অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং দিয়ে টাকা উপার্জন করবেন কিভাবে? পদ্ধতি জানুন

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন।

বর্তমান সময় এখন ইন্টারনেটের সময়, আর এই ইন্টারনেট কে কাজে লাগিয়ে অনেকে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করছেন। তবে এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখান থেকে আপনি অনলাইনে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তার মধ্যে একটি জনপ্রিয় টাকা উপার্জন করার সোর্স হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে, আর এর থেকে কিভাবে টাকা উপার্জন করা যায় ? তো চলুন আজকে সেই বিষয়ে জানা  যাক।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং দিয়ে টাকা উপার্জন করবেন কিভাবে? পদ্ধতি জানুন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং দিয়ে টাকা উপার্জন করবেন কিভাবে? পদ্ধতি জানুন

আমরা সবাই জানি আজকাল কম্পিউটার-ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, অনলাইন শপিং, অনলাইন মার্কেটিং এর সময়। আর এই সময়ে অনলাইনে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন আপনি অনেকটা কম সময়ে আর একেবারে ঘরে বসে।

এছাড়া যারা অনেকদিন আগে থেকে অনলাইন বিজনেস করছেন তাদের অবশ্যই জানা থাকবে যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আসলে কি। অনেক ব্লগার তাদের ব্লগ তে এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবহার করে থাকেন যার ফলে তারা এর থেকে অনেক বেশি উপার্জন করতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) হল এমন একটি রাস্তা যার মধ্যে দিয়ে একজন ব্লগার কোন একটি কোম্পানির প্রোডাক্ট কে তার নিজের ওয়েবসাইট এর মধ্যে দিয়ে বিক্রি করার উপরে কমিশন পেয়ে থাকেন।

যাই কমিশন মিলে থাকুক না কেন প্রোডাক্ট এর উপরে সেটা নির্ভর করে থাকে। যেমন ধরুন সেই প্রোডাক্টটা কেমন ধরনের হবে, যেমন ফ্যাশন অথবা লাইফ-স্টাইল ক্যাটাগরির উপরে বেশি পরিমাণে আর ইলেকট্রনিকস প্রোডাক্ট এর উপরে কম কমিশন পাওয়া যায়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়?

যেকোনো প্রডাক্ট কে নিজের ওয়েবসাইট এর মধ্যে দিয়ে প্রমোশন করার জন্য আপনার ওয়েব সাইট অথবা ব্লগে বেশি পরিমাণে ট্রাফিক হওয়াটা খুবই জরুরী। কম করে পাঁচ হাজার (৫,০০০) ভিজিটর প্রতিদিন অনুসারে হতে হবে। যদি আপনার ওয়েবসাইট নতুন হয় আর সেখানে খুবই কম ভিজিটর থাকেন, তাহলে প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন আপনার ওয়েবসাইটে লাগানোর ক্ষেত্রে আপনি বেশি উপার্জন করতে পারবেন না।

আর এই জন্য সবথেকে ভালো হবে যে, আপনি অ্যাফিলিয়েট প্রডাক্ট কে তখনই আপনার ব্লগে লাগাতে পারেন যখন আপনার ব্লগে ভিজিটর অনেক বেশি হতে থাকবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকতেই পারে। এক্ষেত্রে এই প্রশ্ন থাকে যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে আর এটা জানা জরুরী যে, অনলাইন ফিল্ড এর সাথে জড়িত এই প্রশ্ন এর উত্তর জানাটা জরুরী, তাও নিজের অ্যাফিলিয়েট স্টার্ট করার ইচ্ছা থাকলে। তখন কিন্তু আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে সেটা অবশ্যই জানতে চাইবেন, তাই না !

