সুন্দর ব্যক্তিত্ব পেতে চান? তাহলে এই পদ্ধতি গুলি অবলম্বন করুন

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম জীব হিসাবে মানুষের সৃষ্টি। বিচার – বুদ্ধি দিয়ে সঠিক পথ বেছে নিতে একমাত্র মানুষই পারে। চলার পথে জীবনে অনেক মানুষের সাথে দেখা হয়, সবার ব্যবহার এক হয় না।

আপনি যেমন ধরনের ব্যবহার পেতে ভালোবাসেন অন্যের থেকে বা আশা করেন, অন্যের সাথেও ঠিক তেমনি ব্যবহার করা প্রয়োজন।

সুন্দর ব্যক্তিত্ব পেতে চান? তাহলে এই পদ্ধতি গুলি অবলম্বন করুন
সুন্দর ব্যক্তিত্ব পেতে চান? তাহলে এই পদ্ধতি গুলি অবলম্বন করুন

সবাইকে একই চরিত্রের মানুষ ভাবাটাও অন্যায়। কেউ আপনাকে যাহায্য করলে তাকে ধন্যবাদ জানাতে ভুলবেন না। সেই কাজটা যদি তার ডিউটির মধ্যে পড়লেও, তবুও ধন্যবাদ জানান।

একবার ভাবুন তো কেউ যদি আপনাকে ধন্যবাদ জানায় আপনার কতটা ভালোলাগে আপনার ছোট্ট একটা “Thank You” একটা মানুষের মন ভালো করতে পারে।

চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, আর মিলিয়ে দেখুন তো আপনার মধ্যেও আছে কিনা এসব অভ্যাস –

1 . বাহ্যিক আচরন : 

আমাদের আশেপাশের অনেক মানুষ নিজের অজান্তেই নিজের খারাপ আচরনের জন্য অন্য কোনো ব্যক্তিকে অসুবিধায় ফেলেন। এমন আচরণ না করাই ভালো যার জন্য অন্য কেউ আপনার দিকে বিরক্তির চোখে দেখে।

এক খুব খারাপ আচরণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আর এক খুব ভালো আচরন দৃষ্টি আকর্ষন তো করেই তার সাথে সাথে অনেকে তাকে ভালো ভাবে মনে রাখে, সবার মনে জায়গা করে নিতে পারবেন অনায়াসেই আপনার সুন্দর ব্যবহার দিয়ে।

2 . সম্মান করা : 

আপনি যে পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেন না কেন আপনার ব্যবহারই পরিচয় দেয় আপনার বাবা -মায়ের  শিক্ষার। ধনী হোক বা গরীব, সে যে ধর্মেরই হোক প্রথমে সে মানুষ।

আর মানুষ হয়ে মানুষের সম্মান করাটাও ভালো শিক্ষার পরিচয় দেয়। বড়দের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় তাদের সামনে আপনার চলাফেরা, সবকিছু নির্ভর করে আপনার মানসিকতার উপর।

একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির সাথে আপনি যে ব্যবহার টা করেন সেই ব্যবহার টাই করুন রিক্সাওয়ালা, চা বিক্রেতা, আপনার বাড়ির গার্ড থেকে বাড়ির কাজের লোকের সাথে।

কেননা দিনের শেষে কেউ আপনার টাকাটাকে মনে রাখবে না, মনে রাখবে আপনার সুন্দর ব্যবহারটাই।

3 . দয়াশীল : 

আপনার কত টাকা আছে তাতে সাধারণ গরীব মানুষ গুলোর কিছু এসে জায় না। যাদের সত্যিই সাহায্যের প্রয়োজন তাদের কতটা সাহায্য করতে পারলেন সেটাই বড় কথা এই করোনা পরিস্থিতিতে কত মানুষ কাজ হারিয়েছেন, পরিবার নিয়ে পথে বসেছেন, কত মানুষ আত্মহত্যা করেছে, কতজনের সাজানো স্বপ্ন গুলো ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেছে।

ঝড়ে বন্যায় কত মানুষ হয়েছে সর্বহারা, নিঃস্ব। একটু সাহায্যের হাত বাড়ালেই তাদের মুখে হাসি ফোটানো যায়।

শুধু টাকা দিয়ে নয়, আপনার অপ্রয়োজনীয় জিনিস কোনো অসহায় মানুষকে দিয়ে দেখুন হয়তো সেটারই খুব প্রয়োজন ছিল তার জীবনে।

যে হাসি টুকু দেখবেন তাতে আপনার মনে যে শান্তি আসবে তা আপনি কোটি টাকা দিয়েও কিনতে পারবেন না।

4 . সংযত হোন : 

সামনের মানুষ যদি কোন অপ্রীতিকর কথা বলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করবেন না। হয়তো সে কোনো খারাপ পরিস্থিতির  মুখোমুখি হয়েছে।

চুপ থাকুন, দেখবেন পরে রাগ কমলে সে নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারবে, তখন খারাপ টা তারই বেশি লাগবে। রাগের মাথায় কাউকে বড়ো কথা বলতে যাবেন না, সে আপনার নিজের কেউ হোক বা অচেনা কেউ।

রাগ কমলে আপনি হয়তো ক্ষমা চাইবেন তার কাছে, সে ক্ষমা করেও দিলো। কিন্তু সেই কথার কারনে সে মনে যে আঘাতটা পেয়েছে সেটা হয়তো ভুলতে পারবে না।

