নিজেকে খুশি রাখার দারুন পদ্ধতি যা শারীর ও মন ভালো রাখবে

সারা বিশ্বে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে কোনোরকম সমস্যা নেই। সমস্যার সাথে লড়াই করতে করতে আমাদের জীবনের পথচলা।

অনেকেই ভাবেন যারা কোটিপতি তাদের জীবনে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তাদের জীবনেও অনেক সমস্যা আছে যা আপনার ধারণার বাইরে।

নিজেকে খুশি রাখার দারুন পদ্ধতি যা শারীর ও মন ভালো রাখবে
নিজেকে খুশি রাখার দারুন পদ্ধতি যা শারীর ও মন ভালো রাখবে

সমস্যা সবার জীবনে আছে, সে ধনী হোক বা গরীব। সেই সমস্যাকে জয় করে খুশি থাকাটাই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সুখ হয়তো টাকা দিয়ে যায় কিন্তু মনের শান্তি নির্ভর করে আপনার নিজের উপর। যে নিজেকে ভালো রাখতে খুশি রাখতে চাইবে তার কাছে খুশি থাকাটা সাধারণ বিষয়।

কিছু বিষয়কে জীবনে জায়গা দিয়ে নিজেকে সবসময় খুশি রাখার চেষ্টা করা যাক :

1 . অতিরিক্ত প্রত্যাশা

অনেকেই আছেন কোনো কিছুতে  অন্যের কাছ থেকে নিজের চাহিদা অনুযায়ী আশা করেন। কিন্তু সবাই তো আর আপনার মতো করে ভাবে না।

আপনি যেমনটা চেয়েছিলেন তেমনটা হয়তো হলো না, তখন কষ্ট স্বাভাবিক। মনের ভিতর চাপা অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন। তাই কারো কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত প্রত্যাশা করবেন না।

নিজের প্রতি বিশ্বাস, ভরসা রাখুন দেখবেন অনেক হালকা মনে হবে সবকিছু।

2 . প্রশংসা করুন

পৃথিবীতে সবাই একরকম হয় না। আপনি সুন্দর বা আপনি কোনো কাজ খুব ভালো ভাবে করতে পারেন, এখন এমন অনেক মানুষের সাথে আপনার পরিচয় হতে পারে যারা আপনার থেকেও সুন্দর ও দক্ষ সবদিক দিয়েই।

এক্ষেত্রে ঈর্ষা বা মন খারাপের কোনো জায়গা নেই। মন খুলে প্রশংসা করুন, আপনি আপনার জায়গাতে সুন্দর, সে তার জায়গাতে।

এতে আপনার সুন্দর ব্যক্তিত্বের পরিচয় পাওয়া যাবে। আপনি যেমনই হোন না কেন যখন কারো সাথে হেসে হেসে কথা বলবেন তখন সুন্দরতার মাত্রা অনেক খানি বেড়ে যায়। সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারেন আপনি।

3 . তুলনা নয়

নিজেকে গুরুত্ব দিন, অন্যের সাথে তুলনা করা মানে নিজেকে অসম্মান করা। ঈশ্বর কোনো কিছু কেই গুরুত্বহীন করে সৃষ্টি করেন নি।

সব ফলের স্বাদ যেমন এক নয় তেমনি মানুষের মধ্যেও গঠনগত, চারিত্রিক বৈষম্য থাকবেই। আপনার মধ্যে যে গুন আছে তা তো অন্য কারো মধ্যে নাও থাকতে পারে।

ব্লেড আর কুঠার গঠনগত দিক দিয়ে আলাদা তেমনি তাদের কাজও আলাদা, ব্লেড দিয়ে যেমন গাছ কাটা যায় না তেমন কুঠার দিয়ে দাড়ি কামানোও যায় না।

সব কিছুরই গুরুত্ব আছে, নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা মানে হীনমন্যতায় ভোগা, নিজেরই ক্ষতি করা।

যদি আপনার কারো কোনো বিষয় ভাল লাগে তাকে অনুসরন করতেই পারেন নিজেকে আরো উন্নত করতে। কিন্তু নিজেকে ভুলে গিয়ে সম্পূর্ণ অন্য কারো মতো হতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

4 . নিজেকে ভালোবাসুন

ব্যস্ত এই জীবনে নিজের প্রতি যত্ন টুকু হয়ে ওঠে না। আপনার পছন্দ অপছন্দ টা ভুলে যাবেন না। সংসারের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে নিজের প্রয়োজন টা ভুলে যাচ্ছেন না তো?