যদি কোন প্রোডাক্ট বেস্ড কোম্পানি অথবা অরগানাইজেশন তাদের নিজেদের প্রডাক্ট এর বিক্রি বাড়াতে চান তখন তাদেরকে সেই প্রোডাক্ট গুলি কে প্রমোট করতে হয়। বিশেষ করে এই জন্য তাদের নিজস্ব অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম শুরু করতে হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ব্যবসা কমিশন বেস্ড হয়, যখন কোন অন্য ব্যক্তি অথবা কোন ব্লগার বা ওয়েবসাইট ওনার  এই প্রোগ্রাম এ জয়েন করে থাকেন, তখন এই প্রোগ্রাম শুরু করা কোম্পানি অথবা অরগানাইজেশন সেটিকে নিজের ব্লগ অথবা ওয়েবসাইট এর উপরে তাদের প্রোডাক্ট এর প্রমোট করার জন্য কোন ব্যানার অথবা লিংক ইত্যাদি প্রদান করে থাকে। এর পিছনে সেই ব্লগারকে নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইটের উপর সেই লিঙ্ক অথবা ব্যানার আলাদা আলাদা ভাবে লাগাতে হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?

কেননা সেই ব্লগার অথবা ওয়েবসাইট ওনার কে সাইট তে অনেক ভিজিটর প্রতিদিন এসে থাকেন, এই জন্য এটা সম্ভব যে, তাদের মধ্যে কিছু ভিজিটর শো করা অফার এর উপরে ক্লিক করবেন, তখন সেই প্রোডাক্ট বেস্ড কোম্পানি গুলির ওয়েবসাইটে পৌঁছে যাবেন আর কোন প্রোডাক্ট যদি কিনে থাকেন অথবা কোন সার্ভিস কে এর জন্য সাইন আপ করে থাকেন তাহলে তার পরিবর্তে সেই কোম্পানি অথবা অরগানাইজেশন সেই ব্লগারকে সেই প্রোডাক্ট ও সার্ভিস এর পরিবর্তে কমিশন প্রদান করে থাকে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্বন্ধিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা: 

এই মার্কেটিং এ কিছু এমন শর্ত ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে এই বিষয়ে আমাদের সকলের জানা জরুরী, তো চলুন তাহলে এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে জানা যাক:- 

১) আফিলিয়েটস (Affiliates):

অ্যাফিলিয়েটস তাদেরকে বলা হয়, যে ব্যাক্তি আফিলিয়েট প্রগ্রাম তে জয়েন করে থাকেন, তারা প্রডাক্ট কে নিজের সোর্স যেমন ধরুন ব্লগ অথবা ওয়েবসাইট এর উপরে প্রমোট করে থাকেন। এই ব্যাক্তি যে কেউ হতে পারেন।

২) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস (Affiliate Marketplace):

এমন কিছু কোম্পানি রয়েছে যা কিনা আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে থাকে, তাদেরকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস বলা হয়।

৩) অ্যাফিলিয়েট আইডি (Affiliate ID):

এটি হলো একটি ইউনিক আইডি যা কিনা সাইন আপ করার পরেই পাওয়া যায়। অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর দ্বারা প্রত্যেক অ্যাফিলিয়েট কে একটি ইউনিক আইডি দেওয়া হয়।

যা কিনা বিক্রি করার ক্ষেত্রে, তথ্য জোগাড় করার জন্য অনেকখানি সহযোগিতা করে থাকে। এই আইডির সাহায্যে আপনি আপনার অ্যাফিলিয়েট একাউন্টে লগইন করতে পারবেন।

৪) অ্যাফিলিয়েট লিংক (Affiliate Link):

এফিলিয়েট লিংক সেই লিংক কে বলা হয় যা কিনা অ্যাফিলিয়েটস কে প্রোডাক্ট প্রমোশন করার জন্য প্রোভাইড করা হয়। এই লিঙ্ক এর উপর ক্লিক করেই ভিজিটররা কোন প্রোডাক্ট এর ওয়েবসাইটের উপরে পৌঁছে থাকেন, যেখানে ভিজিটর কোন প্রোডাক্ট কিনতে পারেন। এই লিংকের দ্বারাই এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালানো সেলকে ট্র্যাক করা যেতে পারে।

৫) কমিশন (Commission):

একটি সাকসেসফুল সেলিং হয়ে যাওয়ার পর যে অ্যামাউন্ট ওই ব্লগার অথবা কোন সেলিং করিয়ে থাকেন এমন ব্যক্তি যেমন ধরুন অ্যাফিলিয়েট তাকে কমিশন হিসেবে এই এমাউন্ট অ্যাফিলিয়েটের প্রত্যেক বিক্রির হিসাব অনুসারে প্রদান করা হয়ে থাকে।

