গ্রাহক বা ভোক্তা দের অধিকার কি? আপনার উপভোক্তা আইনি অধিকার জানুন

Consumer Rights in Bengali: গ্রাহক বা ভোক্তা দের আইনি অধিকার সম্পর্কে জানেন কি? জানুন আপনার উপভোক্তা আইনি অধিকার | জেনে নিন আপনার অর্থাৎ উপভোক্তার আইনি অধিকার কি? কিভাবে এই অধিকার ব্যাবহার করবেন? আপনি কি কি লাভ পাবেন সব কিছু।

জিনিসপত্র কেনাকাটা করার সময় সমস্ত রকম জিনিসের উপরে খেয়াল রাখা এবং উপভোক্তার অধিকার। সঠিক দাম, সব কিছু বিবেচনা করে তবে জিনিসপত্র কেনা টা ভালো বলে মনে করা হয়।

তাহলে ব্যবসার ক্ষেত্রে যে অবৈধ ভাবে জিনিস পত্র বিক্রি চলে সেটা অনেকটা থামানো যেতে পারে। তার সাথে সাথে গ্রাহকদের নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়াটা খুবই জরুরী।

বিভিন্ন রকমের জিনিস পত্র এর গুনাগুন, সামর্থ্য, তার মাত্রা, তার শুদ্ধতা এবং তার সঠিক দাম আর মান এর উপর নির্ভর করে সমস্ত রকম বিষয় গুলো খেয়াল রাখাটা জরুরি।

যেমনটা প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে, আদৌ তা প্যাকেটের ভিতরে আছে কিনা, সেটা অনেক সময় আমরা যাচাই করে দেখি না। তবে এটা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের কাছে ভুল প্রমাণ হতে পারে, তাই গ্রাহক দের সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।

গ্রাহক বা ভোক্তা দের অধিকার কি? আপনার উপভোক্তা আইনি অধিকার জানুন
গ্রাহক বা ভোক্তা দের অধিকার কি? আপনার উপভোক্তা আইনি অধিকার জানুন

ভারতে উপভোক্তা অধিকার রক্ষার জন্য মজবুত, আরো স্পষ্ট আইন অনুসারে তবুও কিন্তু উপভোক্তা দের বাস্তবিক দুর্দশা লক্ষ্য করা যায়। উপভোক্তা দের অধিকারের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আইন উপভোক্তা সংরক্ষণ অধিনিয়ম, 1986 আছে।

যা কিনা আইন অনুসারে একজন ব্যক্তি একটি ফর্ম, একটি হিন্দু অ-বিভক্ত পরিবার, একটি কোম্পানিকে জিনিসপত্র কেনার জন্য উপভোক্তা অধিকার প্রয়োগ করার অধিকার দেওয়া হয়ে থাকে।

এছাড়াও কোন অধিকার সম্পর্কে জানা ছাড়াও যদি কোনো অধিকারের লঙ্ঘন করা হয় বা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে কিন্তু তার উপায় জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ গ্রাহকদের জন্য।

সাধারণ ভাবে ভারতে উপভোক্তা দের অধিকার সম্পর্কিত কিছু বিষয় যেগুলি নিচে দেওয়া হল:

১) সমস্ত রকমের ক্ষতিকর জিনিসপত্র অথবা দ্রব্য তার সাথে সাথে সেবামূলক দ্রব্য থেকে সুরক্ষার অধিকার।

২) সমস্ত রকম জিনিস পত্র এর প্রদর্শন আর গুণমান এর সম্পর্কে সম্পূর্ণ রূপে জানার অধিকার অথবা সূচনা করার অধিকার।

৩) জিনিসপত্র এবং সেবা মূলক বিষয়ের মুক্ত বিকল্পে অধিকার।

৪) উপভোক্তা দ্বারা বিভিন্ন রকমের নির্ণয় সম্বন্ধিত প্রক্রিয়ার রায় দেওয়ার অধিকার।

৫) যখনই উপভোক্তার অধিকার এর লংঘন করা হয়ে থাকে, তার নিবারন করার অধিকার আছে সেই উপভোক্তার।

৬) উপভোক্তা শিক্ষার সম্পূর্ণ করার অধিকার।

উপভোক্তা সংরক্ষণ অধিনিয়ম 1986 ছাড়াও বাজারে সঠিক প্রতিযোগিতা সুনিশ্চিত করার জন্য কোন অন্য আইন-কানুন তৈরি করা হয়েছে, যা উপভোগ করার জন্য সেই ব্যক্তির কিনে থাকা জিনিসপত্র এবং বস্তুর তথ্য সম্পর্কে মুক্ত ধ্যান ধারণা বা প্রবাহ সুনিশ্চিত করে থাকে। যে কোন দেশের উপভোক্তার সঠিক অধিকার দেওয়ার মধ্যে দিয়ে সেই দেশের প্রগতিশীল সংকেত জানা যায়।

