের জল:

ডাব এর জল আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। গরমে ঘামের সাথে আমাদের শরীর থেকে অনেকখানি লবণ এবং অনেকখানি জল বেরিয়ে যায়। সেই কারণে শরীরের দুর্বলতা অনুভব হয়।

আর এই গরমে যদি আপনি নিয়মিত ডাবের জল খেয়ে থাকেন, তাহলে শরীরে থাকবে অনেক খানি তাজা অনুভূতি। সেই সাথে পয়লা বৈশাখ মানে গরম আর এই পয়লা বৈশাখে শরীরটাকে সুস্থ সকল রাখার জন্য পেট টাকে ঠান্ডা রাখার জন্য ডাবের জল আপনি খেতেই পারেন।

শুধুমাত্র ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার আগে ডাবের জল বিভিন্ন ধরনের ফলের রস এগুলি খাওয়া যেমন ঠিক তেমনি বাইরে থেকে ঘরে ফিরেও এগুলি খাওয়া আপনার জন্য খুবই জরুরী। সবমিলিয়ে পয়লা বৈশাখ আপনার কাটুক খুবই সুন্দরভাবে এবং সুস্থভাবে। নিজের শরীরের উপরে খেয়াল রেখে তবে বিভিন্ন রকম পদের রান্না চেখে দেখবেন আর তার সাথে মিষ্টি টা একটু সাবধানে খাওয়া উচিত ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top