আমরা সাধারনত জমি কেনা বেচার সময় রেজিস্ট্রেশন করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে জমি কেনা বেচা ছাড়াও আরো অনেক ব্যাপারেই রেজিস্ট্রেশন হয়ে থাকে। বিশেষ করে যেকোন চুক্তিই রেজিস্ট্রেশন করা যায়। আর এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হওয়ায় আমরা অনেকেই বুঝতে পারিনা কিভাবে কাজ করলে দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করা যায়। আজ আমরা আপনাদের সাথে কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় তার বিস্তারিত আলোচনা করবো। এভাবে আপনারা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া নিয়ে একটা ধারণা লাভ করবেন।
কি কি রেজিস্ট্রেশন করা যায় ?
আমরা শুধু জমি কেনা বেচার সময় রেজিস্ট্রেশন করার কথা ভেবে থাকি। আসলে শুধু জমি কেনা বেচা নয় আরো অনেক ব্যাপারেই জমির রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। আসুন দেখে নি কোন কোন সময় জমির রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।
১)জমি ক্রয় করা ।
২) জমি উপহার পাওয়া ।
৩) জমি ভাগ করা।
৪) জমির অদল বদল।
৫) জমি বন্ধক রাখা।
৬) লিজ দেয়া।
কোন মাধ্যমে জমির রেজিস্ট্রেশন করতে হয়?
আগে জমি রেজিস্ট্রেশন অফলাইনের সম্পন্ন হলেও এখন দিন বদলে গেছে। এখন থেকে পশ্চিমবঙ্গের সকল জমির রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে সম্পন্ন করা হয়। তাই এখন আর আগের মত ফাইল নিয়ে ঘুরাঘুরি, সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। অনলাইনে নিজের সুবিধাজনক জায়গা থেকেই এখন জমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করা যায়। অনলাইনে পশ্চিমবঙ্গের সরকারী ওয়েবসাইট Directorate of Registration and Stamp Revenue এর লিংকে আবেদন করা যায়।
কোন কোন ধাপে রেজিষ্ট্রেশন করতে হয়?
আসুন দেখে নি কোন কোন ধাপে এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।
ধাপ ১) জমির বাজার মূল্য, স্ট্যাম্প ফি জানতে ই-রিকুজিশন ফর্ম পূরন করতে হয়। এই ই-রিকুজিশন ফর্মে জমির ১ম পক্ষ্, ২য় পক্ষ উভয়ের ঠিকানা, PAN নাম্বার জমা দিতে হয়। জমির অবস্থানগত সকল তথ্য যেমন জেলা, থানা,মৌজা, রাস্তার নাম্বার, RS প্লট নাম্বার ইত্যাদি দিয়ে ই রিকুজেশন ফর্ম পুরন করতে হবে।
ধাপ ২) ই-রেজিস্ট্রেশনের প্রস্তুতি নেয়া। ই-রেজিস্ট্রেশন করতে আগের সকল দলিল চেক করা, ক্রয়ের শর্তগুলি যাচাই করা, জমির এরিয়া উল্লেখ করা, সাক্ষীদের নাম ঠিকানা, জমির ম্যাপ, অন্যান্য কোন কাগজপত্র যদি থাকে তাহলে চেক করা, ছবি এবং আঙ্গুলের ছাপ প্রিন্ট করা।
ধাপ ৩) আপনার জমির প্রকার ও আকারের উপর নির্ভর করে সরকার নির্ধারিত স্ট্যাম্প ডিউটি ও ফি জমা দেয়া।
ধাপ ৪) সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরন হলে রেজিস্ট্রেশনের জন্য জমা দেয়া। কোন ভুল থাকলে তা সংশোধন করে পুনরায় জমা দেয়া। কোন কারনে বাতিল হলে আবার সঠিকভাবে জমা দেয়া।
ধাপ ৫) রেজিস্ট্রেশনের জন্য জমির দলিলটি প্রদর্শন করা।
ধাপ ৬) সকল ফি জমা দেয়া। জমি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি সহ সকল সরকারী ফি জমা দেয়া।
ধাপ ৭) ক্রেতা ও বিক্রেতার ছবি, স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সাথে লিপিবদ্ধ করা।
ধাপ ৮) সকল স্বাক্ষর, ফিঙ্গার প্রিন্ট সহকারে দলিলটি স্ক্যান করা।
ধাপ ৯) রেজিস্টার অফিস ঐ দলিলে ডিজিটাল স্বাক্ষর প্রদান করবে।
ধাপ ১০) রেজিস্ট্রেশন শেষে ঐ দলিল হস্তান্তর করা।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি কাগজপত্র দরকার হয়?
আসুন দেখে নিই জমির রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে হয়।
১) জমির বাজার মূল্য এবং সে অনুসারে স্ট্যাম্প ডিউটি ফি জমা দেয়ার রশিদ।
২) ক্রেতা ও বিক্রেতার পরিচয় প্রমাণের জন্য আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড/ পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি।
৩) জমি সংকান্ত সকল কাগজের মূল কপি।
৪) উপজাতী বা অন্য কোন সংরক্ষিত জমি হলে তা হস্তান্তরের অনুমতি পত্র ।
আজ আমরা জমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি করতে হয় তার বিস্তারিত জানতে পারলাম । আগামীতে এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। জমি সংক্রান্ত আরো অনেক গুরুত্তপূর্ন বিষয় জানতে আমাদের সাইটের অন্য লেখাগুলি দেখুন। আমাদের লেখা নিয়ে যে কোন মন্তব্য, পরামর্শের জন্য আমাদের ফেসবুক পাতায় লিখুন । আমরা আপনার যেকোন মন্তব্যের সর্বোচ্চ গুরুত্ত দিয়ে থাকি।
বিভিন্ন রকমের Invesments, Insurance, Loan, LIC Policy, Mitual Funds ইত্যাদি Financial ব্যাপারে বাংলাতে জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন। এখানে পাবেন এই সকল বিষয়ে দুর্দান্ত গাইড যা আপনাকে আপনার টাকা সুরক্ষিত ভাবে বিনিয়োগ এবং অন্যান্য ব্যাপারে সাহায্য করবে। আপনাদের যে কোন পরামর্শ, প্রশ্ন আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
No comments:
Post a Comment