কন্যাশ্রী প্রকল্প 2023: অবিবাহিতা ছাত্রীদের ২৫০০০ টাকার অনুদান আবেদন করুন

কন্যাশ্রী প্রকল্প অবিবাহিতা ছাত্রীদের ২৫০০০ টাকার অনুদান আবেদন করুন
কন্যাশ্রী প্রকল্পবিবাহিতা ছাত্রীদের ২৫০০০ টাকার অনুদান আবেদন করুন

প্রকল্পের নাম : কন্যাশ্রী প্রকল্প

দপ্তর বা বিভাগের নাম : শিশু ও নারী উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য : কন্যাশ্রী একটি আর্থিক উৎসাহদান প্রকল্প। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সূচনা হয় মূলত কন্যা সন্তানদের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে।

দরিদ্র মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া ও উচ্চশিক্ষায় ধরে রাখাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অবিবাহিতা ছাত্রীদের ( ১৩ থেকে ১৯–এর মধ্যে বয়স) আর্থিক সহায়তা করা হয়।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে দু-ধরনের আর্থিক সাহায্য পাওয়া যায়। বার্ষিক ৭৫০ টাকা বৃত্তি (K1) এবং ২৫,০০০ টাকার এককালীন অনুদান (K2)। উচ্চমাধ্যমিকের পরও কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুিবধা চালুরাখার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের।

নারীশিক্ষার উন্নয়নে নতুন দিশা কন্যাশ্রী প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় এই প্রকল্প চালু হয় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর তারিখে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র কন্যাশিশুদের শিক্ষায় উৎসাহিত করা হয়। ‘কন্যাশ্রী’ ভাতাপ্রাপ্ত ছাত্রীরা একটি নিজস্ব পরিচয়ে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে। তাদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট-এ টাকা সরাসরি জমা হয়।

kanyashree scheme logoমুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়নে অনেকগুলি যুগান্তকারী প্রকল্প চালু করেছেন। তাঁর স্বপ্নের প্রকল্পগুলির মধ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পটি অন্যতম। এই প্রকল্পের নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। লোগোটিও তিনিই ডিজাইন করেছেন।

১৮ বছর পর্যন্ত মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক গঠন চলতে থাকে। ভবিষ্যতে যাতে তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে তাই তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে এই সময়ই উপযুক্ত।

‘কন্যাশ্রী’-র মেয়েদের নানা প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তাদের তৈরি পণ্য বিক্রিরও ব্যবস্থা হচ্ছে। বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে ‘সুকন্যা’ নামে তাদের একটি স্থায়ী বিপণি দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন ক্রীড়া ও আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা জুড়ে। ‘কন্যাশ্রী ফুটবল প্রতিযোগিতা’-ও আয়োজিত হচ্ছে। তাদের স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার এবং জীবনের সমস্যাগুলোকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য কন্যাশ্রী ক্লাব, কন্যাশ্রী সংঘ ও কন্যাশ্রী যোদ্ধা গড়ে তোলা হচ্ছে। এই প্রকল্প কন্যাশিশুর জীবনকে আলাদা মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

জীবনের পরিপূর্ণবিকাশের সুযোগ করে দিয়েছে তাদের। কন্যাশ্রী-র মেয়েরাই গ্রামে গ্রামে সঠিক বয়সে বিয়ে দেওয়ার কথা বলছে, স্কুল -ছুট মেয়েদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনছে, মেয়েদের পড়াশোনা করানোর সুফল অভিভাবকদের বোঝাচ্ছে এবং আলাপ-আলোচনা ও নাটকের মাধ্যমে তারা জনমতও তৈরি করছে।

এর ফলে নারী শিক্ষার হার ও সঠিক বয়সে বিয়ের হার দুটিই বৃদ্ধি পাচ্ছে, কমছে লিঙ্গ-বৈষম্যও। নারীরা স্ব-নির্ভরতার পথে এগোচ্ছে। সার্বিক উন্নয়নে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে। ৪০ লক্ষ ছাত্রী এই রাজ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে (১৯-০৫–২০১৭ পর্যন্ত)।

সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জ কন্যাশ্রী প্রকল্পকে বিশ্বসেরা প্রকল্পের শিরোপা দিয়েছে। বিশ্বের ৫৫২টি প্রকল্পের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রকল্প হিসেবে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘২০১৭ জন পরিষেবা পুরস্কার’ অর্জন করেছে এই প্রকল্প।

২৩ জুন, ২০১৭ তারিখে রাষ্ট্রপুেঞ্জরজন পরিষেবা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ডস–এর হেগ শহরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

কারা আবেদন করতে পারবে : 

সরকার স্বীকৃত নিয়মিত বা সমতুল মুক্ত বিদ্যালয়ে বা সমতুল বৃত্তিমূলক/কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠরতা বলমাত্র অবিবাহিতা মেয়েরাই আবেদন করতে পারবে।

বার্ষিক ভাতার জন্য K-1 ফর্মে এবং এককালীন অনুদানের জন্য K-2 ফর্মে আবেদন করতে হবে। দুই ক্ষেত্রেই আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে থাকতে হবে এবং আবেদনকারীকে যে কোনও রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে এই প্রকল্পের জন্য একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

বার্ষিক ৭৫০ টাকা হারে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বয়স হতে হবে ১৩ থেকে ১৮ বছর।

এককালীন ২৫,০০০ টাকা অনুদান হিসেবে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যালয়, কলেজ বা বৃত্তিমূলক/কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠরতা অবিবাহিতা মেয়েদের, আবেদন করার সময়
যাঁদের বয়স ১৮ বছরের বেশি এবং ১৯ বছরের কম।

যোগাযোগ : বিদ্যালয় বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top