Second Marriage Laws after Divorce in Bengali: ভারতে বিবাহ বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিবাহ করার পক্রিয়া কি? | কিভাবে দ্বিতীয় বিবাহ করা যায়? | ভারতে বিবাহ বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিবাহ করার আইনি নিয়ম ও শর্ত | জানুন ভারতে দ্বিতীয় বিবাহের প্রক্রিয়া ও আইনি নিয়ম।
বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রতিনিয়ত বিবাদ, ঝগড়া ঝামেলা, লেগেই রয়েছে। সমাজে এই একটি সমস্যা দিনের পর দিন যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ এবং আরো অন্যান্য সমস্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত বিবাদ সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে এক দিন এই সম্পর্ক বিবাহ বিচ্ছেদের মতো মামলাতে গিয়ে পৌঁছায়।
বিবাহ বিচ্ছেদ হিন্দু বিবাহ অধিনিয়ম 1955 এর আইন জারি করা হয়েছে। আর তার সাথে সাথে বিশেষ বিবাহ অধিনিয়ম 1956 এর আইন ও জারি করা হয়েছে।
হিন্দু বিবাহ অধিনিয়ম পক্ষকার দের হিন্দু হওয়ার উপরে নির্ভর করে আর বিশেষ বিবাহ অধিনিয়ম দুটি আলাদা আলাদা ধর্মের মানুষদের দ্বারা বিবাহ করার উপরে নির্ভর করে হয়ে থাকে।
₹ হোম লোন • ₹ পার্সোনাল লোন • ₹ বাইক লোন • ₹ কার লোন • ₹ বিজনেস লোন • ₹ শিক্ষা লোন
যখন স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হওয়ার পর ডিভোর্স অথবা বিবাহবিচ্ছেদ নেওয়ার অথবা দেওয়ার মন হয়ে থাকে, তখন তাদের পরিবার আদালতের ডিক্রি নেয়ার প্রয়োজনীয়তা হয়।
বড় জেলাতে পরিবার আদালত আছে আর ছোট এলাকাতে জেলা বিচারালয় বা জেলা আদালত হল পরিবার আদালত, যা কিনা পরিবার আদালতের কাজ করে থাকে।
পরিবার আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের ডিক্রি দেওয়া হয়ে থাকে। বিবাহবিচ্ছেদ এর জন্য হিন্দু বিবাহ অধিনিয়ম এ ধারাতে কিছু আধারের উপরে নির্ভর করে যে কোনো একটি পক্ষ বিচারালয়ের সমক্ষে উপস্থিত হয়ে ডিভোর্স অথবা বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে পারেন।
যখন পক্ষ কার দের দ্বারা এমন বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়া হয়ে থাকে, তখন তার মামলা বিচারালয় এ চলতে থাকে। যা কিনা পক্ষ কার বিবাহবিচ্ছেদ চাইছেন সেটা প্রমাণ করা হয়ে থাকে।
যে সেই একটি পক্ষ কি আধারের উপর নির্ভর করে ডিভোর্স চাইছেন। সেই আধারের উপরে প্রমাণিত করতে হবে যে, ডিভোর্স যুক্তিযুক্ত কিনা না। না হলে ডিভোর্স অথবা বিবাহ বিচ্ছেদ করা কখনোই সম্ভব নয়।
তার সাথে সাথে অধিনিয়ম এর ধারা 13 (বি) তে মিউচুয়াল ডিভোর্স এর মতো ব্যবস্থা দেওয়া রয়েছে। যেখানে পক্ষ কার নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন।
আদালত দ্বারা যখন বিবাহ বিচ্ছেদের ডিক্রি দিয়ে দেওয়া হয়, তখন সব থেকে বড় প্রশ্ন এটা হয় যে, বিবাহের পক্ষকার এমন ডিগ্রী পাওয়ার পর কবে এবং কিভাবে দ্বিতীয় বিবাহ সম্পন্ন করতে পারেন ?
সুচিপত্র
কবে করা যেতে পারে দ্বিতীয় বিবাহ?
ডিভোর্সের ডিগ্রী পাওয়ার পর দ্বিতীয় বিবাহ সম্পর্কে সমস্ত রকম তথ্য হিন্দু বিবাহ অধিনিয়ম এ ধারা 15 তে পাওয়া যায়। যেখানে পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে যে, কোন ডিগ্রী এর আপিল করা যাবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত দুই পক্ষ নিজেদের ইচ্ছা অনুসারে আবার বিবাহ করছেন।
কোন মামলার ক্ষেত্রে আপিল করা যাবে না?
