বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়েদের আইনি অধিকার কি? জেনে নিন

Legal rights of sons and daughters on father’s property: বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়েদের আইনি অধিকার কি? কিভাবে পাবেন বাবার সম্পত্তিতে অধিকার? পৈতৃক সম্পত্তিতে ছেলে মেয়েদের অধিকার আইন জেনে নিন।

একজন বাবা সারাজীবন পরিশ্রম করে যে সম্পত্তি, ব্যাংক ব্যালেন্স এবং আরো অন্যান্য সম্পত্তি তৈরি করে রাখেন, সেগুলি কিন্তু ভবিষ্যতে তার সন্তানদের উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হয়। যাতে তাদের জীবনযাত্রা অনেকটা সহজ হয়ে ওঠে।

তবে এ নিয়ে অনেক আইন কানুন রয়েছে। বাবার সম্পত্তির উপরে ছেলে মেয়েদের কেমন অধিকার থাকতে পারে সে নিয়ে আইনের নিয়ম দিন পরিবর্তনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত একটু একটু করে পরিবর্তন হয়ে থাকে।

বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়েদের আইনি অধিকার কি?
বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়েদের আইনি অধিকার কি?

দিল্লি উচ্চবিচারালয় একটি আইনি রায় ঘোষণা করেছে, এই সম্পত্তির বিষয় নিয়ে। যেখানে কোনো ব্যাক্তি যদি নিজের উপার্জন থেকে অর্জিত কোন সম্পত্তি করে থাকেন অথবা নিজে থেকে যে সম্পত্তি বানিয়েছেন।

সেই সম্পত্তির উপর অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তি অথবা সেই ব্যক্তির ছেলে অথবা মেয়ের কোন রকম আইনি অধিকার একেবারেই নেই বললেই চলে। যতক্ষণ  পর্যন্ত সেই ব্যক্তি অর্থাৎ সম্পত্তির মালিক বেঁচে আছেন।

ততক্ষণ পর্যন্ত সম্পত্তির বিষয়ে বিচার করার অধিকার শুধুমাত্র সেই ব্যক্তির উপরই থাকে। তা ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি কে সেই সম্পত্তি তিনি দান ও করতে পারেন, শুধু তাই নয় সেই ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে এই সম্পত্তি ভাড়াও দিতে পারেন অথবা বন্ধকও রাখতে পারেন।

বন্টননামা কি? বন্টননামা কিভাবে তৈরি করা হয়? জানুন সবকিছু

এছাড়া সেই সম্পদটি ব্যবহার করার জন্য দিতেও পারেন, সে অধিকারও রয়েছে সম্পূর্ণ রূপে। এমন করার জন্য সম্পত্তির মালিক এর ছেলে মেয়েরা এবং অন্য ব্যক্তি কোনো রকম বাধা দিতে পারবেন না।

এছাড়া যদি সেই সম্পত্তির মালিক নিজের মন অনুযায়ী ছেলে মেয়েদের সম্পত্তি দিয়ে থাকেন, ব্যবহার করার জন্য, তাতেই কিন্তু সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এর বাইরে আশা করাও যাবে না এবং আইনি ভাবে কোনরকম চাপ দেওয়া যাবে না।

কেননা এমন আইন নেই। যেখানে বাবা নিজের ইচ্ছামত ছেলে মেয়েদের সম্পত্তি ব্যবহার করার জন্য দিতেও পারেন আবার ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলতেও পারেন।

বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়েদের আইনি অধিকার ভিডিও:

সম্পত্তি কেনার আগে এই কাগজপত্র গুলি যাচাই না করলে বিপদ

ছেলে অথবা মেয়ে তাদের বাবার সম্পত্তি কিভাবে প্রাপ্ত করতে পারেন?

সম্পত্তির মালিক অথবা একজন বাবা তার নিজের ছেলে অথবা মেয়েকে তার সম্পত্তি বিভিন্ন রকম ভাবে দিতে পারেন। যেমন ধরুন দান করতে পারেন, এছাড়া কাগজপত্র করে সেই সম্পত্তি ছেলে মেয়েদের মধ্যে ভাগ করেও দিতে পারেন।

এছাড়া যদি পৈত্রিক সম্পত্তি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির মৃত্যুর পর ভাগাভাগি করা হয়ে থাকে। কেননা পৈত্রিক সম্পত্তি শুধুমাত্র ব্যক্তির মৃত্যুর পরেই ভাগ করা সম্ভব হয়, কেননা সেই সম্পত্তির নতুন মালিক হওয়া টাও জরুরি বাস্তবে।

এছাড়া এক পৈত্রিক সম্পত্তির নতুন মালিক হওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন ধরুন সম্পত্তির বর্তমান মালিক যার মৃত্যু হয়েছে সবে মাত্র, তার কারো নামে দান করে যাওয়া অথবা লিখে যাওয়ার পর নতুন মালিক হিসেবে কেউ নির্বাচিত হতে পারেন।

আবার যদি কোন বাবা তার সম্পত্তি কারো নামে যদি না দিয়ে থাকেন বা না লিখে থাকেন, তাহলে তার ছেলে অথবা মেয়ে অথবা তার উত্তরাধিকারীর নামে সেই পৈত্রিক সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়।

