কানাডা ভিসার জন্য আবেদন করতে চান? কিভাবে আবেদন করবেন জানুন

Canada Visa Application and Guidelines in Bengali: কানাডা ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি ও গাইড | জানুন কানাডা ভিসার জন্য কি করতে হবে? কি কি কাগজপত্র লাগবে? | আসুন জেনে নিন কানাডা ভিসার জন্য সম্পূর্ণ আবেদন পদ্ধতি।

বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে হোক অথবা ঘুরতে যাওয়ার জন্য, অনেকেই বিভিন্ন দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে ভিসার প্রয়োজন পড়ে। একটি ভিসা একটি পারমিট, যা কিনা আপনাদের কানাডাতে যাওয়ার এবং সেখানে থাকার অনুমতি প্রদান করতে পারে। তাছাড়া কানাডা বর্ডার পার করার জন্য আপনার এই ভিসা অবশ্যই প্রয়োজন পড়বে।

কানাডায় যাওয়ার জন্য যে সমস্ত নিয়ম গুলি রয়েছে সেগুলি অন্যান্য দেশে যাওয়ার তুলনায় একটু আলাদা অনুভব হতে পারে আপনার। আবার অনেকেই পর্যটনের জন্য কানাডায় যেতে চান, আবার অনেকেই স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করার জন্য অথবা বাসস্থান তৈরি করার জন্য সেখানে যেতে চান।

Canada Visa Application - কানাডা ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি ও গাইড
Canada Visa Application – কানাডা ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি ও গাইড

যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রয়োজনীয় আবশ্যিকতা গুলি সম্পূর্ণরূপে পূরণ করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কানাডায় যাওয়ার আগে আপনি একজন স্থায়ী নিবাস শ্রেণি এর জন্য আবেদন করতে পারেন। দুটি শ্রেণি রয়েছে যার মধ্যে কানাডা যাওয়ার জন্য যে কোন ব্যক্তি আবেদন করতে পারেন।

১) অস্থায়ী বাসিন্দা: কানাডার জন্য একটি ভিসা হলো অস্থায়ী বাসিন্দা হিসাবে সেখানে কোন ব্যবসা বা উৎসব-আনন্দ কাটানোর জন্য, যে কোনো প্রয়োজনীয় কাজ করা, পড়াশোনা, এসব ক্ষেত্রে আপনি কিছু দিনের জন্য যেতে পারেন। সেটা কয়েক বছর ও হতে পারে। সেই হিসেবে আপনি ভিসা নিতে পারেন।

২) স্থায়ী বাসিন্দা: এমন অনেক মানুষ আছেন যারা এক দেশ থেকে অথবা ভারত থেকে কানাডায় গিয়ে সম্পূর্ণরূপে স্থায়ী বাসস্থান করে সেখানে বসবাস শুরু করতে চান। অনেকেই করেছেনও। তখন কিন্তু আপনি সেই রকমভাবে ভিসা নিতে পারেন, স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে কানাডা যাওয়ার জন্য।

অস্থায়ী বাসিন্দার ভিসার তিনটি প্রধান শ্রেণি:

১) টুরিস্ট ভিসা

২) স্টাডি ভিসা

৩) অস্থায়ী কার্য ভিসা

একটি অস্থায়ী বাসিন্দা হিসাবে ভিসার আবেদন করতে গেলে আপনার যে সমস্ত বিষয়গুলি খেয়াল রাখতে হবে এবং যেগুলি প্রয়োজন পড়বে ডকুমেন্ট হিসেবে, সেগুলি নিচে দেয়া হল, তাছাড়া ও স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে নাগরিকতা কানাডা আই আর সি সি (IRCC) এর সাথে একটি আবেদনপত্র জমা করতে পারেন।

এর জন্য আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • সম্পূর্ণ ফিলাপ করা এবং আবেদনকারীর সই করা অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম।
  • প্রয়োজনীয় টাকা
  • পাসপোর্ট সাইজের ফটোগ্রাফ।
  • পাসপোর্ট।
  • কাজের ক্ষেত্রের প্রমাণপত্র।
  • আপনার রিটার্ন টিকিট এর ফটোকপি অথবা যাত্রার কার্যক্রম।
  • তাছাড়া অতিরিক্ত কোনো কাগজপত্র নেওয়ার জন্য স্থানীয় ভিসা কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে পারেন।

ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে অনেকটা সময় এবং অনেকটা ছোটাছুটি করতে হতে পারে। কেননা কোন কোন সময় আপনার সমস্ত রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও আপনার আবেদনটি অস্বীকার করা যেতে পারে।

এটা যে কোন কারণে হতে পারে। তাছাড়া সাধারণভাবে আপনি কখনো কখনো নির্ণয়ের জন্য আপিল করতে পারেন, কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

তাছাড়া আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে, যদি আপনি কোন শ্রেণী অনুসারে ভিসার জন্য মানা করে থাকেন, তাহলে ছয় মাস পর্যন্ত আপনি পরবর্তী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। যদি আপনার কাছে এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে এই সম্বন্ধে অভিজ্ঞ কোন উকিলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

আপনার ভিসা কেন অস্বীকার করা হতে পারে:

১) অপূর্ণ এবং ভুল কাগজপত্র:

