পুলিশের বিরুদ্ধে কিভাবে অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে? জানুন আইন

পুলিশ সমাজে ঘটা বিভিন্ন রকমের অপরাধের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। জনসাধারণকে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। এছাড়া পুলিশের গঠন সেজন্যই করা হয়ে থাকে, যাতে জনতাকে রক্ষা করা যেতে পারে। যেমন একজন সৈনিক বর্ডারে দেশের সুরক্ষা করে থাকেন, তেমনই কিন্তু পুলিশ বর্ডারের ভিতরে নাগরিকদের অধিকার এর সুরক্ষা করে থাকেন।

ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে পুলিশকে সীমিত শক্তি অথবা ক্ষমতা দেওয়া হয়। যেটা রাজ্য দ্বারা দেওয়া হয়ে থাকে। তার ফলে তার অধিকারের রক্ষা করা যেতে পারে, রাজ্যের এটি কর্তব্য হয়ে থাকে যে, নাগরিকদের রক্ষা করা আর এমন রক্ষা করার উদ্দেশ্যে পুলিশ এবং পুলিশ বাহিনী গঠন করা হয়েছে।

পুলিশ সমাজের শান্তি ব্যবস্থা আর আইনের নিয়ম বজায় রাখার প্রচেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু পুলিশ ও কিন্তু একজন মানুষ, তাই মানুষের দ্বারা ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। আর যদি কোনো পুলিশ নিয়মের বাইরে কাজ করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আইন ও সেই পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।

এমন অনেক মামলাতে যেখানে পুলিশ দ্বারা কোন অনুচিত ব্যবহার করা হয়েছে, যেটা কখনোই আইনসংগত নয়। সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশ সিংহ মামলাতে 2006 সালে এই বিষয়ের উপরে আইনি কার্য হয়েছে, যেখানে পুলিশের অভিযোগ দায়ের করার মধ্য দয়ে আইন একটি অন্য দিশা নির্দেশ দিয়েছে।

পুলিশের বিরুদ্ধে কিভাবে অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে?
পুলিশের বিরুদ্ধে কিভাবে অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে?

ভারতের উচ্চতম বিচারালয় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা মামলা তে একটি অনন্য দিশা নির্দেশ প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে যে, পুলিশের অনৈতিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কিভাবে এবং কোথায় কোন অভিযোগ করা যেতে পারে।

এছাড়া ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে কোন ব্যক্তি বিশেষ রূপে যে কোন অপরাধ থেকে কখনোই ছাড় পেতে পারেন না। যদি কোন ব্যক্তি নিজের কর্তব্য থেকে সরে গিয়ে কোন কাজ করে থাকেন তখন কিন্তু তাকে দণ্ডিত করার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে অথবা তাঁকে শাস্তি প্রদান করা যেতে পারে।

পুলিশের কাজ হলো অপরাধকে থামানোর আর এই অপরাধ থামানোর জন্য পুলিশ বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু পুলিশের এই ব্যবহার নিষ্পক্ষ হতে হবে। পুলিশের কাছে অনুসন্ধান করার ক্ষমতা আছে আর এমন অনুসন্ধান করে এটা জানতে হবে যে কোন ব্যক্তির কোন অপরাধের সাথে যোগাযোগ আছে কি নেই।

যে ব্যক্তি সম্বন্ধে পুলিশ এর এটা মনে হতে পারে যে, কোন অপরাধের ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির কোনরকম ভূমিকা নেই, তাহলে পুলিশ এমন ব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়ে থাকেন।

আর যদি পুলিশ কোন ব্যক্তিকে অনাবশ্যক রূপে বিরক্ত করে থাকেন, কোন ব্যক্তির অভিযোগ দায়ের না করে থাকেন, ঘুষ নিয়ে থাকেন, তখন কিন্তু সেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে। পুলিশ হলো একটি শব্দ, কিন্তু পুলিশ এ অনেক লোক থাকেন।

