জন্ম প্রমাণপত্র কি? জন্ম প্রমাণপত্র বানানোর পদ্ধতি ও নিয়ম জানুন

Birth Certificate Apply West Bengal: জন্ম প্রমাণপত্র কি? জন্ম প্রমাণপত্র কিভাবে বানাবেন? | বাচ্চার ভবিষ্যতের জন্য জন্ম প্রমাণপত্র কিভাবে জরুরি জানুন । জন্ম প্রমাণপত্র বানাতে কি কি প্রয়োজন? আর কোথায় পাবেন এই জন্ম প্রমাণপত্র? আসুন জেনে নিন

জন্ম সার্টিফিকেট বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট অথবা কাগজপত্রও বলতে পারেন। যে কোনো প্রয়োজনীয় কাজে ডকুমেন্ট টি বয়সের প্রমাণপত্র হিসেবে প্রয়োজন পড়ে।

জন্ম প্রমাণপত্র কি? জন্ম প্রমাণপত্র বানানোর পদ্ধতি ও নিয়ম জানুন
জন্ম প্রমাণপত্র কি? জন্ম প্রমাণপত্র বানানোর পদ্ধতি ও নিয়ম জানুন

তাই প্রতিটি বাচ্চা জন্ম হওয়ার পর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তার জন্ম সার্টিফিকেট অথবা জন্ম এর প্রমাণপত্র তৈরি করা নিয়ে। আর এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র বলা যায়।

জন্মের প্রমাণপত্র আসলে কি?

কোন বাচ্চা অথবা কোন ব্যক্তির জন্য জন্মের প্রমাণপত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাগজ পত্রের বিষয় যে কোন প্রকার সরকারি কাগজপত্র বানানোর জন্য আপনার জন্মের প্রমানপত্র প্রয়োজন পড়বে।

তাছাড়া বর্তমান সময়ে জন্মের প্রমাণপত্র থাকাটা অনস্বীকার্য বলা যেতে পারে। বাচ্চা জন্মাবার পর জন্মের প্রমাণপত্র তৈরি করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে একটি।

আজকাল প্রতিটি কাজে, সেটা হতে পারে স্কুল-কলেজ, কোন সরকারি কাজ অথবা পাসপোর্ট বানাবেন সেখানেও কিন্তু আপনার জন্ম সার্টিফিকেট অথবা জন্মের প্রমাণপত্র অবশ্যই প্রয়োজন পড়ে।

যদি কোন বাচ্চার জন্ম হাসপাতালে হয়, তাহলে সেখান থেকেই বাচ্চার বাবা মা কে বাচ্চার জন্মের ২১ দিন এর মধ্যে জন্ম এর প্রমাণপত্র অথবা জন্ম সার্টিফিকেট দেওয়া হয়ে থাকে।

আর যদি কোনো কারণে ওই সময় বাচ্চার জন্মের প্রমাণপত্র না পাওয়া যায়, তাহলে আপনার কাছাকাছি পঞ্চায়েত কার্যালয়ে গিয়ে বাচ্চার বার্থ সার্টিফিকেট অথবা জন্ম এর প্রমাণপত্র নিতে পারবেন।

আর যদি এই বার্থ সার্টিফিকেট বানানোর জন্য আপনার ইচ্ছা জেগে থাকে, তাহলে আধিকারিক ওয়েবসাইট এর ওপর লগ ইন করে আপনি আপনার বাচ্চার বার্থ সার্টিফিকেট নিজে থেকেই বানাতে পারবেন।

জন্মের প্রমাণপত্র বানানোর প্রক্রিয়া:

জন্মের প্রমাণপত্র প্রধানত দুই রকম ভাবে বানানো যেতে পারে, এটি অনলাইন অথবা অফ্লাইন মাধ্যমে বানাতে পারেন। অনলাইন এর জন্য আধিকারিক ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম ফিলাপ করে আবেদন করতে হয়।

আর অফলাইনের মাধ্যমে জন্ম এর প্রমাণপত্র পাওয়ার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপগুলি আপনাকে গ্রহণ করতে হবে, সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:

