মানুষ কি চাঁদে জমি কিনতে পারে?
আমাদের ছোটবেলায় আমরা প্রায় সবাই চাঁদের বুড়ির গল্প শুনেছি।
শুনেছি, চাঁদের বুড়ি চাঁদে বসে বসে সুতা পেচাতে থাকে। অনন্তকাল ধরে এই সুতা পেচানো।
এই গল্প শুনতে শুনতে ছোটবেলায়ই আমাদের মনে ভাবনা আসে আমাদের চাঁদে কি হচ্ছে দেখার। একবার যদি চাঁদে যেতে পারতাম।
ইদানিং শুনা যাচ্ছে বলিউড অভিনেতারা চাঁদে জমির মালিক হচ্ছেন । সত্যি কি তাই?
আমাদের সাইটে নিয়মিতভাবে আপনাদের সাথে জমি সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা চাঁদে জমি কেনা নিয়ে বিস্তারিত অনেক কিছু জানার চেষ্টা করবো। জানবো কোন কোন বলিউড অভিনেতার চাঁদে জমি আছে।
আরো পড়ুন: নিজের পছন্দের সরকারি জমি কিভাবে কিনতে পারবেন? জেনে নিন
চাঁদে যাবার সুপ্ত বাসনা আমাদের মনে সবসময়ই থাকে। কেমন হতো যদি আমরা চাঁদে বাড়ি বানাতে পারতাম? ছোটবেলায় গল্পশুনা সেই চাঁদের বুড়ির প্রতিবেশী হতাম। সেই সুপ্ত ইচ্ছা পুর্ন হবার সময় হয়তো এসে গেছে। https://lunarregistry.com এর মত ওয়েবসাইট এখন চাঁদে জমি কেনার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এই ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার পছন্দমত স্থান সাগরের পাড়ে, লেকের ধারে সহ আপনার স্বপ্নের মতই চাঁদের বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনতে পারতেছেন।
ভারতীয় রাজিব বাগদীর চাঁদে জমি কেনা
অবাক কারা ব্যপার হলো, চাঁদে জমি কেনা নিয়ে আজ আমরা কথা বলছি, আজ থেকে অনেক বছর আগে ২০০৩ সালেই হায়দারাবাদের রাজিব বাগদী চাঁদে ৫ একর জমি কিনে রেখেছেন। এতদিন পর ভারতের মহাকাশ প্রজেক্ট চন্দ্রযানের চাঁদে অভিযানে সময় রাজিব বাগদী এই চাঁদে জমি কেনার তথ্য সামনে নিয়ে আসলেন।
কত টাকায় কিনেছিলেন চাঁদের জমি ?
আমাদের সবারই জানার আগ্রহ আছে যে, কত টাকায় রাজিব বাগদী চাঁদে জমি কিনেছেন। মজার ব্যপার হলো যে, শুনে অবাক হবেন তখনকার মাত্র ১৪০ ডলার বা ৬৫০০ ভারতীয় টাকা দিয়ে তিনি ৫ একর জমি ক্রয় করেন।
কি আছে ঐ চাঁদে জমি কেনার চুক্তিতে?
আসুন দেখে নিই কি আছে সেই বিখ্যাত চুক্তিটিতে।
The deed, dated July 27, 2003, was issued by 'Lunar Republic Interactive' and designated Baagdi as the "true and legal owner of the properties located at Mare Imbrium (Sea of Rains) 32.8 degree North latitude, 15.6 degree West longitude and track-30."
এখানে দেখা যায়, ২০০৩ সালের ২৭ শে জুলাই “লুনার রিপাবলিক ইন্টারেক্টিভ” ও বাগদীর সাথে চুক্তি হয় যে, ৩২.৮ ডিগ্রি দক্ষিন ল্যাটিটিউট, ১৫.৬ ডিগ্রি পশ্চিম লংগিটিউট ও ট্র্যাক-৩০ এর জমিটির আইনত মালিক রাজিব বাগদী।
অভিনেতা সুশান্ত সিং ও কি চাঁদে জমি কিনেছিলেন?
সুশান্ত সিংয়ের বিজ্ঞানপ্রীতি নতুন কিছু নয়। তার মৃত্যুর পর জানা যায় যে, সুশান্ত সিং রাজপুত চাঁদের একখন্ড জমির গর্বিত মালিক ছিলেন। তার মালিকনার জমিটি চাঁদের যে অংশে অবস্থিত তার নাম “Sea of Muscovy”।
আর কোন বলিউডের অভিনেতার চাঁদে জমি আছে?
বলিউডের অভিনেতাদের মাঝে সুশান্ত ছাড়াও শাহরুখ খানের চাঁদে জমি আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য এই জমিটি তাকে তার এক ভক্তের উপহার দেয়া। এতে করে বলিউডের শাহরুখ খান ও সুশান্ত সিং রাজপুতের চাঁদের জমি আছে বলে প্রকাশ পেয়েছে।
সত্যি কি চাঁদে জমি কেনা যায়?
এতকিছু দেখে আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন, এসব সত্যি কিনা। আসল সত্য হলো চাঁদে এভাবে জমি কেনার আইনগত ভিত্তি নেই। কারন ভারতসহ ১০৯টি দেশের মাঝে ১৯৬৭ সালের সম্পাদিত চুক্তি অনু্যায়ী মহাকাশের সম্পত্তির মালিকানা কোন দেশ, সংস্থা বা ব্যাক্তি দাবি করতে পারবেনা। তাই এই সকল জমির মাকিলানার মূলত আইনি কোন ভিত্তি নেই।
এটা নিয়ে মহাকাশ আইন নিয়ে কাজ করা স্টেফেন ই ডোল বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনু্যায়ী মহাকাশের সম্পত্তি কোন দেশের নয়, কোন দেশের হবেও না। এটি অনেকটা সাগরের মত। এর উপর সবার অধিকার আছে।
আরো পড়ুন: ফ্ল্যাটের বদলে নিজের জমি কেনা কেনো লাভজনক? বিস্তারিত জেনে নিন
তাই চাঁদে জমি কেনা নিয়ে যাই শুনেন না কেন, সত্যি কথা হলো এসব জমির কোন আইগত ভিত্তি নেই । তবুও অনেকেই মজা করার জন্য চাঁদে জমি কেনার রেজিস্ট্রেশন করে থাকে। আমাদের পরবর্তী লেখায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে, তাই আমাদের সাইটে নিয়মিত চোখ রাখুন। এই লেখাটি অনেকের কাজে লাগতে পারে তাই লেখাটি যতটুকু সম্ভব শেয়ার করুন, যাতে করে অনেকে এই লেখা থেকে শিক্ষা নিয়ে জমি সংক্রান্ত কিছু বিষয় জানতে পারে।
জমি নিয়ে আরো অনেক লেখা পেতে আমাদের সাইটের অন্য লেখাগুলি দেখুন। আমাদের লেখা ভালো লাগলে বা যেকোন মন্তব্য আমাদের ফেসবুক পাতায় লিখুন। আমরা আপনার মন্তব্যের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবো।
বিভিন্ন রকমের Invesments, Insurance, Loan, LIC Policy, Mutual Funds ইত্যাদি Financial ব্যাপারে বাংলাতে জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন। এখানে পাবেন এই সকল বিষয়ে দুর্দান্ত গাইড যা আপনাকে আপনার টাকা সুরক্ষিত ভাবে বিনিয়োগ এবং অন্যান্য ব্যাপারে সাহায্য করবে। আপনাদের যে কোন পরামর্শ, প্রশ্ন আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
No comments:
Post a Comment