আপনি কি করতে ভালোবাসেন সেটা করুন, নিজের শরীরের যত্ন নিন। কেননা আপনি নিজের যত্ন নিজে না নেন অন্য কেউ আপনার মতো আপনার যত্ন নেবে না।

মন খুলে হাসুন, হাসি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণ ভালো। এখন তো মানুহাসতেই ভুলে গেছে। আজ জীবনের শেষ দিন মনে করে বাঁচুন। কারো অনুসরণ করতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন না।

আপনার মধ্যে যে গুন আছে তা প্রকৃতিগত, অনুসরণ করে তো আপনি নতুন কিছু শিখছেন।

5 . গাছ লাগান

গাছ, ফুল কে না  ভালোবাসে, নিজের জন্য একটু সময় বের করে আপনার যদি বাগান করার মতো জায়গা থেকে থাকে ফুল ফলের গাছ লাগান, সবজিও দিতে পারেন।

অনেকেই ছাদবাগান করছে রমরমিয়ে। আপনার হাতে লাগানো ফুল গাছে যখন ফুল ফুটবে তখন কতটা খুশি হবেন আপনি সেটা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।

বীজ থেকে যখন ছোট্ট চারাগাছটা মাটি ফুঁড়ে বেরোবে আপনার মন খারাপ উড়ে যাবে। পরিবেশের উপকার হবে আর আপনার সময় কাটবে সুন্দর ভাবে, সাথে ঘরের শোভাও বাড়াতে পারেন গাছ দিয়ে।

6 . একাকী সময় কাটান

সারাদিন ব্যস্ততার মাঝে একটু খানি সময় নিজের জন্য রাখুন, সেই সময় করতে পারেন আপনার পছন্দের কিছু।

কেউ গান শুনতে ভালোবাসেন তো কেউ বই পড়তে, কেউ বা ঘরটাকে সুন্দর করে সাজাতে। এতে আপনার মন ফুরফুরে থাকবে। নতুন কিছু শিখুন, অনেক কিছু শেখার আছে যা আমাদের বাস্তব জীবনে অনেক কাজে লাগে।

নিজের হাতে তৈরি করুন ঘর সাজানোর সামগ্রী, যখন দেখবেন যে আপনারই হাতে বানানো সামগ্রী আপনার ঘরের শোভা অনেক খানি বাড়িয়ে দিয়েছে মনটা খুশিতে ভরে যাবে।

7 . সব কথার গুরুত্ব না দেওয়া

এই সমাজে ভালো মন্দ মিলিয়ে মানুষ বসবাস করে। আপনার জীবনযাপন অনেকেরই ভালো না লাগতে পারে, তার জন্য তো আপনি নিজেকে বদলে ফেলতে পারেন না।

আপনার সামর্থ্য, চাহিদা অনুযায়ী তো চলবেন। তাতে কে কি বললো কি যায় আসে আপনার। ভালো কথা গ্রহণ করুন বাজে কথা বর্জন করুন। হাসিমুখে উত্তর দিন, নিজের নিয়মে বাঁচুন।

অনেকে আপনার মতো হওয়ার চেষ্টা করেও না পারলে আপনাকেই দোষ দেবে। তাই এসব কথায় মোটেও কান দেবেন না।

চলার পথে অনেক কথাই তো শুনতে হয় সব কথাকে গুরুত্ব দিলে আপনার সৃজনশীল মানসিকতার ক্ষতি হবে আপনাকে নিয়ে কে কি ভাবছে, কি বলছে এসব চিন্তা করা মানে বোকামি।

দিনের শেষে দেখবেন ওইসব ভাবতে ভাবতে আপনি সারাদিন কোনো ভালো কাজ করতে পারেন নি।

8 . পরিবর্তন কে গ্রহণ করুন

আদিমযুগ যেমন ছিলো আজকের দিনটা তেমন নেই, অনেকটাই স্বচ্ছল, আধুনিক, উন্নত। যত দিন যাবে যুগ ততই বদলাবে। পরিবর্তীত সমাজের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখুন।

জীবন টা আমাদের মন মতো চলে না, তাই যা ঘটবে সেটা মেনে নিতে শিখুন, নাহলে হতাশা গ্রাস করতে পারে আপনাকে।

নিজের রুচি বজায় রেখে পরিবর্তনশীল সমাজের তালে তাল মিলিয়ে চলাটাই  আমাদের দরকার, নাহলে পিছিয়ে পড়তে হবে যে আর চলাটাই জীবনের মন্ত্র।

নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন, পরনির্ভরশীলতা, অতিরিক্ত প্রত্যাশা, উচ্চ আকাঙ্খা, লোভ, হিংসা বিদ্বেষ থেকে দুরে থাকুন নিজেকে খুশি রাখুন, কি কারণে আপনি খুশি থাকতে পারেন তা অন্যের তুলনায় আপনিই ভালো জানেন।

নিজের ভালোলাগাকে গুরুত্ব দিন। আপনার যতটুকু আছে ততটুকুতেই খুশি থাকার চেষ্টা করুন। খুশি থাকাটা নির্ভর করে সম্পূর্ণ নিজের উপর।

কেউ ছোট্ট উপহার পেলে বেজায় খুশি হয় আর কেউ পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী দামী উপহার এনে দিলেও খুশি হয় না। কেউ ছোট্ট  ফুল গাছেও খুশি হয়, আবার কেউ সবরকম সুখ, সুযোগ সুবিধা পেয়েও খুশি হয় না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top