এটা কখনোই অবশ্যম্ভাবী নয় যে, সমস্ত পুলিশ একই রকম হতে পারেন। যেকোনো ব্যক্তি দ্বারা যে কোনো সময় ঘুষ নেওয়া যেতে পারে, এই সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উদ্দেশ্যে ভারতের উচ্চতম বিচারালয় বেশ কিছু ব্যবস্থা দিয়ে রেখেছে।

পুলিস কম্প্লেন্ট অথরিটি:

প্রকাশ সিংহ মামলাতে ভারতের উচ্চতম বিচারালয় তে প্রত্যেক রাজ্যের জন্য একটি পুলিস কম্প্লেন্ট অথরিটি গঠন এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এমন অথরিটি স্বতন্ত্র সংস্থা হয়ে থাকে। এই অথরিটি রাজ্য সরকারের অধীনে থাকে না, আর পুলিশ এর কোনরকম ভূমিকা নেই এই অথরিটিতে অথরিটির অধ্যক্ষতা বিচারপতি করে থাকেন।

যখন কোন ব্যক্তি কোন পুলিশ আধিকারিক দ্বারা অহেতুক বিরক্ত হয়ে থাকেন, কোন মামলাতে মিথ্যে ভাবে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়ে থাকে এবং সেই ব্যক্তির করা অভিযোগ দায়ের যদি না করা হয়ে থাকে, তার বদলে যদি ঘুষ চেয়ে থাকেন বা বেশকিছু টাকা চেয়ে থাকেন, সেই পুলিশ আধিকারিক কোন এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করা হচ্ছে না, যে ব্যাক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর রিপোর্ট করা হয়েছে।

আবার বলা যেতে পারে কোন ব্যক্তিকে কোন মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে চালান পেশ করা হয়নি, এমন অনেক আচরণ রয়েছে যেগুলো একজন পুলিশ অফিসার আধিকারিক এই সমস্ত বিষয় থেকে সরে থাকতে হবে, কিন্তু যদি সেই পুলিশ নিজের কর্তব্য এবং সিদ্ধান্তের উপরে দাঁড়িয়ে না থাকতে পারেন এবং কোন পুলিশ আধিকারিক এই সমস্ত নিয়ম এর বিপরীতে যদি গিয়ে কোন কাজ করে থাকেন, তখন পুলিশ অভিযোগ অথরিটিতে সেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

কে করতে পারবেন এমন অভিযোগ?

যে কোন ব্যাক্তি যিনি কিনা পুলিশ আধিকারিক দ্বারা এই সমস্ত বিষয়ে জন্য বিরক্ত হয়ে রয়েছেন, সেই ব্যক্তি অথরিটির সমক্ষে সেই পুলিশ আধিকারিক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। এমন অভিযোগ যেটি একটি লিখিত আবেদন পত্র হিসাবে করতে হবে। একজন পীড়িত ব্যক্তির পরিবর্তে সেই ব্যক্তির পরিবারের আরও অন্যান্য সদস্যরাও কিন্তু এমন অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

অথরিটি কে এই বিষয়ে জানানো যেতে পারে যে, কিভাবে সেই ব্যক্তির উপরে অন্যায় ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, আর তাকে বিরক্ত করা হয়েছে। তার সাথে সাথে কোন কাজ করার জন্য তার কাছে টাকা অথবা ঘুষ চাওয়া হয়েছে।

পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ: 

পুলিস কম্প্লেন্ট অথরিটির সমক্ষে যেকোনো পুলিশ আধিকারিক এর অভিযোগ দায়ের করার জন্য অভিযোগ কারী কে এর কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকাটা প্রয়োজন। না হলে এমন অভিযোগ কিন্তু দায়ের করা সম্ভব হবে না। যদি কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ উপলব্ধ না থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তির অভিযোগকে খারিজ করে দেওয়া হয়।

এমন সাক্ষ্য-প্রমাণের ক্ষেত্রে সাক্ষী এবং বিভিন্ন রকমের নথি অথবা কাগজপত্র মূলক সাক্ষ্য-প্রমাণ দুটোই কিন্তু সামিল থাকে। যেকোনো সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে কিন্তু প্রমাণিত করা যেতে পারে যে, কোন পুলিশ আধিকারিক এর আচরণ অনৈতিক ছিল।

পরিনাম কি হতে পারে?

