WB Bangla Shasya Bima Scheme 2023: Online Registration @ matirkatha.gov.in | পশ্চিমবঙ্গ বাংলা শস্য বীমা যোজনা 2023 – আবেদন অনলাইন | বাংলা শস্য বীমা যোজনার লাভ কি? কিভাবে পাবেন এই প্রকল্পের সুবিধা? জানুন এখানে।
প্রতিটি মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য কোন না কোন কাজ বেছে নিয়ে থাকেন। তবে আমাদের গ্রাম বাংলার কৃষকরা, তাদের মূল আয়ের উৎস হলো কৃষিকাজ। তাছাড়া তাদের জীবিকা নির্বাহ থেকে শুরু করে সমস্ত রকম চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে এই কৃষিকাজের উপরেই। তাই তারা তাদের কৃষিকাজকে সবচেয়ে বেশি ভালোবেসে থাকেন এবং নিজের সবটুকু পরিশ্রম দিয়ে সুন্দরভাবে সুন্দর সুন্দর শস্য উৎপাদন করেন, যেটা সাধারণ মানুষের খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে থাকে।
আমাদের জীবনের সাথে সমস্ত রকম কর্মের মানুষ বিভিন্ন দিক থেকে সহযোগিতা করে থাকে। সবথেকে বেশি সহযোগিতা করে থাকে আমাদের কৃষক বন্ধু রা। তারা যদি চাষবাস ছেড়ে দেন তাহলে বলতে গেলে অনাহারে মরতে হবে আমাদের। তাই কৃষকদের গুরুত্ব আগে থেকেই বোঝা উচিত, না হলে ভবিষ্যত অনেকটাই অন্ধকারে আচ্ছন্ন হতে পারে।
আর তাইতো পশ্চিমবঙ্গ সরকার কৃষকদের সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা ও কষ্টের কথা চিন্তা করে শস্য বীমা প্রকল্প (West Bengal Crop Insurance Scheme) চালু করেছে। অনেক সময় বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষক দের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তার জন্য কত কৃষক আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়েছেন তার কোন ঠিক নেই। এরকম পরিস্থিতি যেন ভবিষ্যতে আর না হয়, তার জন্য শস্য বীমা যোজনা অনেকটা আশার আলো দেখাবে আশা করা যায়। বাংলা শস্য বীমা কৃষকদের জীবনে নতুন আলোর দিশা হয়ে আসবে, তা তো জানাই যাচ্ছে।
অনেক চাষি রয়েছেন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন। কেননা বর্তমানে চাষের জন্য প্রচুর খরচ হয়, বীজ কেনা থেকে শুরু করে জমি তৈরি করা, ট্রাক্টর, জমি চষা, শ্রমিক খরচ, কীটনাশক থেকে শুরু করে ফসল তোলা পর্যন্ত প্রচুর খরচ হয়। সেই খরচ অনেকের কাছে প্রায় থাকে না বললেই চলে। তার জন্য বাধ্য হয়েই ব্যাংক থেকে লোন নিতে হয়।
আর যখন সেই ফসল কোন কারণে নষ্ট হয়ে যায়, তার ফলে বিক্রি না হওয়ার জন্য ব্যাংক থেকে নেওয়া লোন কোন রকম ভাবেই পরিশোধ করতে পারেন না। তার ফলে একদম হতাশাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়েন প্রচুর চাষী। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি কৃষকদের ফসল রক্ষা করার জন্য এই বীমা যোজনা নিয়ে এসেছেন, যার নাম “বাংলা শস্য বীমা যোজনা (Bangla Shasya Bima Scheme)”।
সুচিপত্র
- বাংলা শস্য বীমা যোজনা 2023:
- বাংলা শস্য বীমা 2023 (Bangla Shasya Bima 2023):
- বাংলা শস্য বীমা কোন কোন ফসলের উপর হতে পারে:
- বাংলা শস্য বীমা প্রিমিয়াম:
- নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের বাংলা শস্য বীমার টাকার পরিমান কত:
- বাংলা শস্য বীমা যোজনা তে কিভাবে আবেদন করবেন:
- বাংলা শস্য বীমা যোজনা তে আবেদনর ডকুমেন্টস অথবা কাগজপত্র:
- বাংলা শস্য বীমা যোজনা তে কারা আবেদন করতে পারবেন:
বাংলা শস্য বীমা যোজনা 2023:
আমাদের গ্রামবাংলায় মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন রকমের শস্য দিয়ে ভরা থাকে অর্থাৎ কৃষকরা শস্য উৎপাদন করে খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে থাকেন, সেই শস্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে অনেক সময় অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
সেই শস্য ক্ষতি হওয়ার আগে ইন্সুরেন্স করা হয়, যাতে এই দুর্যোগে যদি আপনার সমস্ত রকম ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে আপনি মোটামুটি পরিমাণের টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেয়ে যেতে পারেন অথবা পাবেন। আর এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে রাখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং সেটা একেবারেই বিনামূল্যে।
বাংলা শস্য বীমা 2023 (Bangla Shasya Bima 2023):
আগেই বলা হয়েছে যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে আমরা কোন কিছুই নই, বলতে গেলে খড়কুটোর মতো ভেসে যেতে পারি। সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা কৃষকদের ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে যে ক্ষতি হয় তার জন্য বিমা সরূপ একটি যোজনা তৈরি করেছেন।
সরকার কৃষকের জন্য যে অর্থ ব্যয় করে এক কথায় তাকে বাংলা শস্য বিমা বলে। যেটা এই শস্য সংরক্ষণ অথবা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে কৃষক দের। সবথেকে খুশীর খবর হলো, এই শস্য বীমার মাধ্যমে কৃষকরা কোন রকম টাকা খরচ না করেই এই বীমার টাকা পেয়ে যাবেন।
বাংলা শস্য বীমা কোন কোন ফসলের উপর হতে পারে:
আমাদের পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন রকমের চাষাবাদ হয়ে থাকে। এবারে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, বিভিন্ন রকমের শস্য উৎপাদনের ফলে কিভাবে বোঝা যাবে যে, কোন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে বীমার টাকা পেতে পারেন, কি তাইতো!
এ ক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে সমস্ত শস্যের উপরে শস্য বীমার নির্দেশ দিয়েছে সেগুলি হল:- ধান, গম, সরিষা, মসুর ডাল, চিনাবাদাম ও আলু চাষের উপরে এই শস্য বীমা করা যেতে পারে। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই সমস্ত শস্যের যদি ক্ষতি হয়, তার বীমা করতে পারেন অথবা বীমার টাকা পেতে পারেন।
বাংলা শস্য বীমা প্রিমিয়াম:
আপনি যদি বাংলা শস্য বিমা করান, তাহলে আপনাকে প্রিমিয়াম ভরতে হবে। আপনি যদি আলু ও আখ চাষ করে থাকেন, তাহলে আপনাকে ৪.৯৫% প্রিমিয়াম ভরতে হবে। শুধুমাত্র এই দুটো ফসলের জন্য ধার্য করা হয়েছে প্রেময়াম।
নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের বাংলা শস্য বীমার টাকার পরিমান কত:
- যদি আপনার ফসলের ৭৫% পর্যন্ত নষ্ট হয় তাহলে বীমা অনুযায়ী সর্বাধিক ২৫% পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন।
- আর যদি পাহাড়ি এলাকায় কৃষকরা আবেদন করে থাকেন, সেক্ষেত্রে যদি ৭৫% পর্যন্ত ফসল নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে ৫০% পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। কেননা পাহাড়ি এলাকায় চাষাবাদ অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ।