১) সবার প্রথমে সম্বন্ধিত রেজিস্টার কার্যালয় থেকে জন্মের রেজিস্ট্রেশন ফরম নিতে হবে।

২) আর যদি বাচ্চা হাসপাতালে হয়ে থাকে তাহলে চিফ মেডিকেল অফিসার নিজে থেকেই আপনাকে এই ফর্ম দিয়ে দেবেন।

৩) ফরম ফিলাপ করার পর, বাচ্চার জন্ম সম্পর্কিত হাসপাতাল দ্বারা প্রাপ্ত কাগজপত্র এর সাথে এই ফর্ম রেজিস্টার এর কাছে জমা করতে হবে।

৪) এরপর জন্ম রেকর্ড, যেমন ধরুন দিন, সময়, জন্মস্থান, বাবা – মায়ের নাম, নার্সিংহোম অথবা হাসপাতাল সম্বন্ধিত সমস্ত রকম তথ্য, অবশ্যই সেগুলি সত্যি হতে হবে, রেজিস্টার দ্বারা করতে পারেন।

৫) এরপর বাচ্চার জন্মের প্রমাণপত্র আবেদক এর কাছে দেওয়া হবে।

৬) ৭ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় নিয়ে আপনার ঠিকানায় জন্মের প্রমান পত্র পাঠানো হয়ে যাবে।

৭) জন্ম আর মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন অধিনিয়ম 1969 অ্যাকশন 14 অনুসারে, বাচ্চার নাম ছাড়া ও জন্মের প্রমাণপত্র আপনি তৈরি করতে পারবেন, কেননা অনেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুদিন সময় নিয়ে, নাম নির্বাচন করে, তবেই নামকরণ করেন। সেক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া তাদের অনেকটাই সহযোগিতা করবে।

৮) এই মামলাতে নাম রেজিস্ট্রেশন প্রাধিকরণ দ্বারা বাচ্চার জন্মের রেজিস্ট্রেশন এর তারিখ থেকে বারো মাস এর ভিতরে আরো কিছু নিয়মের সাথে ১৫ বছর পর্যন্ত নির্ধারিত শুল্ক এর সাথে দায়ের করা যেতে পারে।

৯) যদি বাচ্চার জন্মের প্রমাণপত্র জন্মের ২১ দিনের ভিতরে রেজিষ্ট্রেশন না হয়ে থাকে, তাহলে রাজস্ব আধিকারিক এর নির্দেশের উপর পুলিশ বাচ্চার জন্ম  সত্য সম্বন্ধিত তথ্যকে যাচাই করবে সাধারণত এটি খুবই লম্বা প্রক্রিয়া।

জন্মের প্রমাণপত্র বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

জন্মের প্রমাণপত্র তৈরি করার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র গুলি আপনার প্রয়োজন পড়তে পারে সেগুলি হল:-

  • বাচ্চার নাম (বৈকল্পিক)
  • জন্মস্থান
  • জন্মের সময় অথবা তিথি
  • বাবা মায়ের নাম
  • বাবা-মায়ের ঠিকানা
  • যদি বাচ্চার জন্ম হাসপাতালে হয়, তাহলে সেই বাচ্চার জন্মের প্রমাণপত্র হাসপাতাল থেকে প্রদান করা হবে।

জন্মের প্রমাণপত্র কোথা থেকে দেওয়া হয়ে থাকে?

জন্মের প্রমাণপত্র রাজ্য সরকার দ্বারা একটি প্রাধিকরণ এর সাহায্যে দেওয়া হয়ে থাকে। যা কিনা ব্যক্তি অথবা বাচ্চার জন্ম তিথি অথবা সময়কে প্রমাণিত করে। এই জন্ম সার্টিফিকেট অথবা জন্মের প্রমাণপত্র দেওয়া প্রাধিকরণ রাজ্য তে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

সাধারণত পৌরসভা বা তহসিলদার দ্বারা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু বেশকিছু রাজ্য তে কেন্দ্র শাসিত প্রদেশে জন্ম এর প্রমাণপত্র জেলা ম্যাজিস্ট্রেট / কালেক্টর / রাজস্ব ক্ষেত্র আধিকারিক / উপ-বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অথবা অন্য জেলা প্রাধিকরণ দ্বারা দেওয়া হয়ে থাকে।

