বিবাহিতা মেয়ে হিন্দু অবিভক্ত পরিবারে অংশীদার পাবে কি না? আইন জানুন

হিন্দু অবিভক্ত পরিবারে বিবাহিতা মেয়েদের কি আধিকার আছে? জেনে নিন বিবাহিতা মেয়ে হিন্দু অবিভক্ত পরিবারে অংশীদার নিয়ে আইনি নিয়ম। বিবাহিত মেয়েরা কি হিন্দু অবিভক্ত পরিবারে অংশীদার হিসাবে মান্য হবে?

কোন কিছু অধিকার সম্পর্কে যখন কোনও কথা ওঠে তখন বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে বিবাহিত না অবিবাহিত সেই বিষয়টা সবার আগে বিবেচনা করা হয়।

বিবাহিতা মেয়ে হিন্দু অবিভক্ত পরিবারে অংশীদার পাবে কি না? আইন জানুন
বিবাহিতা মেয়ে হিন্দু অবিভক্ত পরিবারে অংশীদার পাবে কি না? আইন জানুন

আর তাই কোন কোন বিষয়ে বিবাহিত মহিলাদের অধিকার অথবা সেই মহিলা অংশীদার হতে পারবেন সে সম্পর্কে ধারণা থাকাটা বিশেষভাবে জরুরি।

হিন্দু অবিভক্ত / অবিভাজিত পরিবার (HUF) আসলে কি?

হিন্দু অবিভক্ত পরিবার – Hindu Undivided Family (HUF), হিন্দু আইন অনুসারে একটি সংযুক্ত হিন্দু পরিবারের মধ্যে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। একটি এমন পরিবার যেখানে সমস্ত ব্যক্তি একজন পূর্বপুরুষের বংশধর আর একটি মাত্র ছাদের নিচে বসবাস করেন এবং সম্পত্তি, খাওয়া-দাওয়া, পূজা-পার্বণ, সবকিছু সংযুক্ত থাকে।

ভারতে এইচ ইউ এফ কে বাস্তবায়িত করার আইন কানুন রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য যা কিনা আইনের দিক থেকে এমন অবিভক্ত পরিবার এর আওতায় আসে।

তবে কি কোন বিবাহিতা মেয়ে এইচ ইউ এফ এর অংশীদার হতে পারবেন? 

এক্ষেত্রে উত্তর হবে হ্যাঁ, একজন বিবাহিত মেয়ে এইচ ইউ এফ এর অংশীদার হতে পারবেন। 2005 হিন্দু উত্তরাধিকার অধিনিয়ম 1956 তে সংশোধনের আগে মেয়ে তার বিয়ের পর নিজের পিতার এইচ ইউ এফ এর সদস্য থাকে না। আর নিজের স্বামীর এইচ ইউ এফ এর সদস্য হয়ে যায়।

তাছাড়া সংশোধনের পর সেই মেয়ের বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর অথবা অবিবাহিত রয়েছে সেও কিন্তু একজন ছেলের মত এই পরিবারে এইচ ইউ এফ এর সদস্য অথবা অংশীদার হতে পারবে।

এছাড়া তার বিবাহিত ঘরে তাকে একজন সদস্য হিসেবে মানা হবে। সেখানে তার স্বামীর এইচ ইউ এফ এর অংশীদার হিসেবে মানা হবে না। এই ভাবে তার স্বামীর এইচ ইউ এফ এর বিভাজন এর পরিস্থিতিতে এই ভাবে তার সম্পত্তিতে কোন রকম অংশ থাকবে না। 

এইচ ইউ এফ সম্পত্তিতে বিবাহিত মহিলাদের কি অধিকার আছে?

2005 এর সংশোধন অধিনিয়ম অনুসারে মহিলা সদস্য কে একজন সম্পত্তিতে অংশীদার হিসেবে অধিকার দেওয়া হয়েছে। এর মানে হল এই যে, এবার থেকে সেই মহিলার পরিবারের সম্পত্তিতে সমান অধিকার রয়েছে।

মহিলাদের এখন সম্পত্তি নিজের অংশ পাওয়ার জন্য এইচ ইউ এফ কে বিভাজন এর দাবি করার অধিকার রয়েছে। বিভাজন সম্পূর্ণ এবং আংশিক রূপে হতে পারে। যদি বিভাজনের সময় কোন মেয়ের বিবাহ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে প্রাপ্ত সম্পত্তি কে তার নিজের সম্পত্তি রূপে মানা হবে।

কোন বিবাহিত মহিলা সদস্য নিজের পিতার এইচ ইউ এফ এর সাথে সাথে নিজের স্বামীর এইচ ইউ এফ বিভাজন এর দাবি করতে পারেন কি?