5 . গুরুত্ব দিন : 

কেউ আপনাকে ভালোবেসে কিছু দিতে চাইলে এই নয় যে সবচেয়ে দামী জিনিস টাই চেয়ে বসবেন।

ধরুন আপনার কোনো বন্ধু চাকরি  পেয়েছে, আপনাকে ভাল কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে নিয়ে গেছে মেনুকার্ডটা আপনার হাতে ধরিয়ে  দিয়ে  অর্ডার দিতে বললে চট করে দামী খাবার টাই অর্ডার দিয়ে বসবেন না।

তাকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী অর্ডার দিতে দিন। এতে আপনার বন্ধুর আপনার  প্রতি সম্মান অনেক বেড়ে যাবে, খুশি হবে অনেক খানি।

6 . কারোর ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ না করা : 

আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কত মানুষ কত খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে জীবন অতিবাহিত করে, কোনো বন্ধু বা পরিচিত কারো সাথে দেখা হলে শুরুতেই সে কি কাজ করে, কতটাকা বেতন পায়, এখনও বাচ্চা হয়নি কেন এধরনের প্রশ্ন করতে যাবেন না।

হয়তো তার জীবনে এমন অনেক বাধা বিপদ এসেছে যা আপনার ধারণারও বাইরে। আপনি তার বিষয়ে যতটুকু জানেন ততটুকুই খোঁজ নিন।

আপনার কাছে কেউ কোনো কিছুর পরামর্শ না চাইলে আগে থেকেই কিছু বলতে যাবেন না। এতে সে বিরক্ত হতে পারে। আর তাকে নিয়ে ততটাই মজা করুন, যতটা সে ভালোভাবে সহ্য করতে পারে।

যদি তার  অস্বস্তি লাগে, মজা করা সেখানেই বন্ধ করুন। না হলে আপনাকে দেখলে তার বিরক্তিবোধের সৃষ্টি হবে। এদিকটা খেয়াল রাখবেন।

7. সমালোচনা : 

পরচর্চা, পরনিন্দা এসবই নেগেটিভ চিন্তাধারার মানুষরা করে থাকে। আপনি যদি পজিটিভ মানসিকতার মানুষ হন তাহলে কোনওদিন আপনি এসব করতে চাইবেন না।

কে কেমন ভাবে বাঁচবে? কেমনভাবে চলাফেরা করবে? সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেটা নিয়ে সমালোচনা করার কোনো জায়গাই নেই।

পৃথিবীতে অন্যের সমালোচনা করে কেউ কোনোদিন বড় হতে পারে নি, সফল হয়নি। সমালোচনা, চর্চা যদি করতেই হয় নিজেকে নিয়ে করা ভালো এতে নিজের ভুল গুলো বোঝা যায়, নিজেকে আগের থেকে উন্নত করা যায়।

অন্যদিকে কারোর কোনো সমালোচনাকেও গুরুত্ব দেবেন না, নিজেকে ভালোভাবে গড়ে তুলুন, পরিশ্রম করুন দেখবেন সাফল্য আপনার কাছে আসতে বাধ্য।

সাফল্য এমন এক জিনিস যা শুধুমাত্র পরিশ্রমী মানুষকেই ভালোবাসে।

8 . পজিটিভ চিন্তাধারা : 

মানসিকতার উপর নির্ভর করে আপনার জীবন কেমন হবে বা কেমন হতে চলেছে। সব জায়গায় টাকা দিয়ে সমস্যার সমাধান করা যায় না।

কেউ আপনার কাছে তার সমস্যা নিয়ে আসলে তাকে পজিটিভ ভাবেই বোঝান, হয়তো সে আপনার কথা শুনে সেই সমস্যার সমাধান করার সাহস পাবে। চেষ্টা করাটা সমাধানের প্রথম ধাপ।

9 . সিদ্ধান্ত : 

কথায় আছে একটা ছোট সিদ্ধান্ত মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। একটা বিশাল বাড়ির থেকে দরজা অনেক ছোট, দরজার থেকে তালা ছোট,  তালার থেকে চাবি ছোট, আর এই চাবি দিয়েই প্রবেশ করা যায় ওই বিশাল বাড়িটিতে।

তাই আপনার ছোট ছোট সিদ্ধান্ত বড়ো বড়ো পরিবর্তন আনতে পারে।

সবাই সবার জীবন নিয়ে ব্যস্ত। কার কি আছে, কে কত টাকার মালিক তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় কারো নেই। মানুষ আপনাকে মনে রাখবে আপনার ব্যবহারে।

সবার সাথে ভালো ব্যবহার করুন, ভাল কাজ করুন, মৃত্যুর পরেও মানুষের মনে বেঁচে থাকতে ভালো ব্যবহার, ভালো কাজই যথেষ্ট। কারোর উপকার যদি একান্তই করতে না পারেন কারো সর্বনাশ করবেন না।

আপনার করা উপহাস, তামাশা হয়তো কারো জীবনে অন্ধকার ডেকে আনতে পারে, ভুগতে পারে ডিপ্রেশন নামক অসুখে।

আপনার সম্পত্তি থাকতেই পারে, তা নিয়ে অন্যের সাথে তুলনা বা খারাপ ব্যবহার কখোনোই ঠিক নয়, কারণ এই ব্যবহারে অনেকেই কষ্ট পেতে পারে, হারিয়ে ফেলতে পারে বেঁচে থাকার রসদটুকু।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top