এই সেল এর কিছু পার্সেন্ট হতে পারে অথবা প্রথম থেকেই কোনরকম নিশ্চিত অ্যামাউন্ট, যেমন কি ট্রাম এন্ড কন্ডিশন প্রথমেই মেনশন করা থাকে, যে কতটা পরিমাণ কমিশন পাওয়া যেতে পারে।

৬) লিংক ক্লকিং (Link Clocking):

সাধারণত এফিলিয়েট লিংক অনেক বড় দেখায় যা কিনা দেখতে অনেকটা আজব লাগে, এর জন্য এমন লিংকে ইউ আর এল শর্টনার এর ব্যবহার করে ছোট করা হয় যাকে লিংক ক্লকিং বলে।

৭) অ্যাফিলিয়েট ম্যানেজার (Affiliate Manager):

কিছু অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ অ্যাফিলিয়েট এর সাহায্যের জন্য আর তাদের সঠিক টিপস দেওয়ার জন্য কিছু ব্যাক্তি নিযুক্ত করা হয়ে থাকে, তাদেরকে অ্যাফিলিয়েট ম্যানেজার বলা হয়।

৮) পেমেন্ট মোড (Payment Mode):

পেমেন্ট পাওয়ার পদ্ধতিকে পেমেন্ট মোড বলা হয় এর অর্থ হল সেই মাধ্যম এর দ্বারা আপনি আপনার কমিশন পেতে পারেন বা আপনাকে কমিশন দেওয়া হবে। আলাদা আলাদা অ্যাফিলিয়েট আলাদা আলাদা মোডস অফার করে থাকে, যেমন ধরুন চেক, wire ট্রানস্ফার, পে-পল ইত্যাদি।

৯) Payment Threshold: 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অ্যাফিলিয়েটস কে তখনই কিছু কমিশন প্রদান করা হয় যখন সে কিছু মিনিমাম সেল করবেন। এই সেল করার পর পেমেন্ট আর্ন করার যোগ্য হয়ে উঠবেন, আর একেই Payment Threshold বলা হয়। আলাদা আলাদা প্রোগ্রামের Payment Threshold এর অ্যামাউন্ট আলাদা আলাদা হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা উপার্জন করবেন কিভাবে?

বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে অনেক ব্লগার জড়িত রয়েছেন, আর তা থেকে বেশ ভালো মতো উপার্জন করে চলেছেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ব্লগ থেকে টাকা উপার্জন করার সবথেকে ভালো পদ্ধতি।অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে উপার্জন করার জন্য আমাদের যেকোনো একটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ গিয়ে রেজিস্টার করতে হবে।

রেজিস্টার করার পর তাদের দ্বারা দেওয়া বিজ্ঞাপন আর প্রোডাক্ট এর লিঙ্ক কে আমাদের নিজস্ব ব্লগ এর উপরে যুক্ত করতে হবে। আমাদের ব্লগে আশা যে কোন ভিজিটর যখন সেই বিজ্ঞাপন এর উপরে ক্লিক করবেন, প্রোডাক্ট কিনবেন তখন আমাদের কোম্পানীর ওনার থেকে সেই প্রোডাক্টের কমিশন দেওয়া হবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা উপার্জন করবেন কিভাবে?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা উপার্জন করবেন কিভাবে?

এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে যে, অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ কোন কোম্পানি অফার করে থাকে ? এর উত্তরে বলা যেতে পারে ইন্টারনেট এর উপরে এমন অনেক কোম্পানি আছে যা কিনা অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে। তাদের মধ্যে কিছু এমনও রয়েছে যা কিনা খুবই ফেমাস যেমন ধরুন অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিল, গোড্যাডি ইত্যাদি।

এমনভাবে সমস্ত কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে, যেখানে আপনি শুধুমাত্র সাইনআপ অথবা রেজিস্টার করে কোম্পানির সাথে যুক্ত হতে পারেন এবং তাদের প্রডাক্ট কে সিলেক্ট করে আপনার ব্লগের উপরের লিঙ্ক বা এড কে যুক্ত করতে পারেন।