যখন কোন পুলিস কম্প্লেন্ট অথরিটির সমক্ষে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়, সেই অভিযোগ এর উপরে অনুসন্ধান এর মধ্যে দিয়ে অথরিটি এটা দেখে থাকে যে, যে এমন কোন প্রমানপত্র উপলব্ধ আছে কিনা, যার মধ্যমে এটা প্রমাণিত হতে পারে যে, কোনো পুলিশ আধিকারিক এর আচরণ অনৈতিক ছিল। তখন অথরিটি সেই পুলিশ আধিকারিক এর বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়ার মধ্যে দিয়ে এফ আই আর (F.I.R.) দায়ের করা পর্যন্ত আদেশ দিয়ে থাকে।

পুলিস আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করার সাথে সেই পুলিশ আধিকারিক এর সাসপেন্ড করার আদেশ ও দেওয়া যেতে পারে। যেখানে একজন পুলিশ আধিকারিক কে নিজের অনৈতিক আচরণের কারণে নিজের পদ থেকে রিজাইন ও দিতে হবে।

কোন রাজ্য তে আছে পুলিস কম্প্লেন্ট অথরিটি?

ভারতের উচ্চতম বিচারালয় 2006 থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, সমস্ত রাজ্যেই পুলিশ কমপ্লেন্ড অথরিটির গঠন করা হোক, আর এই অথরিটি কে একটি স্বতন্ত্র সংস্থা বানানো হোক।

এমন নির্দেশের পর থেকে আজও পর্যন্ত ভারতের সমস্ত রাজ্যে এই অথরিটি কিন্তু বানানো হয়নি। কেননা এই সম্বন্ধে সরকারের উপরে প্রচুর প্রেসার / চাপ রয়েছে।

পুলিশের উপরে যদি এমন অভিযোগ দায়ের করা যায় তাহলে রাজ্যের সমস্ত রকম ব্যবস্থা জারী রাখা কিছুটা কঠিন হয়ে পড়বে। তবুও ভারতের ১১ টি রাজ্যে পুলিশ কমপ্লেন্ড অথরিটির গঠন করা হয়ে গিয়েছে।

যে সমস্ত রাজ্যে পুলিশ কমপ্লেইন্ড অথরিটি গঠন করা হয়েছে, সেই সমস্ত রাজ্য গুলি হল:- 

  • চন্ডিগড়,
  • হরিয়ানা,
  • দিল্লি,
  • আসাম,
  • জম্মু-কাশ্মীর,
  • কেরল,
  • কর্ণাটক,
  • পাঞ্জাব,
  • তামিলনাড়ু,
  • তেলেঙ্গানা,
  • মহারাষ্ট্র।

যে সমস্ত রাজ্যের পুলিশ কমপ্লেইন্ড অথরিটি এর মত সুবিধা এখনো পর্যন্ত উপলব্ধ নেই, সেখানে কোনো পুলিশ আধিকারিক এর অভিযোগ সেই পুলিশের থেকে উচ্চতর পুলিস আধিকারিকের কাছে আপনি করতে পারবেন।

যেমন ধরুন কোন থানার ইনচার্জ সম্বন্ধিত অভিযোগ পুলিশ অধীক্ষক এর সমক্ষে করা যেতে পারে। কোন কনিষ্ট পুলিশ আধিকারিক এর অভিযোগ পুলিশ থানার ইনচার্জ এর কাছে করা যেতে পারে।

