গাড়ি চুরি হলে ইন্সুরেন্স কোম্পানি যদি ক্লেম না দেয়, তখন কি করবেন?

Legal Steps To Claim Insurance For Your Stolen Vehicle in Bengali: গাড়ি চুরি হয়ে যাওয়ার পর যখন ইনসিওরেন্স কোম্পানি ক্লেম না দিয়ে থাকে তখন কি করবেন? এর জন্য আইনি নিয়ম ও পদক্ষেপ জেনে নিন।

ইনসুরেন্স নিজের আর্থিক সুরক্ষার উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে। যানবাহন হল ব্যক্তির একটি সম্পত্তি যা কিনা এই সম্পত্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন রকমের অধিকার প্রাপ্ত  করার অধিকার রয়েছে। মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট অনুসারে যে কোনো যানবাহন এর প্রয়োজনীয় ইন্সুরেন্স করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

গাড়ি চুরি হলে ইন্সুরেন্স কোম্পানি যদি ক্লেম না দেয়, তখন কি করবেন?
গাড়ি চুরি হলে ইন্সুরেন্স কোম্পানি যদি ক্লেম না দেয়, তখন কি করবেন?

তাছাড়া এমন ইন্সুরেন্স থার্ড পার্টি হয়ে থাকে অর্থাৎ যে কেউ এমন যানবাহনের ইন্সুরেন্স হওয়া প্রয়োজন যেখানে কোন দ্বিতীয় ব্যক্তির বা দ্বিতীয় কোনো মানুষের সম্পত্তির ক্ষতি হতে পারে, বা তার সম্ভাবনা রয়েছে।

মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট অন্তর্গত যে ব্যক্তির যানবাহন এর কারণে ক্ষতি হয়েছে সেই ব্যক্তি দাবি করতে পারেন যে এর সাথে একটি ব্যবস্থা আর যেখানে এমন কোন ব্যক্তির ক্ষতি হয়েছে যা কিনা যানবাহনের মানিক সম্বন্ধিত হয়।

যেমন কোনো দুর্ঘটনা তে কোন ব্যক্তির যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে অথবা সেই ব্যক্তির গাড়িটি কেউ চুরি করে নিয়েছে। এমন পরিস্থিতে কিন্তু প্রয়োজন পড়ে সেই গাড়ির বীমা করিয়ে রাখা।

যদি কোন দূর্ঘটনা তে কোন ব্যক্তির যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় অথবা চুরি হয়ে যায় তাহলে কিন্তু তার ক্ষতির ক্ষতিপূরণ পেতে পারবেন এই বীমার মধ্যে দিয়ে।

যানবাহন চুরি হয়ে যাওয়ার পর বীমা কিভাবে প্রাপ্ত করবেন?

যেকোনো বীমা দুটি শর্তের উপরে হতে পারে। যার মধ্যে একটি শর্ত হলো, নিজের যানবাহনের দ্বারা কোন অন্য ব্যক্তির সম্বন্ধে ও হতে পারে, আর দ্বিতীয় শর্ত হলো, যে ব্যক্তির যানবাহন অর্থাৎ যানবাহনের মালিক যিনি সেই ব্যক্তির কোন ক্ষতি হতে পারে, তিনিও কিন্তু বীমা প্রাপ্ত করার অধিকারী হয়ে থাকেন।

পুলিশ রিপোর্ট এর গুরুত্ব: 

যখন কোনো যানবাহন চুরি হয়ে যায়, তার রিপোর্ট সম্বন্ধিত পুলিশ থানাতে গিয়ে সাথে সাথেই করাটা জরুরী। যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি পুলিশ থানায় গিয়ে পুলিস আধিকারিকের কাছে এই বিষয়ে বলতে হবে এবং তাদেরকে জানাতে হবে যে, আপনার নামে থাকা যানবাহনটি চুরি হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া পুলিশ এই বিষয়ের উপরে হঠাৎ করে কিন্তু রিপোর্ট দায়ের করেন না।

পরিবর্তে প্রথমে ভালো করে অনুসন্ধান করবেন যে তাদের থানার অন্তর্গত এলাকাতে কোন গাড়ি চুরি গিয়েছে কি না। তখনই পুলিশ দণ্ডবিধান অনুসারে 154 এর অন্তর্গত রিপোর্ট দায়ের করে নেবেন, আর এই রিপোর্ট কম্পিউটারের উপরে হয়।

এই রিপোর্ট দায়ের করার পর পুলিশ এই মামলাটি অনুসন্ধান করবেন আর যানবাহন টি চুরি করেছে যে চোর, তাকে ধরার জন্য চেষ্টা করবেন। তবে যখন এমন যানবাহন চোর খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন কিন্তু পুলিশ এমন মামলার ক্ষেত্রে সমাপ্তি রিপোর্ট প্রস্তুত করে থাকেন, যাকে ক্লোজার রিপোর্ট বলা হয়। 