এর মধ্য দিয়ে প্রচুর টাকা উপার্জন করতে পারেন। তাছাড়া সাইনআপ অথবা রেজিস্টার করার জন্য কোম্পানিকে আমাদের কোনরকম Pay করতে হয়না।

কোন কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর সার্ভিস দেয় এর সন্ধান আপনি গুগল এ সার্চ করেও জানতে পারেন। যেমন ধরুন কোন একটি কোম্পানির নাম লিখুন যেমন অ্যামাজন আর সেই নামের সাথে অ্যাফিলিয়েট লিখুন তারপর গুগোল এ সার্চ করুন।

যদি সেই কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে থাকে, তাহলে আপনাকে সেই কোম্পানির লিংক এখান থেকে প্রাপ্ত হবে। আর আপনি খুবই সহজ ভাবেই সেই কোম্পানির সাথে যুক্ত হতে পারবেন। কিন্তু যে কোন কোম্পানির সাথে যুক্ত হওয়ার আগে সেই কোম্পানির টার্মস এন্ড কন্ডিশন গুলি অবশ্যই পড়ে নেবেন।

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে পেমেন্ট কিভাবে পাওয়া যায়?

এটি আলাদা আলাদা অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর উপরে নির্ভর করে থাকে। যে তারা অ্যাফিলিয়েটস দের পেমেন্ট দেওয়ার জন্য কোন মেথড এর উপরে ভরসা করতে পারেন। কিন্তু প্রায় সমস্ত প্রোগ্রাম পেমেন্টের জন্য ব্যাংক ট্রান্সফার অথবা পে-পল এর ব্যবহার অবশ্যই করে থাকে। অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ এমন কিছু terms use হয় যেগুলির বিক্রির  উপরে আফিলিয়েটস দের কমিশন দেওয়া হয় যেমন:-

১) CPM (Cost Per 1000 impression):

এটি একটি অ্যামাউন্ট যা কিনা প্রোডাক্ট এর মালিক দ্বারা অ্যাফিলিয়েট অথবা প্রডাক্ট কে যে ব্যাক্তি প্রমোট করছেন তাকে তার ব্লগের পেজ এর উপরে লাগানো সেই প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনের উপর 1000 ভিউজ হয়ে থাকলে কোম্পানির মালিক অ্যাফিলিয়েট কে সেই প্রোডাক্ট এর উপরে কমিশন দিয়ে থাকে।

২) CPS (Cost Per Sale):

এই এমাউন্ট অ্যাফিলিয়েট তখনই পাবেন যখন তার ব্লগের ভিজিটর প্রডাক্ট কে কিনে থাকবেন, যতটা পরিমাণ লোক প্রোডাক্ট কিনবেন তার উপর নির্ভর করে প্রত্যেক এক একটি পারচেজ এর উপরে অ্যাফিলিয়েট কে কমিশন দেওয়া হয়।

৩) CPC (Cost Per Click):

অ্যাফিলিয়েট ব্লগের উপরে লাগানো বিজ্ঞাপন টেক্সট ব্যানার এর উপরে ভিজিটর দের প্রত্যেক ক্লিক এর উপরে কমিশন পাওয়া যায়।

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে পেমেন্ট কিভাবে পাওয়া যায়?
অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে পেমেন্ট কিভাবে পাওয়া যায়?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং গুগল এডসেন্স (Google AdSense) এর ব্যবহার আমরা একসাথে করতে পারি কি?

এই প্রশ্নের উত্তর হলো হ্যাঁ, আপনি আফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) থেকে বেশি পরিমাণে উপার্জন করতে পারবেন গুগল এডসেন্স এর তুলনায়। খুবই কম সময়ের মধ্যে আর এই গুগল এডসেন্স এর টার্ম অফ সার্ভিস এর বিরুদ্ধে একেবারেই নয় কেননা এটি সম্পূর্ণরূপে Legal, আপনি অনায়াসেই আপনার ব্লগে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং গুগল এডসেন্স এর ব্যবহার একসাথে করতে পারবেন।

গুগোল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার জন্য আমাদের যতটা পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয় সে ক্ষেত্রে কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ততটা পরিমাণ পরিশ্রম করার প্রয়োজন পড়ে না।

