কোনো মামলার অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করবেন কিভাবে?

Bail Application Procedure in Bengali: কোন মামলার অগ্রিম জামিন কিভাবে আবেদন করবেন? | যে কোন মামলার বিরুদ্ধে অগ্রিম জামিন আবেদনের আইনি পদ্ধতি | জানুন আইনি নিয়ম অনুসারে কোন মামলার অগ্রিম জামিন আবেদন করবেন?

অনেক সময় অপরাধ জেনে-বুঝে করা হয়, আবার অনেক সময় কোনো কিছু দোষ না করেও সেই অপরাধে জড়িয়ে যেতে হয়। তাছাড়া অনেকেই শত্রুতা করে আপনার সাথে এমন টা করতেও পারেন। আর কখনোই কেউ চাইবেন না যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ছেড়ে দিয়ে জেলে দিন কাটাতে।

কোনো মামলার অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করবেন কিভাবে?
কোনো মামলার অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করবেন কিভাবে?

কোন কেস অথবা মামলার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ মানুষ আগে থেকে জামিনের জন্য আবেদন করে থাকেন। যাতে তাকে জেল হেফাজতে না থাকতে হয়। তবে বেশ কিছু আইনি পদ্ধতি এবং প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আপনি এই আগে থেকে জামিনের ব্যবস্থা করতেই পারেন।

অগ্রিম জামিন আসলে কি? 

যদি কোন ব্যক্তি কোন অপরাধমূলক কাজের মামলাতে গ্রেফতার হওয়ার ভয় থেকে থাকে, আর আগে থেকে জামিন করার জন্য চিন্তাভাবনা করে থাকেন, তাহলে সেটা সম্ভব। জামিন হলো আইন অনুসারে সেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে রেহাই দেওয়া অথবা শাস্তি থেকে তাকে বাঁচানো।

অভিযুক্ত ব্যক্তির উপরে নির্ভর করে এবং সেই মামলা কতখানি গম্ভীর রূপ ধারণ করতে পারে তার ওপর নির্ভর করে, একজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ রূপে গ্রেপ্তার হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে পারেন বা এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন, যা কিনা সেই ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়া থেকে বাঁচতে পারবেন। তাছাড়া কিছু মামলাতে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পর তার জামিন অনুসারে মুক্ত করা হয়, যেটা আইন অনুযায়ী নিয়ম রয়েছে।

অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন কখন করা যেতে পারে?

১) কোন অপরাধমূলক বিষয়, এই ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা যদি থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে অগ্রিম জামিনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই অগ্রিম জামিন কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার হওয়া থেকে প্রথমেই বাঁচাতে পারে এবং প্রথমেই সেই মামলার জন্য জামিন করিয়ে দিতে পারে। সেই অনুসারে ব্যক্তিকে মুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয় আইন অনুসারে।

২) যদি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তি মনে করেন যে, কোন অপরাধমূলক কাজের জন্য তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে, কিন্তু সেই অপরাধ সেই ব্যক্তি কখনোই করেন নি, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে অগ্রিম জামিনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বা আবেদন করতে পারেন। সেই অধিকার আইন দিয়ে রেখেছে।

৩) পুলিশের সামনে কোন ব্যাক্তির স্ত্রী যদি কোন অপরাধ মূলক কাজের জন্য অভিযোগ দায়ের করেন, সেটা জানার পর অথবা আপনার পরিবারের বিরুদ্ধে সেই স্ত্রীর পরিবার যদি কোন রকম অভিযোগ দায়ের করেন, সেক্ষেত্রে অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

৪) এই বিষয়টাও জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যে অপরাধের জন্য এফ আই আর (FIR) দায়ের করা হয়েছে, সেই অপরাধ এর জন্য জামিন পাওয়া সম্ভব নাকি সম্ভব নয়।

কেননা জামিন পাওয়া অপরাধের মামলায় জামিন হলো একটি অধিকার আর বিনা জামিন এর মত অপরাধের ক্ষেত্রে জামিন এর অনুদান কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটা জামিন ছাড়া হয়ে থাকে।

অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন কিভাবে করবেন?