উপভোক্তা বিভিন্ন মামলায় খাদ্য আর সার্বজনীন বিবরণ মন্ত্রালয় দ্বারা উপভোক্তা মামলা, উপভোক্তা অধিকার রক্ষার জন্য নডাল সংগঠনের রূপে কাজ করে থাকে।

উপভোক্তা অভিযোগের নিবারণ করে আর ভারতে প্রদত্ত বস্তু এবং সেবার সঞ্চালিত করা মানককে উৎসাহিত করে থাকে।

নিম্নলিখিত এই পরিস্থিতি গুলির উপরে নির্ভর করে উপভোক্তা তাদের অভিযোগ দায়ের করতে পারেন:

১) কোন ব্যক্তি দ্বারা কোন বস্তু যদি কেনা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সহমত হওয়ার জন্য যেকোনো সম্বন্ধে এক বা অধিক দোষ অথবা কমতি যদি থেকে থাকে।

২) একজন ব্যবসায়ী অথবা সেবা প্রদানকারী ব্যবসার অবৈধ অথবা প্রতিবন্ধকতা মূলক প্রথার সহযোগিতা দিয়ে ব্যবসা করে থাকেন তো।

৩) একজন ব্যবসায়ী অথবা একজন সেবা প্রদানকারী যেকোনো একটি দ্রব্যের উপরে প্রদর্শিত মূল্যের থেকেও বেশি দাম দিয়ে জিনিসপত্র বিক্রি করে থাকেন, তাহলে আইন অনুসারে এটি অবৈধ হিসেবে মনে করা হয়। এর বিরুদ্ধে জনসাধারণ অভিযোগ করতে পারেন।

৪) আবার দেখা যায়, অতি লাভের জন্য সে দ্রব্যের সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার পরেও যদি সেই দ্রব্য বিক্রি করা হয়, তাহলে জনগণের ক্ষতি হয়ে থাকে অনেক খানি। তাহলেই আপনি কিন্তু তেমন অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

৫) এছাড়া এমন কিছু জিনিসপত্র রয়েছে যেগুলো কেনার মধ্যে দিয়ে তার সাথে কিছু ফ্রী অথবা বিনামূল্যে জিনিসপত্র থাকে। সেগুলো অনেকে আলাদা ভাবে বিক্রি করে থাকেন, বিনামূল্যে না দিয়ে।

অনেক সাধারণ জনগণ রয়েছেন যারা এগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খেয়াল করেন না। তবে এ বিষয়ে খেয়াল রাখাটা জরুরি। আর তাই জন্য জাগো গ্রাহক জাগো বিষয়টি সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।

ওজন অনুসারে যদি দ্রব্য না হয়, তার ওপরে  অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। প্যাকেটের গায়ে যে পরিমাণ ওজন লেখা আছে সেটা যদি একটু যাচাই করার পর দেখেন তার থেকে অনেক কম আছে, সে ক্ষেত্রেও আপনি অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

আইন অনুসারে গ্রাহকদের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তাদের কিনে নেওয়া দ্রব্যের উপরে যদি যথোপযুক্ত অনুযায়ী দ্রব্য না হয়ে থাকে, তাহলে গ্রাহক অথবা উপভোক্তা তাদের অধিকার অনুযায়ী সেই বিক্রেতার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন।

এছাড়া দেখা যায় জিনিসপত্র মধ্যে খারাপ কেমিক্যাল প্রয়োগ করে সেটি আরও দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তাহলে কিন্তু সেই খাবারের গুণমান অথবা সেই দ্রব্যের কার্যকারিতা অনেক খানি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

তার জন্য জনসাধারণ বেশ কিছুটা হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এক্ষেত্রেও কিন্তু যে কোন ব্যক্তি এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

একজন উপভোক্তার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে কোন ক্ষতিকর জিনিসপত্র কে সরিয়ে দিয়ে তার পরিবর্তে ভালো জিনিস ব্যবহার করা। আর তার সাথে সাথে সেই জিনিস পত্রের গুনাগুন সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখার, সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে।

যার মধ্যে দিয়ে যে জিনিসটি তিনি কিনছেন সেটার সম্পূর্ণ তথ্য সঠিক ভাবে যেন জানতে পারেন, এ বিষয়ে তাকে তাকে সাহায্য করতে হবে। আর যদি না করা হয় বা যদি বাধা দেওয়া হয়, তাহলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না সেই উপভোক্তার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top