তবে এই বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরী যে, যেকোন পুলিশ আধিকারিক এর অভিযোগ সম্বন্ধিত যেকোনো আবেদন সমস্ত রকম প্রমানপত্রের সাথে প্রস্তুত করা টা অবশ্যই প্রয়োজনীয়। আর যেকোন দোষ তখনো পর্যন্ত দেওয়া উচিত নয় যতক্ষণ না পর্যন্ত কোন রকম আচরণ আইনি রূপে অবৈধ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।

এছাড়া বর্তমানে ঘটে যাওয়া অনেক রকম অপরাধের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়ার জন্য পুলিশকে অনেক রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। তার মধ্যে এমন কিছু আচরণ রয়েছে যেগুলো সাধারণ মানুষের খারাপ লাগতে পারে।

কিন্তু সেটা আইনত বৈধ, সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনি অযথা কোনো রকম প্রমাণপত্র ছাড়া সেই পুলিশ আধিকারিক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন না। এছাড়া আমরা সবাই জানি যে আইনের ক্ষমতা কতটা, তাই এমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না, যার ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

2 thoughts on “পুলিশের বিরুদ্ধে কিভাবে অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে? জানুন আইন”

  1. Rahul khan Khan

    ম্যাডাম ,,,,গত দুই মাস আগে এক কাকা তার ভাইপোকে বাড়িতে ঢুকে মারধর করে পারিবারিক সূত্রের মধ্যে কাকা মাথা গলায় ভাইপোর চোখ ড্যামেজ করে দেয় বাঁদিকের এবং প্রশাসনিক লেভেলে হাটতে গেলে বলে কোন পুলিশ কোন কোর্ট আমার কাছে কাজে লাগবে না আমি পুলিশকে দাঁড় করিয়ে তোকে আবার মারতে পারি অতএব ম্যাডাম কাকা ভাইপোকে এমন চোখে আঘাত করে যে আমতা থানার অন্তর্গত আমতা স্বাস্থ্য কেন্দ্র রোগিটিকে ট্রান্সফার করেন উলুবেরিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং উলুবেরিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্র আবার কলিকাতা মেডিকেল কলেজে টান্সফার করেন , আপাতত চোখে কম দেখে এবং মাথার যন্ত্রণা করে চশমা লেগে আছে ১৫ দিন অন্তর। মেডিকেল কলেজে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়। এই অভিযোগ হাওড়া জেলার অন্তর্গত আমতা থানায় ছেলেটির মা অভিযোগ জানাতে গেলে ওখানে ডিউটি অফিসার সাইফুদ্দিন মন্ডল কোন জিডি বা এফ আই আর নেননি পরে ওসিকেও জানানো হয় তাতেও কোন কাজ হয়নি। পরে কোট থেকে কেস করা হয়, তাতে আসামি জামিন নিয়ে নেয়, জামিন নেওয়ার পরে লোকটি বাড়িতে এসে আবার গালিগালাজ ও মার ধরে ভয় দেখায়। এবং অফিসার ছেলেটির মাকে তার নামে কেস হবার হুমকি দেন। এবং পরে চার্জশিট আরো হালকা করে দেন,এবং বারবার উনি ইঙ্গিতে কিছু চেয়ে বসেন, না চাইলে ,উনি আরো আমাদেরকে অন্য কিছু জড়াবার হুমকি দেয় এমতাবস্থায় কোন সুরাহা হয়নি অতএব ম্যাডাম আপাতত এই কেসটি সঠিক যাচাই করে অপরাধী শাস্তি পাই তার জন্য আপনার কাছে করজোড় করে নিবেদন রইল। তাতে যদি প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য লাগে সবটাই আমার কাছে আছে। এবং তাতে কিছু খরচ হলেও আমি দিতে রাজি। পুলিশ এবংআসামী উপযুক্তই শাস্তি পাক। নমস্কার ভুল হলে মার্জনা করিবেন।

  2. Dr Sudeep Kumar Biswas

    A two wheeler of an medical practioner should entered in left side of road even in red signal where entry in left side do not hamper any traffic who are passing the same way by crossing the road. Red signal only should obstract who want to cross the road.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top