ভারতের সমস্ত ট্রাফিক আইন ও জরিমানা, জেনে রাখুন নিয়ম কানুন

সঠিক ভাবে জেনে নিন ভারতের সকল ট্রাফিক আইন ও জরিমানা সম্পর্কে। এই আইনগুলি জেনে আপনি সতর্ক থাকবেন কোন অপ্রিয় দুর্ঘটনা অথবা ট্রাফিক ফাইন থেকে।

সকলের হয়তো এই বিষয়ে জানা নেই যে, পৃথিবীর দ্বিতীয় সবথেকে বড় সড়ক নেটওয়ার্ক হল এই ভারতে। তার সাথে সাথে সমস্ত পৃথিবী জুড়ে পথ দুর্ঘটনার ১০% অংশীদার ও রয়েছে এই ভারত। তার ওপর নির্ভর করে পথ সুরক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এছাড়াও ভারতে যাতায়াত সবথেকে বেশি খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে। যেখানে ট্রাফিক সিগন্যাল প্রতিনিয়ত অমান্য করা হয়। তার সাথে সাথে ট্রাফিক নিয়ম গুলি ও যথাযথ ভাবে পালন করা হয় না।

তার ফলে প্রতিনিয়ত অ্যাক্সিডেন্ট  এবং আরো অন্যান্য সমস্যা তৈরি হয়। দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই, আমেদাবাদ ইত্যাদি ধরনের মেট্রো শহরে প্রতিদিন এই যাতায়াতের উপরে বিপদ লেগেই রয়েছে।

এর পিছনে কারণ হলো রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া, তার সাথে সাথে খুবই খারাপ রাস্তা, ভি আই পি মুভমেন্ট এর কারণ ইত্যাদিও শামিল রয়েছে।

ভারতের সমস্ত ট্রাফিক আইন ও জরিমানা, জেনে রাখুন নিয়ম কানুন
ভারতের সমস্ত ট্রাফিক আইন ও জরিমানা, জেনে রাখুন নিয়ম কানুন

এছাড়া কিছু সাধারন বিষয়ের উপরে খেয়াল রেখে যদি গাড়ি চালানো যায় এবং ট্রাফিক নিয়ম ভালোভাবে পালন করা যায়, তাহলে এই সমস্ত বিপদ থেকে অনেকখানি রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

তাছাড়া সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সততার সাথে গাড়ি চালানো। যার ফলে ট্রাফিক বিপদ কম হতে পারে, উদাহরণ স্বরূপ যেগুলি করা যেতে পারে সেগুলি হল:-

১) প্রতিটি যানবাহনের ড্রাইভারকে রাস্তার বাম দিক থেকে গাড়ি চালানো উচিত।

২) তাছাড়া ড্রাইভারকে গাড়ি চালানো, আস্তে চালানো, কোথাও গাড়ি থামানো, গাড়ি ঘোরানো এবং আরো অন্যান্য বিষয় এর ক্ষেত্রে পিছনে এবং সামনের গাড়িকে সিগন্যাল বা সংকেত দেওয়া জরুরি, না হলে তারা কখনোই বুঝতে পারবেন না যে আপনি কোন দিকে যেতে চাইছেন।

৩) ড্রাইভারকে লাইন অনুসরণ করা জরুরি, ড্রাইভারকে কেবলমাত্র নিজের যানবাহনের ডান দিকের রাস্তা থেকে অন্য কোন গাড়িকে ওভারটেক করতে হবে।

৪) প্রতিটি গাড়ির চালককে ফায়ার ব্রিগেড তার সাথে এম্বুলেন্স এর জন্য রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

৫) সমস্ত রকম ট্রাফিক নিয়ম গাড়ির চালককে জানতে হবে এবং সেগুলি মানতে হবে।

ভারতের সমস্ত ট্রাফিক আইন ও জরিমানা
ভারতের সমস্ত ট্রাফিক আইন ও জরিমানা

সরকার দ্বারা লাগানো নতুন জরিমানা অ্যামাউন্ট যা আপনার জানা প্রয়োজন:

১) কোন টু হুইলার যানবাহন যেটা ওভারলোডিং করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে নতুন জরিমানা অ্যামাউন্ট 2000 টাকা এবং তিন মাসের জন্য লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হবে।

২) নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে 10,000 টাকা। যেটা আগে 2,000 টাকা ছিল।