১) আগে থেকে পাওয়া গ্রেপ্তারের নোটিশ / জামিনের নোটিশ আর অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে একজন উকিলের সাথে যোগাযোগ করুন।

২) প্রমান পত্র এবং তথ্য এর সংস্করণ এর উল্লেখ করা একটি অগ্রিম জামিনের দরখাস্ত তৈরি করতে হবে, তার জন্য একজন উকিল আপনাকে নিযুক্ত করতে হবে, যিনি দক্ষ ভাবে সেই আবেদন পত্র তৈরি করতে পারবেন।

৩) উপযুক্ত জেলা আদালতে আবেদন করুন।

৪) যখন সেই মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য তৈরি, তখন কিন্তু এই পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে যে, আপনার উকিল একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তির সাথে রয়েছেন।

যখন এফ আই আর (FIR) দায়ের করা হয় না, সে ক্ষেত্রে কি হতে পারে?

১) সরকারি অভিযোজক সম্বন্ধিত পুলিশ আধিকারিক এর সাথে যোগাযোগ করুন।

২) কেননা কোনরকম এফ আই আর দায়ের করা হয়নি, এই জন্য সরকারি অভিযোজক এটা খুব সহজেই মেনে নিতে পারবেন যে, অগ্রিম জামিন দেওয়ার জন্য কোনো রকম বাধা নেই।

৩) বিচারপতি এই বিষয়ের উপরে সহমত জানিয়ে আপনার উকিলকে মৌখিক ভাবে অগ্রিম জামিন ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বলতে পারেন।

৪) তারপর উকিল সাতদিন এর পূর্ব গ্রেপ্তারের নোটিশ এর জন্য অনুরোধ করতে পারেন, যদি পুলিশ আপনার পরিবার অথবা আপনাকে গ্রেফতার করার পরিকল্পনা করে থাকেন তো।

৫) যদি জামিনের আবেদন অস্বীকার করা হয়ে থাকে, তাহলে আপনি উচ্চ বিচারালয় এ আবেদন করতেই পারেন।

৬) উচ্চ বিচারালয় এও যদি জামিন অস্বীকার করে থাকে, তো সর্বোচ্চ বিচারালয় এ আবেদন করতে পারেন।

যখন এফ আই আর (FIR) দায়ের করা হয়ে থাকে: 

১) মামলাতে যখন এফ আই আর দায়ের করা হয়, তখন অনুসন্ধান আধিকারিক গ্রেপ্তারের নোটিশ পাঠাবেন।

২) যখনই এই নোটিশ আপনি পাবেন, তার ওপরে বর্ণিত ওই সমস্ত প্রক্রিয়া অনুসারে অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে।

জামিন যোগ্য অপরাধ এবং বিনা জামিন এর অপরাধ: 

পুলিশ দ্বারা রেজিস্টার করা অপরাধের ওপর নির্ভর করে একজন ব্যক্তি কে অপরাধী প্রক্রিয়া সঙ্গীতা 1973 সি আর পি সি (CRPC) এর অনুসারে জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে।

ধারা 436 এটা প্রমাণ করে যে, যখন কোন জামিনের অযোগ্য অপরাধ এর অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া যে কোন ব্যক্তিকে পুলিশ থানার একজন আধিকারিক দ্বারা ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছে অথবা জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে।

জামিন ক্যানসেল অথবা বাতিল করা: 

একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিনের উপর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই জামিন ক্যানসেল করা অথবা বাতিল করা হচ্ছে। যদি আদালত এর কোন শর্ত লংঘন হয়ে থাকে, তাহলে উচ্চ বিচারালয় অথবা সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়ে থাকে অথবা দিতে পারে যে, কোন ব্যক্তির জামিন যদি ক্যান্সেল হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা যেতে পারে। আর অভিযোগ পত্র অথবা অভিযোজন পক্ষ দ্বারা আবেদন এর উপর সেই ব্যক্তি কে জেল হেফাজতে রাখা যেতে পারে।

তো এই ভাবে আপনার কোন মামলার ক্ষেত্রে আগে থেকে জামিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে অবশ্যই একজন ভালো উকিলের সাথে পরামর্শ করুন, আর আইন অনুসারে সেই উকিলের কথামতো পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

অনেকসময় গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই আপনি যদি জামিন করতে পারেন, তাহলে আর গ্রেপ্তার হওয়ার ভয় থাকে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গ্রেফতারের পর যে শাস্তি আপনার জন্য যোগ্য, সেটা না হওয়ার জন্য অগ্রিম জামিন করতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top