ভিসা নেওয়ার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন পড়ে, সেগুলো যদি অপূর্ণ থেকে থাকে অথবা ডুবলিকেট ডকুমেন্টস /  ভুল কাগজপত্র জমা দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার ভিসা ক্যান্সেল হতে পারে অথবা অস্বীকার করতে পারে। তাই এক্ষেত্রে ছোট ছোট বিষয়ের প্রতি খুব ভালভাবে খেয়াল রাখাটা জরুরি।

২) ভিসা আধিকারিককে ভিসার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনি সম্পূর্ণরূপে যদি প্রমাণপত্র না দিয়ে থাকেন:

যখন আপনি কানাডার জন্য ভিসা নেওয়ার আবেদন করবেন, তাহলে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে, আপনি যখন অস্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে কানাডাতে যাচ্ছেন সেখানে কোনো কাজের ক্ষেত্রে এবং এই দেশে, স্বদেশে আপনার পরিবার, সম্পত্তি এবং রোজগার এর সঙ্গে বিশেষ সম্বন্ধে রয়েছে এবং যদি আপনি সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করতে না পারেন যে আপনি এই স্বদেশে আবার ফিরে আসবেনই, তাহলে আপনার ভিসা অস্বীকার করা যেতে পার।

৩) কানাডাতে যাওয়ার জন্য, সেখানে থাকার জন্য যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকার বন্দোবস্ত এর প্রমাণপত্র যদি না দেখাতে পারেন:

স্বদেশ থেকে বিদেশে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন হয়। শুধু তাই নয় এমনকি এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে যাওয়ার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন পড়ে। তাই যখন আপনি কানাডায় যাবেন, সেখানে থাকবেন, সেই অনুসারে আপনার কাছে যদি পরিমাণ মত টাকা থাকার কোনো রকম প্রমাণপত্র না থাকে, তাহলে আপনার ভিসা ক্যানসেল হতে পারে।

কেননা সেখানে আপনার ট্রিটমেন্ট, থাকা-খাওয়া সবকিছুর একটা খরচ রয়েছে। সেই অনুসারে আপনি সঠিক প্রমাণপত্র না দিতে পারেন তাহলে ভিসা অস্বীকার করা যাবে।

৪) যখন আপনি আন্তরাষ্ট্রীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা কে সম্পূর্ণ না করতে পারেন:

আপনার ভিসার আবেদন অস্বীকার করা হবে, সে ক্ষেত্রে যখন আপনি আন্তরাষ্ট্রীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা কি মান্য করতে না পারেন। যেমন ধরুন উদাহরণ হিসাবে, যদি আপনি কোন রকম অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত থাকেন এবং সেখানে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না অথবা আপনার ভিসাটি অস্বীকার করা হবে।

৫) সুস্বাস্থ্যের প্রমাণ পত্র:

অর্থাৎ কানাডায় যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে সম্পূর্ণ রূপে শারীরিক, মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। তবে কানাডা যাওয়ার আগে চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে, যদি আপনি সেখানে বিফল হয়ে থাকেন তাহলে কিন্তু আপনার ভিসা অস্বীকার করা হবে।

৬) অন্যান্য ভিসার সময়সীমা পার হয়ে যাওয়া:

যদি আপনি কানাডা অথবা অন্য কোন দেশে আপনার ভিসার সময়সীমা সমাপ্ত করে থাকেন তাহলে আপনার এই ভিসার আবেদনটি অস্বিকার করা হবে।

৭) আপনার পর্যটনের ইতিহাস:

যদি আপনি কানাডাতে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করেন এবং এর আগে অন্য কোন দেশে যদি না গিয়ে থাকেন, তাহলে কিন্তু এই ভিসা অস্বীকার করা যেতে পারে অনায়াসেই। তবে খেয়াল রাখবেন যে, থাইল্যান্ড, চীন, হংকং, দেশে যাওয়ার বিষয়টি কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপরে লক্ষ্যভেদ করতে পারেন, যদি আপনি অস্বীকার করার পর ভিসার জন্য আবেদন করে থাকেন তো:

১) পুন: আবেদন করা:

এই বিষয়ের ক্ষেত্রে আপনি ভিসার জন্য পুন: আবেদন করতে পারেন অথবা আই এ ডি অথবা ফেডারেল কোর্ট অফ কানাডা এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

২) প্রথমেই যে ভুলগুলোর কারণে আপনার ভিসা অস্বীকার করা হয়েছে সেগুলি শুধরে নেওয়া অথবা ঠিক করে নেওয়া:

আপনাকে সুনিশ্চিত করতে হবে যে, প্রথমে ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি যে ভুলগুলি করেছেন, সে গুলি যেন দ্বিতীয়বার না করেন। তাহলে কিন্তু আপনার ভিসাটি আবার ক্যান্সেল হয়ে যেতে পারে। তাই সমস্ত রকম বিষয়গুলির উপরে সম্পূর্ণ রূপে প্রমাণপত্র ও সঠিক কাগজপত্র দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।

কানাডা যাওয়ার জন্য অনেক রকম কারণ থাকতে পারে, সেটা হতে পারে পড়াশোনা, ঘুরতে যাওয়া, ব্যবসা, কাজের ক্ষেত্র অথবা আপনি স্থায়ীভাবে সেখানে বাসিন্দা হতে চাইছেন, সে ক্ষেত্রে। তাহলে যদি আপনি স্থায়ী বাসিন্দা হন, একটা দিন নিজের বাড়িতে ফিরে আসবেন স্বদেশে তার প্রমান পত্র দিতে কখনোই ভুলবেন না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top