নিজের জন্য ভালো Health Insurance কিভাবে বাছাই করবেন? আসুন জেনে নিন

Health Insurance: নিজের জন্য সঠিক হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী (Health Insurance Company) নির্বাচন করা সবসময়ই অনেক গুরুত্তপূর্ন বিষয়। কারন আমাদের কষ্টার্জিত উপার্জনের একটি অংশ আমরা হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে দিয়ে দেই।

এজন্য আপনি আপনার মূল্যবান অর্থ আপনি কার হাতে তুলে দিচ্ছেন তা নিয়ে সবসময় সতর্ক থাকাটাই উচিত। আমাদের দেশের বিভিন্ন হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীগুলি বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের হেলথ ইন্স্যুরেন্স সুবিধা দিয়ে থাকে। আর এসকল কভারেজের মধ্যে থাকা নানান শর্ত আপনার মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে।

কারন, কোম্পানিভেদে ইন্স্যুরেন্সের সংজ্ঞা, শর্তাবলি ও কভারেজ আলাদা হতে পারে।  তাই, আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বোত্তোম হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী (Best Health Insurance Company) নির্বাচনের আগে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমানে ভারতে কাজ করা অনেকগুলি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে আপনার জন্য সঠিক হেলথ ইন্স্যুরেন্স সেবাটি বেছে নিতে তাই খোঁজখবর নেয়াটা জরুরী।

নিজের জন্য ভালো Health Insurance কিভাবে বাছাই করবেন?
নিজের জন্য ভালো Health Insurance কিভাবে বাছাই করবেন?

সঠিক তথ্যের জন্য কখনোই শুধুমাত্র একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর উপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। কারণ, এধরনের কোম্পানির অধিকাংশই শুধুমাত্র মুনাফার জন্য কাজ করে এবং তারা তাদের ইন্স্যুরেন্স পলিসির প্রতি আপনাকে আগ্রহী করে তোলার জন্য সবরকমের চেষ্টাও করে থাকে।

এজন্য, অনেক হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি আপনাকে তাদের লাভজনক সেবার সুন্দর সুন্দর কথা বলে মিথ্যা আশ্বাসও দিতে পারে। যার ফলে আপনি পরবর্তীতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। যেহেতু আপনি ইন্স্যুরেন্স পলিসি নেয়ার আগে অনেকগুলি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সাথে কথা বলার সুযোগ আছে, তাই আপনি হেলথ ইন্স্যুরেন্স করার আগে কয়েকটি কোম্পানীর সাথে বিষদ আলোচনা করে নেবেন।

সবচেয়ে ভালো ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী খুঁজে নিতে আপনাকে অনেকগুলি বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিতে হবে। আসুন দেখি কি কি বিষয় নিয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। নিচে আপনাদের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি দেওয়া হয়েছে যা আপনাকে ভালো স্বাস্থ্য বীমা নিতে সাহায্য করবে।

চাহিদা অনুযায়ী সেবাঃ

বিভিন্ন হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী গ্রাহকদের নানারকমের সুবিধা দিয়ে থাকে। আপনাকে ভালো করে খতিয়ে দেখতে হবে যে, আপনার নেয়া ইন্স্যুরেন্স প্যাকেজ আপনার সকল চিকিথষার প্রয়োজন মেটাতে পারবে।

আপনার চাহিদা অনুযায়ী একটা তালিকা তৈরি করুন, যাতে করে আপনি সহজেই আপনার দরকার মেটে কিনা এটা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সাথে ভালোভাবে নিশ্চিত হতে পারেন।

সঠিক ইন্স্যুরেন্স অংক নির্ধারন করাঃ

যে কোন হেলথ ইন্স্যুরেন্স নেয়ার সময় আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, সর্বোচ্চ কত অংকের টাকা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী ক্ষতিপূরন হিসেবে দেবে।

আপনাকে প্রত্যেকটি অসুস্থ্যতায় কি পরিমান অর্থ লাগতে পারে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ধারনা নিতে হবে এবং সেই পরিমান অংক ইন্স্যুরেন্স কভারেজ পায় কিনা সেটা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। তাই আপনি পর্যাপ্ত সময় নিয়ে সঠিক ইন্স্যুরেন্স অংক ঠিক করতে হবে।

পরিচিত মানুষের কাছ থেকে পরামর্শ নিনঃ

আপনার পরিচিতজনের মাঝে অনেকেই পূর্বে হেলথ ইন্স্যুরেন্স করেছে। তাদের কাছ থেকেও তাদের কোম্পানি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা শুনতে পারেন।

