নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো আছে কি নেই? এই উপায়গুলি দিয়ে জেনে নিন

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে, শরীর সুস্থ করতে আমরা কতকিছু না করি। কিন্তু খেয়াল রাখছেন আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে?

নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো আছে কি নেই? এই উপায়গুলি দিয়ে জেনে নিন
নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো আছে কি নেই? এই উপায়গুলি দিয়ে জেনে নিন

দিনের পর দিন মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন না নেওয়ার ফলে আজ তা জর্জরিত, ভারাক্রান্ত। শরীরের সাথে সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখাটাও অনেক বেশী গুরুত্ব পূর্ণ।

কীভাবে খেয়াল রাখবেন আপনার ও আপনার আশেপাশের প্রিয়জনের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে, চলুন জেনে নি-

1 . কারোর কথা শোনা :

 অনেকেই আছেন হাজার সমস্যার মধ্যে থেকেও সবার সামনে ভালোভাবে, হাসিমুখে থাকে। এমন কাউকে খোঁজে যে তার সমস্যার কথা একটু সময় দিয়ে শুনবে, বুঝবে।

হয়তো আপনাকে তার সমস্যার কথা বলে নিজেকে অনেকটাই চিন্তা মুক্ত করতে পারবে। আপনিও বিশ্বাস যোগ্য কাউকে আপনার সমস্যার কথা বলতে পারেন, তাতে আপনার মন হালকা হবে অনেকটাই।

ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও কারো সমস্যার সমাধান যদি আপনি হন, তাহলে অনেক বড় ক্ষতির মুখ থেকে রেহাই পেতে পারেন অনেকেই।

2 . ব্যায়াম ও ধ্যান : 

শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেরও অনেক উপকার হয় ব্যায়াম ও ধ্যান এর মাধ্যমে। সব চিন্তা দূরে সরিয়ে রেখে মস্তিষ্ক কে ঠান্ডা হতে দিন।

কিছু সময়ের জন্য চোখ বন্ধ করে চুপচাপ থাকতে চেষ্টা করুন। যখনই সময় পাবেন তখনই করার চেষ্টা করতে পারেন। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও মানসিক শান্তির জন্য এটা অত্যন্ত জরুরী।

3 . সুষম আহার : 

আমাদের খাবারের উপরও নির্ভর করে মানসিক স্বাস্থ্য, বেশী পরিমাণে ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড, প্রক্রিয়াজাত খাওয়ার ফলে তার প্রভাব গিয়ে পড়ছে আমাদের শরীরে ও মনে।

প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্য আমাদের খাওয়া উচিত শারীরিক  ও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে। আমরা যা খাই সেই খাবারের উপাদান গিয়ে মেশে আমাদের রক্তে, সেই রক্ত সরবরাহ হয় মস্তিষ্কে।

তাই আমাদের শরীর ও মন ভালো রাখতে আহারে পরিবর্তন আনতে হবে।

4 . জিগ্যেস করুন : 

বড়দের সাথে সাথে ছোটরা মানসিক রোগের শিকার হতে পারে। নিজের সাথে সাথে অন্যজন ও ছোটদেরও খেয়াল রাখুন।

অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়লে জিগ্যেস করতে ভুলবেন না। আশেপাশের, পরিবারের সদস্য থেকে বন্ধু – বান্ধব সবাই কিন্তু ভুগতে পারে ডিপ্রেশনে, যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না।

কাউকে কিছু না বলতে পেরে, একা লড়াই করতে না পেরে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। সব সমস্যার কোনো না কোনো সমাধান অবশ্যই আছে, তাই মনের মধ্যে সমস্যাকে চেপে রেখে বাড়তে না দিয়ে সমাধান খুঁজুন।

5 . নিয়ম মাফিক চলুন : 

আপনার কাজের একটি রুটিন বানান, দিনের কাজ দিনেই শেষ করার চেষ্টা করুন, কাল কিংবা পরে করবেন ভেবে ফেলে রাখবেন না। তাতে পরে আপনারই কষ্ট।

নিয়মে খাওয়া, ঘুম থেকে ওঠা ও ঘুমাতে যাওয়া বিষয়টাও কিন্ত মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা নিয়ম মেনে চলেন তাঁদের শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে সুস্থ থাকার হার বেশী বলেই গবেষণায় দেখা গেছে।

6 . যন্ত্রের ব্যবহার কমান : 

আজকের দিনে সকলের হাতেই মোবাইল ফোন, বা মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার মতো নানা যন্ত্র রয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে যতটা সম্ভব এই ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার কম করুন।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার একঘন্টা আগে মোবাইল ফোন ও অন্যান্য যন্ত্রের ব্যবহার বাদ দিন। এমনকি দিনের বেলাতেও যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন যন্ত্রের ব্যবহার।

7 . সক্রিয় থাকুন :

 সংবাদপত্র, পাজল মেলানো, ক্রসওয়ার্ড সমাধান করার মতো বিভিন্ন কাজে মস্তিষ্ককে ব্যস্ত রাখুন। মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকলে স্মৃতিশক্তি উন্নতি হবে, তাছাড়া শেখার মানসিকতা ও দক্ষতা বাড়বে কয়েকগুন।

ভালো স্বাস্থ্য মানে মানসিক আর শারীরিক দুই দিক থেকেই সুস্থ বা ঠিক থাকা। অনেকের বেলায় দেখা যায়, শরীর ঠিক থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে একেবারেই গুরুত্ব দেন না।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন ঠিক ভাবে চালিয়ে নিতে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব দেওয়া অনেক বেশী গুরুত্ব পূর্ণ।

জীবনযাপনে সামান্য কিছু পরিবর্তন এনে সব মানসিক সমস্যা দুরে ঠেলে মনকে ফুরফুরে করে তুলতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top