বাংলা শস্য বীমা যোজনা তে কিভাবে আবেদন করবেন:
বেশিরভাগ কৃষক অনলাইনে আবেদন করতে যদি না পারেন, তাহলে অফলাইন এর মাধ্যমে খুবই সহজ ভাবে এই বাংলা শস্য বিমা যোজনার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার স্থানীয় কৃষি দপ্তর অথবা অঞ্চল অফিসে গিয়ে ফরম সংগ্রহ করুন এবং সম্পূর্ণ তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে জমা করতে পারেন।
এছাড়া যদি অনলাইনে আবেদন করতে চান তাহলে https://banglashasyabima.net/farmer-corner এই অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এর মধ্যে দিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।
এ ছাড়া এই ওয়েবসাইটের মধ্যে দিয়ে ফার্মার কর্নার (farmer corner) এই অপশনে ক্লিক করে ভোটার কার্ড আইডি নাম্বার বসিয়ে দিয়ে বাংলা শস্য বীমা স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।
বাংলা শস্য বীমা যোজনা তে আবেদনর ডকুমেন্টস অথবা কাগজপত্র:
- আধার কার্ডের জেরক্স।
- ভোটার আইডি কার্ডের জেরক্স কপি।
- ব্যাংকের পাসবুক এর জেরক্স।
- ব্যাংকের পাস বই এর ছবি সহ ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার লাগবে।
- সাম্প্রতিক খতিয়ান অথবা পর্চা জেরক্স।
- আপনার এলাকায় কৃষি অধিকারীদের শস্য রোপনের শংসাপত্র তার সাথে সই লাগবে।
- এছাড়া যদি আপনি ভাগ চাষী হয়ে থাকেন তাহলে জমি অধিকার সংক্রান্ত তথ্য এবং আপনার এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সই লাগবে।
বাংলা শস্য বীমা যোজনা তে কারা আবেদন করতে পারবেন:
- পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে অবশ্যই সেই আবেদনকারী কৃষককে।
- নিজের নামে চাষযোগ্য জমি থাকতে হবে।
- যদি কৃষক ভাগচাষী হয়ে থাকেন তবুও আবেদন করতে পারবেন।
- শুধু তাই নয়, ভাড়া নেওয়া জমি চাষ করা চাষীরাও এই বীমা যোজনার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- কৃষকের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর থাকতে হবে।
- যদি অন্য কোন ফসল বীমা প্রকল্প তে আবেদন করে থাকেন, তাহলে বাংলা শস্য বীমা (Bangla Shasya Bima Scheme) যোজনা আবেদন করতে পারবেন না।
- পুরুষ হোক অথবা মহিলা, প্রত্যেকেই আবেদন করতে পারবেন যদি তাদের নামে চাষযোগ্য জমি থাকে।
- কৃষকের ভোটার আইডি কার্ড ও আধার কার্ড।
- তার সাথে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নাম্বার থাকতে হবে।
- এছাড়া কোন কৃষকের নামে জমি থাকলে সেই জমির খতিয়ান পর্চা, পাট্টা, দলিলের জেরক্স জমা করতে হবে।
- আর ভাগচাষী হলে অথবা অন্যের জমিতে চাষ করলে, তাহলে জমিতে অধিকার সংক্রান্ত শংসাপত্র জমা করতে হবে।
তাহলে অনলাইন হোক অথবা অফলাইন, যে কোনো ভাবেই কয়েকটি ডকুমেন্টেশনের মধ্যে দিয়ে এ বাংলা শস্য বীমা যোজনা (WB Bangla Shasya Bima Scheme) তে আবেদন করতে পারবেন প্রত্যেকটি কৃষক। নিজেদের শস্যের ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা পেয়ে যাবেন ব্যাংক একাউন্টে। তবে তার জন্য আগে আবেদন করতে হবে এই যোজনার জন্য।
কৃষকদের সবদিক সুবিধা ও অসুবিধার কথা চিন্তা করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এই যোজনা চালু করেছে। আর এই যোজনা কৃষকদের অনেকটাই সহযোগিতা করবে সেটা তো, আশা করাই যাচ্ছে।
Home | Click here |
Official Website | Click here |