Durga Puja 2023: দূর্গা পূজার এই অজানা বিষয়গুলি আপনি জানেন কি? জেনে নিন

বাঙ্গালীদের বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে শারদীয়া দুর্গাপূজা সব থেকে বড় উৎসব। বছর শেষে আবার এলো এই শারদীয়া দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার এই কটা দিন বিভিন্ন রকমের নিয়ম কানুন, আচার অনুষ্ঠান, আনন্দ, উৎসব সবকিছুর সাথেও কড়াকড়ি ভাবে মেনে চলতে হয় এমন কিছু নিয়ম, যেগুলি শাস্ত্র অনুযায়ী শুভ ফলদায়ক বলে মনে করা হয়। দুর্গাপূজার কয়েকদিন কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে জীবন হয় আরও বেশি সুন্দর ও শান্তিময়।

দূর্গা পূজার এই অজানা বিষয়গুলি আপনি জানেন কি?
দূর্গা পূজার এই অজানা বিষয়গুলি আপনি জানেন কি?

এমন সব নিয়ম গুলির মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো বছরে যে চারটি দিন অন্ন গ্রহণ একেবারেই নিষিদ্ধ বলে জানানো হয়। সেই দিনগুলি হল ১) রামনবমী, ২) জন্মাষ্টমী, ৩) শিবরাত্রি এবং ৪) দুর্গাপূজার এই মহা অষ্টমী

এই কটা দিন কোনভাবেই অন্ন গ্রহণ করা চলবে না। তবে যদি সেটা দেবীর প্রসাদ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে গ্রহণ করা যেতে পারে।

শুভ দুর্গা পূজা শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস

দুর্গাপূজা নিয়ে সকলের মনে অনেক বেশি উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। তবে এই পূজাতে যে নিয়ম গুলি মেনে চললে মনে প্রশান্তি আসার সাথে সাথে সংসারেও আসে সমৃদ্ধি সেগুলি সম্পর্কে জানতে নিশ্চয়ই আগ্রহ থাকবে সকলের, তাই না !

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, এমন কিছু তথ্য সম্পর্কে যেগুলি দুর্গাপূজার সাথে বিশেষভাবে জড়িত:

১) মহাষষ্ঠীর দিন ষষ্ঠী পূজা:

পুজো শুরু হয়ে যায় মহাষষ্ঠীর দিন থেকেই। এই দিন থেকে উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে সাথে দুর্গোৎসব জমজমাটি হয়ে ওঠে। তবে সকল সন্তানের সুস্থতা কামনা করে জীবন এবং মঙ্গল কামনা করে ষষ্ঠীর দিন সকালে ষষ্ঠী দেবীর পূজা করতে হবে।

তার পাশাপাশি সন্তানের কপালে দই হলুদের ফোঁটা দিয়ে সন্তানের দীর্ঘজীবী এবং মঙ্গল কামনা করতে হবে। তবে স্বাধারণত এই ষষ্ঠী পূজা বেল গাছ তলা তে সম্পন্ন করা হয়।

দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠী এই ভাবে পালন করলে সংসারে আসবে সমৃদ্ধি

২) নিরামিষ খাবার গ্রহণ:

সারা বছর ধরে বিভিন্ন রকমের খাবার খাওয়ার তোড়জোড় তো থাকেই, তবে এই দেবীপক্ষে কটা দিন না হয় নিরামিষই খেলেন, তাতে নিশ্চয়ই কোন ক্ষতি নেই !

ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত নিরামিষ খাবার গ্রহণ করাটা শুভ বলে মনে করা হয়। তবে যদি দেবীর ভোগ অথবা প্রসাদ আমিষ হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানতে হবে এমন কোন কথা নেই।

৩) দুর্গা নাম জপ করা:

দেবীপক্ষের কটা দিন উৎসব আনন্দে মেতে থাকলেও প্রতিনিয়ত যদি আপনি অর্থাৎ বলতে গেলে প্রতিদিন ১০৮ বার দুর্গা নাম জপ করেন তাহলে আপনার উপরে দেবীর কৃপা বর্ষিত হবে। এই নাম স্মরণ করলে সকল বিপদ-আপদ দূর হয়ে যায় বলে মনে করা হয়।

শুভ মহাষষ্ঠী শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস

৪) প্রতিদিন গঙ্গা স্নান:

গঙ্গা স্নান একটি পুণ্যের কাজ, অনেক পাপ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার হয়ে যায়। সেই কারণে দুর্গাপূজার এই কটা দিন যদি প্রতিদিন গঙ্গা স্নান করতে পারেন তাহলে শরীর ও মন শুদ্ধ হয়।