আর এই জন্যই বেশিরভাগ ব্লগার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা উপার্জন করা বেশি পছন্দ করে থাকেন। যতটা পরিমাণ প্রোডাক্ট আপনার ব্লগ থেকে বিক্রি হবে  ততটাই কিন্তু আপনি উপার্জন করতে পারবেন।

আপনার ব্লগ এর সাথে সম্বন্ধিত প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন যদি আপনি লাগিয়ে থাকেন তাহলে আপনি আরও বেশি উপার্জন করতে পারবেন। এর মানে হল যদি আপনার ব্লগের কনটেন্ট গেজেট এর সাথে সম্বন্ধিত হয়, তাহলে সেই গ্যাজেট সম্বন্ধিত বিজ্ঞাপন লাগাবেন। এর থেকে আপনার ভিজিটর বিজ্ঞাপন এর উপরে ক্লিক করার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন আর আপনি আরো বেশি উপার্জন করতে পারবেন।

জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট কোনগুলি?

(Popular Affiliate Marketing Sites) ইন্টারনেটের উপরে এমন অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোম্পানি আপনি পাবেন, কিন্তু আজকে আপনি কিছু জনপ্রিয় আর খুবই ভালো কোম্পানির সম্পর্কে জানবেন যা কিনা আপনাকে অনেক বেশি কমিশন প্রদান করে থাকবে।

যেকোনো অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম তে জয়েন করার আগে আপনি সেই প্রোগ্রামের সম্বন্ধিত সমস্ত রকম তথ্য আগে থেকেই জেনে নেবেন। যদি আপনি কোন কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম এর বিষয়ে জানতে চান তাহলে আপনি যে কোন সার্চ ইঞ্জিন এর উপরে কোম্পানির নাম এর আগে অ্যাফিলিয়েট লিখে তারপর সার্চ করুন। যদি সেই কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থাকে তো সার্চ রেজাল্টে শো করবে।

কিছু Best Affiliate Marketing Sites: 

  • অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট (Amazon Affiliate Program)
  • ফ্লিপকার্ট অ্যাফিলিয়েট (Flipkart Affiliate Program)
  • স্নাপডিল আফিলিয়েট (Snapdeal Affiliate Program)
  • কমিশন জংশন (Commission Junction)

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাইটে কিভাবে জয়েন করবেন?

যদি আপনি কোন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটে জয়েন করতে চান, তাহলে আপনি খুব সহজেই সেখানে জয়েন করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে। যেগুলোর মধ্যে দিয়ে খুব সহজেই অ্যাফিলিয়েট ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

এখানে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট কিভাবে জয়েন করবেন সে বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। তবে সবার প্রথমে আপনি যে কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ জয়েন করতে চান তার অ্যাফিলিয়েট পেজ এ যেতে হবে।

যেমন ধরুন যদি আপনি অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট জয়েন করতে চান সেখানে আপনাকে একটি নিউ একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। যেখানে আপনাকে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জিজ্ঞাসা করা হবে যেমন ধরুন:-

  • আপনার নাম
  • আপনার ইমেইল আইডি
  • আপনার ঠিকানা
  • মোবাইল নাম্বার
  • প্যান কার্ড ডিটেল
  • ব্লগ / ওয়েবসাইট / ইউ আর এল যেখানে আপনি কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রমোট করবেন।
  • পেমেন্ট ডিটেলস যেখানে আপনি আপনার সমস্ত উপার্জনের টাকা প্রাপ্ত করতে পারেন।

সমস্ত তথ্য ঠিকঠাক ফিলাপ করার পর যখন আপনি রেজিস্টার করবেন তো কোম্পানি আপনার ব্লগকে চেক করবে তারপরে আপনাকে কনফার্মেশন মেইল পাঠাবে। রেজিস্টার করে আপনি যখন লগইন করবেন তখন আপনার সামনে একটি ড্যাশবোর্ড ওপেন হবে।

যেখানে আপনার প্রোডাক্ট কে নির্বাচন করার আর তার অ্যাফিলিয়েট লিংক কপি করতে হবে আর সেগুলি আপনার ব্লগ, সাইট অথবা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে হবে। যেখান থেকে লোক সেই প্রোডাক্ট কিনবেন আর আপনি অনায়াসেই টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর নিচে দেওয়া হল: 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য ব্লগ অথবা ওয়েবসাইট হওয়া টা কি জরুরি?