হিন্দু উত্তরাধিকার অধিনিয়ম 1956 তে 2005 এর সংশোধনের পর একজন কন্যা নিজের পিতার পরিবারের একজন অংশীদার হতে পারেন। যার কাছে অংশীদার হিসেবে সমস্ত রকম অধিকার এবং বিশেষ অধিকার হতে হবে। সে নিজের পিতার এইচ ইউ এফ সম্পত্তির বিভাজন এর জন্য দাবি করতে পারেন।

এছাড়া যতদুর পর্যন্ত তার স্বামীর এইচ ইউ এফ এফ সম্বন্ধ রয়েছে, সেই পরিবারে একমাত্র সদস্য সে যার কোনো রকম অংশ নেই এই সম্পত্তিতে, কেন না, সে তার নিজের স্বামীর এইচ ইউ এফ সম্পত্তির বিভাজনের দাবি করতে পারেন না। কিন্তু তার স্বামী আর পুত্র এর মধ্যে অথবা তার ছেলেদের মধ্যে বিভাজনের মামলাতে একজন অংশীদার হিসেবে অধিকারী হতে পারেন সেই মহিলা।

2005 এর সংশোধন এর আগে বিবাহিত কন্যার স্থিতি আসলে কি?

সংশোধন 01 / 09 / 05 এর আগে জন্ম গ্রহণ করা একজন কন্যার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি জারি হবে, আর সে নিজের জন্মের তারিখ থেকে অংশীদার হবে না। পরিবর্তে কেবলমাত্র 01/ 09 / 05 এই তারিখের পর থেকে হবে।

বর্তমানে এমন অবিভাজিত পরিবার অথবা একান্নবর্তি পরিবার খুবই কম চোখে পড়ে। যেখানে আইন অনুসারে একজন বিবাহিত অথবা অবিবাহিত মহিলা তার নিজের পরিবারের এইচ ইউ এফ এর অংশীদার হওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। একই ছাদের নিচে সমস্ত সদস্য একজন পূর্বপুরুষের বংশধর হতে হবে।

অংশীদার হিসেবে দাবী করার যে অধিকার রয়েছে, সেটা পিতার বাড়িতে সম্ভব হলেও স্বামীর বাড়িতে যখন নিজের ছেলেদের মধ্যে এমন অংশীদারি হবে তার মধ্যে একজন বিবাহিত মহিলা অংশীদার হিসেবে অধিকারী হতে পারেন।

তো এইভাবে আইন অনুসারে একজন বিবাহিত মহিলা এইচ ইউ এফ এর ভাগীদার অথবা অংশীদার হতে পারেন খুবই সহজ ভাবে। স্বামীর এইচ ইউ এফ এর কাছে কোন রকম জোরপূর্বক দাবি করা যাবে না, আইন অনুসারে। সে ক্ষেত্রে পিতার সম্পত্তিতে পিতার ছেলে দের মতই সমান ভাবে অধিকার পেতে পারেন।

বিষয় সম্পত্তি নিয়ে যতই ঝগড়া হোক না কেন, আইন কিন্তু এ সমস্ত বিষয়ের জন্য খুবই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। আপনি চাইলে আপনার সমস্ত রকম সমস্যা আইনত ভাবে অভিযোগ দায়ের করার মধ্যে দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন।

এর পরেও কোন রকম অশান্তি অথবা অসামাজিক কাজকর্ম হওয়া থেকে বিরত থাকা যায়। তার সাথে সাথে নিজের প্রাপ্য অধিকার ও অংশ পাওয়া যাবে খুবই সহজ ভাবে। আর আইন অনুসারে যেখানে অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তির ভূমিকা গ্রহণ যোগ্য হবে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top