এক্ষেত্রে সবার পক্ষে গঙ্গায় গিয়ে স্নান করা সম্ভব হয়ে না উঠলেও, সবার  ঠাকুর ঘরে গঙ্গাজল নিশ্চয়ই থাকবে, নিজের স্নানের জলে সেই গঙ্গা জল কয়েক ফোঁটা ফেলে দিয়ে সেই জল গায়ে ঢেলে স্নান করতে পারেন। মনে যদি থাকে ভক্তি তাহলে সবকিছুতেই আপনি পাবেন পুণ্যের ছায়া।

৫) মহা অষ্টমীতে অন্ন গ্রহণ নয়:

একটু খেয়াল করলে দেখবেন যে, দুর্গাপূজার এই অষ্টমীতে সকলের বাড়িতে ভাত ছাড়া আরও অন্যান্য কিছুর আয়োজন করা হয়, যেমন ধরুন লুচি, কচুরি অথবা আটা দিয়ে তৈরি অন্য কোন খাবার, সেখানে ভাতের কোন জায়গা নেই।

কেননা এই মহা অষ্টমীতে অন্ন গ্রহণ করা সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ বলে শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। নিজের মঙ্গল কামনা করে, সংসারের মঙ্গল কামনা করে, অষ্টমীতে কখনোই অন্ন গ্রহণ করবেন না কিন্তু।

অষ্টমীতে পূজার সঠিক বিধি ও অঞ্জলি সম্পর্কে জানা আছে কি?

৬) দৈহিক সম্পর্ক:

পূজা পার্বণ খুবই পবিত্র বিষয়, দুর্গাপূজার এই পবিত্র তিথিতে পূজার কটা দিন নারী পুরুষের দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা নিষিদ্ধ বলে জানা গিয়েছে শাস্ত্র অনুযায়ী, তাই এই বিষয়টা খেয়াল রাখাটা জরুরী।

৭) পুষ্পাঞ্জলি:

দুর্গাপূজার সাথে পুষ্পাঞ্জলির সম্পর্ক কতখানি নিবিড় তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। সপ্তমী ও অষ্টমী তিথিতে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার জন্য সকলেই বলতে গেলে ভোর থেকে উঠে তৈরি হয়ে থাকেন।

যদি একান্তই কোন অসুবিধার কারণে সপ্তমী ও অষ্টমী তিথিতে পুষ্পাঞ্জলি না দিতে পারেন, সে ক্ষেত্রে সন্ধি পূজার সময় অবশ্যই পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে দেবেন। এর ফলে আপনার সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে খুব শীঘ্রই।

শুভ সন্ধি পূজা শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস

৮) গুরুজনের আশীর্বাদ:

এছাড়া উৎসবের দিনগুলিতে বয়স্ক মানুষদের কাছ থেকে অর্থাৎ গুরুজনদের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করার ধুম পড়ে যায়। উৎসবের আনন্দের পাশাপাশি দশমীর সন্ধ্যায় গুরুজনদের প্রণাম করে আশীর্বাদ নিন, তার সাথে সাথে সামান্য সিদ্ধি শরবত পান করতে পারেন। এর ফলে সারা বছরের সমস্ত রকম কাজে আপনি সিদ্ধি লাভ করতে পারবেন।

এই সময় চারিদিক, ধান খেত শস্য-শ্যামলা হয়ে ওঠে, দেবী যেন দুহাত ভরে সকলকে আশীর্বাদ করতে এই ধরনীর বুকে নেমে আসেন। কৃষকরা দেবীর কাছে ভালো ফসলের কামনা করেন, মনে ভক্তি রেখে শ্রদ্ধা ও নিষ্ঠা ভরে যদি দেবীর পূজা করা যায়, আরাধনা করা যায়, প্রার্থনা করা যায়, তাহলে সমস্ত সমস্যার সমাধান ঘটিয়ে মনের সকল আশা পূর্ণ হওয়া সম্ভব।

মহা অষ্টমীতে কুমারী পূজার মাহাত্ম্য জেনে নিন

এমনকি কথায় আছে যে, যদি কোন পাথরকে দেবী জ্ঞানী পূজা করা যায়, ঈশ্বর জ্ঞানে পূজা করা যায়, তাহলে সে পাথরও জীবন্ত হয়ে ওঠে। তবে তার জন্য থাকতে হবে ভক্তিতে অনেকখানি শক্তি। তবে যাই হোক না কেন, পূজার আনন্দ কাটানোর পাশাপাশি দিনগুলো যেন জলের স্রোতের মতো বয়ে যায়।

নবমী শুরু হতেই চলে মন খারাপের পালা, কেননা পার্বতী যে এবার ফিরে যাবেন নিজের বাড়িতে কৈলাসে। তবে দুঃখ নেই, চারদিন পরেই তো দেবী লক্ষ্মী সবার ঘর আলো করে, সবার মন খারাপ মুছে দিতে চলে আসছেন সকলের ঘরে ঘরে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top