তারা তাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ইন্স্যুরেন্স সেবা ও কোম্পানি সম্পর্কে আপনাকে সঠিক ও মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারে। ভালো হেলথ ইন্স্যুরেন্স বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত গুরুত্তপূর্ন হয়ে থাকে।

কোম্পানীর পূর্বের ভাবমূর্তিঃ

কোন হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাথে সম্পৃক্ত হবার আগে তার উপর সঠিক অনুসন্ধান প্রয়োজন। যার জন্য কিছুটা সময় নিয়ে খোজখবর নেয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ।

এজন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের পূর্বের গ্রাহকের মতামত দেখে নিতে পারেন এবং তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকেও কিছু পরামর্শ নিয়ে আপনার প্যাকেজটি পছন্দ করতে পারেন।

যদি কোন কোম্পানী তার ইন্স্যুরেন্স গ্রহীতাকে ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমাসি করে থাকে তবে সেই কোম্পানী থেকে দূরে থাকাই উত্তম। ভালো হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি কখনই তাদের গ্রাহকদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ দিতে দেরি করে না।

ইন্স্যুরেন্স পেমেন্ট ক্লেইমঃ

আপনার ভবিষ্যত হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর বীমার অর্থ প্রদান করার ইতিহাস সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে। সেই কোম্পানির ইন্স্যুরেন্স পেমেন্ট ক্লেইমের আগের রেকর্ড সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে হবে।

নির্ভরযোগ্য যেকোন হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম রেকর্ড অত্যন্ত ভালো থাকে। তাই স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্লেইম পরিশোধ করা কোম্পানি বেছে নেয়া উচিত।

কোম্পানির আর্থিক অবস্থাঃ

যদি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকে, তবে আপনার ইন্স্যুরেন্স দাবিটির বিপরীতে তারা অর্থ প্রদান করতে পারবে না। অতএব, সঠিকভাবে অর্থ সরবরাহ করতে পারে এমন কোম্পানিগুলি নির্বাচন করতে হবে।

ভাল আর্থিক অবস্থাসম্পন্ন কোম্পানি বেছে নেয়ার সময়ে তাদের আর্থিক বিবরনী এবং তাদের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার দেখে নেয়া উচিত।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ ব্যাপারে জানতে পারা খুবই সহজ। বিভিন্ন অনলাইন রিভিউ, রেটিং এ ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

কোম্পানীর বৈধ স্বীকৃতিঃ

হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নির্বাচন করার সময় তার কোন বৈধ স্বীকৃতি আছে কি না তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সরকারী স্বীকৃতি থাকা একান্ত আবশ্যক।

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলি স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য এবং দায়বদ্ধ হয়ে থাকে কারন তাদের সরকারের দেয়া নিয়ম ও নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হয়, যা বেআইনি ও অস্বীকৃত বীমা সংস্থাগুলি করে না।

কোম্পানীর গ্রাহক সেবাঃ

একটি হেলথ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহক সেবা হবে স্বচ্ছ এবং নির্ভরযোগ্য। কোম্পানী তাদের গ্রাহক পরিসেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের যে কোন তথ্য কিংবা সমস্যার দ্রুত সমাধান করে দিতে পারে।

তাই, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি বাছাইয়ে ভাল গ্রাহক সেবা দেয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে প্রাধান্য দেয়া বাঞ্ছনীয়।

ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ামঃ

ইন্স্যুরেন্স সেবার প্রিমিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার! এটি আপনার আর্থিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।

কোন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি যদি সাশ্রয়ী বীমা প্রিমিয়াম প্রদান করে তবে এর অর্থ এই নয় যে তাদের সার্ভিস ভাল হবে না। তাই, বীমা সেবা নেবার আগে বিভিন্ন কোম্পানির প্রিমিয়াম প্যাকেজ সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখতে হবে।

ইন্স্যুরেন্স কভারেজঃ

একটি ব্যয়বহুল ইন্স্যুরেন্স যে আপনাকে সবসময় বিস্তৃত কভারেজ সরবরাহ করবে এ ধারণা ভুল। এ কারনে আপনার বীমা কোম্পানির বীমা কভারেজ রেঞ্জ সম্পর্কে জানতে হবে।

আপনার আর্থিক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে সেরা কভারেজটি পছন্দ করুন যাতে এটি আপনার এবং আপনার পরিবারের বাজেটে কোন সমস্যা না করে।

সবশেষে একথা বলা যায় যে সঠিক হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং পলিসি বাছাইয়ের জন্য পর্যাপ্ত খোঁজখবর বাধ্যতামূলক। খোজখবরের পাশাপাশি এ লেখায় থাকা বিষয়গুলো মাথায় রাখলে সঠিক হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং পলিসি বাছাই করা খুব সহজ হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top