৩) তীব্র গতিতে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে এল এম বি এর জন্য 1000 টাকা এবং এম এম বি এর জন্য 2000 টাকা। যা কিনা আগে শুধু মাত্র 400 টাকা ছিল।

৪) বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালানো 5,000 টাকা। যেটা আগে 1,000 টাকা ছিল।

৫) গাড়ির বীমা ছাড়া ড্রাইভিং করা 2,000 টাকা জরিমানা। যেটা আগে 100 টাকা ছিল।

৬) সিগন্যাল জাম্পিং- তিন মাসের জন্য লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং 1,000 টাকা পর্যন্ত জরিমানা, যেটা আগে শুধু মাত্র 100 টাকা জরিমানা ছিল।

৭) হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো, এক হাজার টাকা জরিমানা এবং তিন মাসের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে। যেখানে আগে শুধু মাত্র 100 টাকা জরিমানা ছিল।

৮) পারমিট ছাড়া গাড়ি চালানো, 10 হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে, যেটা আগে 5 হাজার টাকা জরিমানা ছিল।

তবে যদি আপনি কোনো রকম ভুল না করে থাকেন তা সত্বেও ট্রাফিক পুলিশ অথবা ট্রাফিক আধিকারিক আপনাকে অযথা বিরক্ত করে থাকেন, তাহলে আপনি সেই পুলিশ আধিকারিক এর সাথে অযথা তর্কে না জড়িয়ে সেই আধিকারিকের নাম, যদি পুলিশের পোশাক পরে থাকেন, তাহলে নেমপ্লেটের উপরে নাম এবং নাম্বার নোট করে আপনি আশেপাশে কোন পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

যদি সেই পুলিশ আধিকারিক আপনাকে তার পরিচয় পত্র না দিতে চান, তাহলে আপনি কখনই আপনার নিজের কাগজপত্র সেই পুলিস আধিকারিকের হাতে তুলে দেবেন না।

এছাড়া আপনার সাথে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ বিবরণ হিসাবে লিখে এবং পুলিশ আধিকারিক এর সম্বন্ধে সমস্ত রকম তথ্য প্রদান করে সেটি ডাক বিভাগের মাধ্যমে পাঠাতে পারেন। সেই পুলিশ আধিকারিক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার জন্য।

তবে অযথা তর্কাতর্কিতে না জড়িয়ে বুদ্ধিমত্তার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা জরুরী। এক্ষেত্রে আপনার মোবাইলে সমস্ত ঘটনা রেকর্ড করতে পারেন এবং কথাবার্তা অডিও রেকর্ড করতে পারেন, যেটা পরবর্তীতে প্রমাণ স্বরুপ আপনাকে অনেকখানি সহযোগিতা করবে।

এছাড়া যদি কোনরকম অসুবিধার কারণে আপনাকে ট্রাফিক পুলিশ রাস্তাতে গাড়ি থামানোর জন্য বলে থাকেন, তাহলে কিন্তু সেখানে অযথা তর্কাতর্কি করবেন না। কেননা একজন ট্রাফিক পুলিশ আধিকারিক এর ক্ষমতা অনেকখানি। আপনাকে কিন্তু কোনোরকম ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারেন।

তাই যে কাগজপত্র দেখতে চান সেটি যদি আপনার কাছে থেকে থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই দেখিয়ে দেবেন এবং যদি আপনার কাছে না থাকে তাহলে অনুরোধ করতে পারেন যে, এখন আপনার কাছে সেগুলি নেই অথবা যেটা বলবেন সেটা করার চেষ্টা করবেন।

তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজ করলে অথবা কোন গণ্যমান্য ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে নিজের এই বিপদ থেকে উদ্ধার হওয়ার চেষ্টা করলে, সেটা কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে তাই এমনটা কখনোই করবেন না।

এছাড়া একটা সাধারন মানুষের কর্তব্য এবং দায়িত্বের মধ্যে পড়ে যে, রাস্তায় সমস্ত রকম ট্রাফিক সিগন্যাল মান্য করে গাড়ি চালানো। কারণ নিজের সাথে সাথে আরও অনেক মানুষের জীবন জড়িয়ে রয়েছে সুন্দরভাবে গাড়ি চালানোর ওপর নির্ভর করে। বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালালে একজনের সাথে আরো অনেক মানুষের জীবন বিপদের মুখে পড়তে পারে।

Leave a Comment