পৈত্রিক সম্পত্তি নিজের নামে হস্তান্তরিত করার জন্য এক ব্যক্তিকে সেই সম্পত্তি ক্ষেতরাধিকার দেওয়ানী বিচারালয় উত্তরাধিকার প্রমাণপত্র এর জন্য একটি আবেদন দায়ের করতে হবে। আর যদি সেই ব্যক্তি পৈত্রিক সম্পত্তি নিজের নামে হস্তান্তরিত করার জন্য সমস্ত রকম শর্ত সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে সেই সম্পত্তি পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করতে পারেন।

হিন্দু মহিলাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার আইন ও নিয়ম এবং অধিকার

যদি উত্তরাধিকারী হিসেবে কোন মেয়ে থাকে এবং সে যদি বিবাহিতা হয়ে থাকে:

এই সম্পত্তির ক্ষেত্রে বিবাহিত হওয়ার প্রশ্ন শুধুমাত্র মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেননা বিয়ের পর একজন মেয়ে নিজের বাবার বাড়ি ছেড়ে দিয়ে স্বামীর ঘরে চলে যায়। আর যেখানে তার স্বামীর সম্পত্তির ভাগীদার হয়ে থাকে। সেটা পৈত্রিক সম্পত্তি হতে পারে অথবা অর্জিত সম্পত্তি, কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে এমনটা কখনোই হয় না।

কেননা বিয়ের পর ছেলেরা কিন্তু নিজের বাবার বাড়িতেই থাকে। আর এটা কেবলমাত্র নিজের বাবার পৈতৃক সম্পত্তির উপর অধিকার আছে, এমনটা বলতে পারেন। তবে তার অর্জিত সম্পত্তির উপর কোনরকম অধিকার থাকবে না।

দাদুর সম্পত্তিতে নাতি-নাতনিদের অধিকার আছে কি?

বাবার সম্পত্তির অধিকার পাওয়ার জন্য একজন উকিল কিভাবে আপনার সাহায্য করতে পারেন?

সম্পত্তির বিষয়ে যখন কোন অধিকার নিয়ে প্রশ্ন আসে, যখন তখন নিজে থেকেই সেই কাজ করতে পারবেন না। তখন একজন অভিজ্ঞ উকিল আপনার সমস্ত রকম সহযোগিতা করতে পারেন। এক্ষেত্রে উকিল এর মাধ্যমে পৈত্রিক সম্পত্তি আপনার নিজের নামের করার ছোট-বড় বিভিন্ন রকমের আইনি কার্য সম্পাদন করতে পারবেন খুবই সরল ও সহজ ভাবে।

পৈতৃক সম্পত্তির উপর অধিকার থাকে সেই কারণে একজন উকিল বিভিন্ন রকমের সমস্যার সমাধান করে সেই সম্পত্তি আপনার নামে করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এমন পরিস্থিতিতে একজন উকিল শুধুমাত্র পারেন আইনের মাধ্যমে সমস্ত উত্তরাধিকারীর মধ্যে তাদের অধিকারের যে ভাগ রয়েছে সেই হিসাবে সম্পত্তির বন্টন করতে পারেন।

তাছাড়া একজন উকিল কম সময়ের মধ্যে, খুবই কম খরচার মাধ্যমে পৈত্রিক সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন খুবই ভালভাবে আইন হিসাবে করতে পারেন। কিন্তু এর জন্য এটা খুবই ভালভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে, যে উকিলকে আপনি পৈত্রিক সম্পত্তি বন্টন করার জন্য নিযুক্ত করছেন সেই উকিল খুবই ভরসার উপযুক্ত কিনা।

সম্পত্তি হস্তান্তরিত কিভাবে হয়? হস্তান্তরিত করার পদ্ধতি ও আইন

এক্ষেত্রে সমস্ত রকম কাগজপত্র ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে এবং যখন নিজের নামে হবে সেই কাগজপত্র ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। তারপরে সই করতে পারেন, না হলে পরবর্তীতে কোন শর্ত অনুযায়ী যদি আপনি সই করেন সেখানে এই সম্পত্তি নিয়ে আরো বড় অনেক ধরনের ঝামেলা হতে পারে।

তবে যাই হোক না কেন, এই বিষয়টা তো একেবারেই পরিষ্কার যে বাবার পৈতৃক সম্পত্তির উপরে ছেলে মেয়েদের অধিকার রয়েছে কিন্তু যদি সেই বাবা নিজের পরিশ্রম ও দক্ষতা দিয়ে কোন সম্পত্তি অর্জন করে থাকেন তাহলে সেই সম্পত্তির উপরে কোনো তৃতীয় ব্যক্তির, এমনকি নিজের ছেলেমেয়েদেরও কোনরকম অধিকার থাকবে না। যদি সেই ব্যক্তি নিজের ইচ্ছা অনুসারে কাউকে তার অর্জিত সম্পত্তি ব্যবহার করার জন্য দিয়ে থাকেন অথবা দান করে যান।

তাই অযথা বাবার অর্জিত সম্পত্তির উপরে অধিকার না দেখিয়ে আইনের সমস্ত রকম বিষয়গুলি জেনে রাখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে অযথা চাপ সৃষ্টি করা কোন মতেই সম্ভব নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত সেই ব্যক্তি অথবা সম্পত্তির মালিক জীবিত আছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top