পরিবার আদালতের দ্বারা যখন হিন্দু বিবাহ অধিনিয়ম এর ধারা 13 (b) অনুসারে দুজনের মধ্যে সহমতির মাধ্যমে মাধ্যমে ডিভোর্স দেওয়া হয়ে থাকে, তখন ডিভোর্স দুজনের সম্মতিতে হয়ে থাকে। এই জন্য এটা মনে হয় যে, কোন পক্ষকার কোন রকমের আপিল চায় না, কেননা এই বিবাহবিচ্ছেদ দুজনের সম্মতিতে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ডিগ্রী এর আপিল হবে না। আর বিবাহের দুই পক্ষ, স্বামী এবং স্ত্রী নিজেদের স্বাধীনতা অনুসারে ডিক্রি পাওয়ার সাথে সাথে যেকোনো জায়গায় বিবাহ করতে পারবেন।
কত দিনের মধ্যে আপিল করা যেতে পারে?
আপিল করার সময়সীমা ৯০ দিন হয়ে থাকে। এই সময়সীমার মধ্যে অসন্তুষ্ট পক্ষ উচ্চবিচারালয় আপিল করতে পারেন। এই আপিল ৯০ দিনের মধ্যে জমা করতে হবে।
আর যদি ৯০ দিনের মধ্যে জমা করা না হয়ে থাকে, অথবা এর থেকে বেশি সময় পরেও যদি আপিল করা হয়, তাহলে সেই আপিল খারিজ করে দেওয়া হবে।
বিবাহ কতদিন পর্যন্ত করা যাবে না?
যখন পরিবার আদালতে বিবাহ যেকোনো একটি পক্ষ প্রতি স্বামী অথবা স্ত্রীর মধ্যে যেকোনো একজন ডিভোর্সের ডিক্রি দিয়ে থাকেন, আর এমন ডিগ্রী সম্বন্ধে অসন্তুষ্ট হয়ে দ্বিতীয় পক্ষ সুপ্রিমকোর্টের আপিল করে থাকেন, তখন এমন আপিল স্বীকার করে নেওয়া হয়, আর রায় ঘোষণার জন্য আগের তারিখ দেওয়া হয়।
এমন পরিস্থিতিতে মনে করা হয় যে, এখন আপিল পেন্ডিং আছে, আর এর যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনরকম রায় ঘোষণা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কোন পক্ষ সেটা স্বামী হতে পারে অথবা স্ত্রী, দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারবেন না।
যদি তা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিবাহ করা হয়ে থাকে, তখন সুপ্রিমকোর্টে এমন বিবাহকে শুন্য বিবাহ হিসেবে ভূষিত করা হয়। কেননা আপেল পেন্ডিং থাকাকালীন দ্বিতীয় বিবাহ করা যায় না।
যদি আপিল করা হয়ে যায়, তখনও বিবাহ করা যেতে পারে:
একটি পরিস্থিতি এমন ও আছে, যখন আপিল পেন্ডিং থাকাকালীনও বৈধ রূপে বিবাহ করা যেতে পারে। কিন্তু এমন বিবাহ, বিবাহের দুই পক্ষের মধ্যে সহমত, রেজিগনেশন অথবা পদত্যাগ হয়ে যাওয়ার পর করা যেতে পারে।
যেমন ধরুন কোন স্বামী আর স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ চলছে, পরিবার আদালত দুজনের মধ্যে যে কোন একজন কে ডিভোর্স দিয়ে দেয়, এমন ডিভোর্স পাওয়ার পর দ্বিতীয় অসন্তুষ্ট পক্ষ সুপ্রিমকোর্টের আপিল করে দেবেন।
এমন আপিল পেন্ডিং থাকাকালীন দ্বিতীয় বিবাহ করা যায় না, কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যে যদি স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে কোনরকম পদত্যাগ হয়ে যায়, তাহলে দুজনার রাস্তা আলাদা আলাদা হয়ে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে ডিভোর্স এর উপরের সহমতি জানিয়ে তখন উচ্চবিচারালয় এ একটি পদত্যাগের আর্জি পেশ করবে। এমন আরজি পেশ করার সাথে সাথেই দ্বিতীয় বিবাহ করা যেতে পারে।
এই সমস্ত বিষয়গুলি খেয়াল রাখা উচিত যে, যে কোনো দ্বিতীয় বিবাহ আপিল চলাকালীন করা যাবে না। যদি আপিল না করা হয়, তখন দ্বিতীয় বিবাহ করা যেতে পারে অথবা কোন নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আপিলের কোনরকম অধিকারই নেই, তখন ও দ্বিতীয় বিবাহ করা যেতে পারে।
কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত দ্বিতীয় পক্ষের কাছে আপিলের অধিকার রয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত দ্বিতীয় বিবাহ আপিলের সময় সীমা পর্যন্ত করা যাবে না। কিন্তু এই সময়সীমার পরে দ্বিতীয় বিবাহ করা যেতে পারে। এক কথায় বলা যায়, আপিলের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরেই দ্বিতীয় বিবাহ করা যেতে পারে।