ক্লোজার রিপোর্টের পর এর প্রক্রিয়া:

যখন যানবাহনের মালিক এর কাছে বিচারালয় দ্বারা প্রস্তুত করা ক্লোজার রিপোর্ট পাঠানো হয়, তার উপরে বিচারালয়ের আদেশ প্রাপ্ত হয়ে থাকে যে, তখন যানবাহনের মালিক কাগজপত্র নিয়ে বীমা কোম্পানির কাছে উপস্থিত হতে পারেন।

আর একটি সাধারন আবেদনের মাধ্যমে বীমা কোম্পানিকে এই বিষয়ে তথ্য দিতে পারেন যে, পুলিশ এই মামলাটির অনুসন্ধান করেছে, আর অনুসন্ধানের পর চুরি যাওয়া যানবাহনটি পাওয়া যায় নি। এমন পরিস্থিতিতে যানবাহনের মালিক বীমা কোম্পানি থেকে তার চুরি যাওয়া যানবাহনের সম্বন্ধে ক্লেম অ্যামাউন্ট প্রাপ্ত করার অধিকারী থাকবেন।

ক্লেম এর অ্যামাউন্ট যানবাহনের মালিককে প্রদান করা হয়। আবার যদি বীমা কোম্পানি দ্বারা এমন কোন অন্য কারণ এর ক্ষেত্রে কিন্তু না দিয়ে থাকতে পারে, তখন যানবাহনের মালিক এর কাছে আইনি অধিকার এটা হয় যে, বিচারালয়ের সামনে গিয়ে বলতে হবে যে, তার দ্বারা যানবাহনের বীমা করানো হয়েছে, আর বীমার শর্ত অনুসারে বীমা কোম্পানি সেই শর্ত মানতে রাজি হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতিতে আইনি রাস্তা কি?

একটি বীমা কোম্পানি আর যানবাহনের মালিক এই দুজনের সম্পর্ক সাধারণত গ্রাহক আর সেবাদাতা হিসাবে জানা যায়। এই জন্য এই মামলাতে উপভোক্তা সংরক্ষণ অধিনিয়ম 2019 জারি করা হয়েছে।

যখন কোন বীমা কোম্পানি এমন ইনসিওরেন্স দেওয়া থেকে বিরত থাকেন বা দিতে রাজি না হন, যে মামলাতে পুলিশ দ্বারা ক্লোজার রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে, আর  এটা বলে দেওয়া হয়েছে যে, খোঁজার প্রচেষ্টা করার পরও সেই যানবাহন পাওয়া যায়নি, তখন গ্রাহক কনজিউমার ফোরাম এ অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

কনজিউমার ফোরাম মামলাতে এই বিষয়টি দেখে যে, সত্যিই কি বীমা কোম্পানি দ্বারা কোন ব্যক্তিকে ইন্সুরেন্স এর অ্যামাউন্ট দেওয়ার জন্য মানা করা হয়েছে, যদি কোন কারণ অনৈতিক হয়ে থাকে, যেখানে ইন্স্যুরেন্সের শর্ত লংঘন করা হয়ে থাকে, তখন ফোরাম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি কে এই আদেশ দেবে যে, তাকে এমন ইন্সুরেন্স অ্যামাউন্ট দিতে হবেই, কেননা সে তাদের শর্ত অনুসারে বাধ্য রয়েছে, আর বীমা কোম্পানি এই শর্তের আধারের উপর কোন গ্রাহক কে কোনো বীমা সেল করেছে, আর তার কাছ থেকে প্রিমিয়াম এর অ্যামাউন্টও প্রাপ্ত করেছে।

এই ধরনের যানবাহন চুরির মামলা দিয়ে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে ক্লেম প্রাপ্ত করা যেতে পারে। এই ক্লেম কেবলমাত্র চুরি যাওয়া নয় তার সাথে সাথে কোন যানবাহনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রেও কিন্তু ইনসুরেন্স কোম্পানী থেকে ক্লেম প্রাপ্ত করতে পারবেন।

যানবাহন বর্তমানে প্রতিটি পরিবারে একটি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। আর সেই যানবাহন কেনার সাথে সাথে তার ইন্সুরেন্স করে রাখাটা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, কোনো রকম দুর্ঘটনা বা কোনো সম্পত্তির ক্ষতি, সে ক্ষেত্রে অনেকটাই পূরণ করার জন্য গাড়ির মালিকের অনেক খানি সহযোগিতা হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top