এক্ষেত্রে জরুরি তো নয়, কিন্তু যদি আপনার কাছে এমন কোন ব্লগ অথবা ওয়েবসাইট থাকে তাহলে এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা উপার্জন করার সবথেকে বড় মাধ্যম পাবেন আপনি। কেননা আপনার ভিজিটর আনার কোনরকম প্রয়োজন পড়বে না।

কেননা সেই ভিজিটর আপনা থেকেই আপনার ব্লগে আগে থেকেই এসে থাকেন, তাই অটোমেটিক ভাবে আপনি এই ব্লগে যে বিজ্ঞাপন অথবা প্রোডাক্ট লাগাবেন সেটা সেই ভিজিটর সহজেই দেখতে পাবেন।

সমস্ত কোম্পানি অথবা অরগানাইজেশন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে কি?

এটা বলা সহজ নয় যে, সমস্ত কোম্পানির  এই প্রোগ্রাম অফার করে থাকে কিনা। কিন্তু প্রায় সমস্ত বড় বড় কোম্পানি এই অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে থাকে।

যদি আপনি কোন কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর বিষয়ে জানতে চান, তাহলে আপনাকে শুধুমাত্র কোম্পানি নাম, তার সাথে আফিলিয়েট লিখে সার্চ করতে হবে। আর সহজেই জানতে পারবেন সেই কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট সম্পর্কে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত হতে গেলে কোন বিশেষ কোর্স ইত্যাদি করতে হবে কি?

একেবারেই নয়, আপনাকে শুধুমাত্র এই সম্বন্ধে কিছু বিষয় এর ক্ষেত্রে নলেজ থাকতে হবে। ইন্টারনেটে এমন অনেক ওয়েবসাইট আর ব্লগ থেকে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর বিষয়ে ভালোমতো ধারণা করতে পারবেন। আর তা থেকে অনায়াসেই অ্যাফিলিয়েট মারকেটিং থেকে উপার্জন করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম জয়েন করার জন্য কোন ফিস লাগে কি?

এই কথা আগে আলোচনা করা হয়েছে, তবে প্রায় সমস্ত অ্যাফিলিয়েট  প্রোগ্রাম ফ্রি তেই জয়েন করিয়ে থাকে। যদি কোন কোম্পানি আপনার থেকে টাকা চেয়ে থাকে তো সে ক্ষেত্রে সেই কোম্পানিতে জয়েন না করাই ভালো। কেননা এটি সবসময়ের জন্য ফ্রি হয়।

আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে কত টাকা উপার্জন করতে পারি?

এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে আপনার উপরে, যে আপনি কতটা পরিমান ভিজিটর আপনার প্রোগ্রামের দিকে আকর্ষিত করতে পারছেন। আর কতটা পরিমাণ সেই প্রোডাক্ট সেল করতে পারছেন।

যতটা পরিমাণ শেয়ার করতে পারবেন সেই হিসাবে আপনি সেই প্রোডাক্টের একটা পার্সেন্টেজ অনুযায়ী কমিশন পাবেন। এর জন্য যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেটি হলো আপনার ভিজিটর এর আপনার উপরে বিশ্বাস থাকতে হবে অনেকখানি।

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর পেমেন্ট ঠিকভাবে না আসার ক্ষেত্রে কি করা উচিত?

যদি আপনার পেমেন্ট নিয়ে কোন রকম সমস্যা হয়, তাহলে এই বিষয়ের জন্য আপনাকে সেই অ্যাফিলিয়েট কোম্পানির সাপোর্ট টিম এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

কেননা অনেকবার এমন কিছু কোম্পানি পলিসি চলার সময় অ্যাফিলিয়েটের পেমেন্ট কে বন্ধ করে রাখা হয়। তবে এই বিষয়ের ক্ষেত্রে বেশি চিন্তা করার কারণ নেই, কেননা আপনার পেমেন্ট দেরি হলেও আপনার কাছে ঠিকই পৌঁছে যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top