জন্মের প্রমানপত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা: 

১) কোন ব্যক্তি তার জন্মের প্রমানপত্রের সাহায্যে সরকারি যোজনা অথবা প্রকল্প এর সম্পূর্ণরূপে লাভ পেতে পারেন।

২) কোন বাচ্চা স্কুল অথবা কলেজ দ্বারা ছাত্র বৃত্তি প্রাপ্ত করার ক্ষেত্রে এই জন্ম সার্টিফিকেট বা জন্মের প্রথম পত্র বিশেষভাবে সহযোগিতা করে।

৩) যদি আপনার কাছে জন্মের প্রমাণপত্র থাকে তাহলে আপনি অন্য কোনো কাগজপত্র খুবই সহজে তৈরি করতে পারবেন এর সাহায্যে।

৪) যদি আপনি কোথাও থেকে সম্পত্তি নিয়ে থাকেন যে সম্পত্তি আপনার নামে হতে চলেছে, তাহলে সেই কাগজপত্রে আপনার জন্মের প্রমাণপত্র প্রয়োজন পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে কিন্তু জন্মের প্রমাণপত্র তৈরি করে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৫) বাল্যবিবাহ এর মত শোষণ এর মামলাতে বাঁচার একমাত্র উপায় হল, এই জন্ম সার্টিফিকেট।

৬) সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনার জন্মের প্রমাণপত্র জমা করতে হতে পারে।

৭) সম্পত্তির অধিকার প্রাপ্ত করার জন্য কিন্তু এই জন্ম সার্টিফিকেট অথবা জন্মের প্রমাণপত্র আপনাকে অনেকটা সহযোগিতা করতে পারে।

জন্ম সার্টিফিকেট এর মামলাতে একজন উকিল আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারেন?

প্রথম এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো এক্ষেত্রে আপনাকে একটি সু-দক্ষ উকিল নিযুক্ত করতে হবে। কেননা এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। যেখানে জন্ম এর প্রমানপত্রের মামলাতে যে সমস্ত বিষয়গুলি অবগত হওয়া প্রয়োজন সেগুলি একজন উকিল খুবই ভালভাবে জানতে পারবেন।

জন্ম এর প্রমান পত্রের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইন অথবা অফলাইন একটি আবেদন ফরম জমা করতে হবে ফিলাপ করে।

যার মধ্যে খুবই ছোট ছোট বিষয়গুলি খেয়াল রাখাটা জরুরি। যার জন্য একজন উকিল আপনাকে সঠিক ভাবে সাহায্য করতে পারেন। একজন উকিলের কাছে কাগজপত্র সামলানো আর ড্রাফট করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন-কানুন সম্বন্ধিত জ্ঞান আর অনুভব থাকে। যেটা আপনার প্রয়োজন পড়তে পারে।

একজন উকিল এর কাছে আইনের খুবই ভালো টেকনিক এর সম্বন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান থাকে। যদি আপনি এ বিষয়ে কোনো উকিল নিযুক্ত করেন, তাহলে খুবই কম সময়ের মধ্যে আপনার সমস্যার সমাধান হবে, আর খুবই ভালো ভাবে সমাধান করতে পারবেন।

জন্ম সার্টিফিকেট শুধুমাত্র বয়সের প্রমাণপত্রই নয়, এটি আপনার আরো অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে জড়িত। কেননা একটি কাগজপত্রের সমস্ত রকম তথ্য যখন আরেকটি কাগজপত্রের সাথে একই রকম ভাবে মেলে, তাহলে কোনরকম সমস্যাই তৈরি হয় না।

সে ক্ষেত্রে জন্মের প্রমাণপত্র আপনার সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে যেকোনো কাজ, সম্পত্তি কেনা-বেচা সবকিছুতে অনেকখানি সহযোগিতা করে। তাই অবশ্যই এই বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখাটা জরুরি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top